দাড়িভিট স্কুল চালাতে বাধা নয়: কোর্ট

স্কুলের ভিতরে ও বাইরে ‘আন্দোলন’-এর সমর্থনে যে সব পোস্টার সাঁটা রয়েছে, তা-ও আজ শুক্রবার খুলে ফেলতে হবে বলে প্রশাসনকে নির্দেশ দেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা ও দাড়িভিট শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:৪৩
Share:

—ফাইল চিত্র।

উত্তর দিনাজপুরের দাড়িভিট হাইস্কুলে পঠনপাঠন অবিলম্বে স্বাভাবিক করতে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। স্কুলের পড়ুয়াদের অভিভাবকেরা ৫৪ জন মিলে যে আবেদন করেছিলেন, সেই মামলায় বিচারপতি শেখর ববি শরাফ জেলা প্রশাসনকে আরও নির্দেশ দেন, স্কুলের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পুলিশ মোতায়েন করতে হবে। স্কুলের ভিতরে ও বাইরে ‘আন্দোলন’-এর সমর্থনে যে সব পোস্টার সাঁটা রয়েছে, তা-ও আজ শুক্রবার খুলে ফেলতে হবে বলে প্রশাসনকে নির্দেশ দেন তিনি।

Advertisement

গত বছর ২০ সেপ্টেম্বর দাড়িভিটে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে গোলমালে গুলি চলে। প্রাণ হারান দুই স্থানীয় যুবক রাজেশ সরকার ও তাপস বর্মণ। তার পর থেকে ১২০ দিন স্কুল বন্ধ ছিল। পরে তা খুললেও দু’দফায় ফের স্কুলের দরজায় তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। স্কুল যাতে ঠিক মতো চলে, সে জন্য তাই বুধবার হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কয়েক জন অভিভাবক।

অভিভাবকদের আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্য ও অণীশ মুখোপাধ্যায় জানান, মামলার আবেদনে বলা হয়, দেশের সংবিধানে শিক্ষার অধিকার মৌলিক অধিকার বলে স্বীকৃত। পড়ুয়ারা সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বহিরাগত দুষ্কৃতীরা আন্দোলনের নামে যখন তখন স্কুলে তালা ঝুলিয়ে দিচ্ছে। পড়ুয়া, শিক্ষকদের ভয় দেখানো হচ্ছে।

Advertisement

শিক্ষক ও স্কুল কর্তৃপক্ষের পক্ষে আইনজীবী বিশ্বরূপ ভট্টাচার্য আদালতে জানান, তাঁর মক্কেলরাও আন্দোলনকারীদের হুমকির মুখে পড়ছেন। বিচারপতি শরাফ রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্তের কাছে জানতে চান, স্কুল খোলার ব্যাপারে প্রশাসন কী করছে? এজি জানান, প্রশাসনও চায় স্কুলের স্বাভাবিক কাজকর্ম চালু হোক।

এর পরেই বিচারপতি শরাফ ইসলামপুরের মহকুমাশাসকের প্রতি নির্দেশ দেন, জেলাশাসক ও ইসলামপুর থানার আইসি-র সঙ্গে সমন্বয় রেখে স্কুল খোলার ব্যবস্থা করা হোক। পড়ুয়া-শিক্ষকদের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করতে বলেন তিনি।

হাইকোর্টের নির্দেশ শোনার পরে রাজেশের বাবা নীলকমল সরকারের প্রশ্ন, ‘‘আমরাও মামলা করেছিলাম। সেই মামলার রায় কোথায় হল?’’ একই প্রশ্ন তাপসের বাবা বাদল বর্মণেরও। তবে দুই বাবা-ই জানান, তাঁরাও চান স্কুল খোলা থাকুক। যদিও পোস্টার নিয়ে তাঁদের বক্তব্য, ‘‘স্কুলে যে সব ব্যানার রয়েছে, তা আমাদের ছেলেদের মৃত্যুর বিচার চেয়ে। কোনও রাজনৈতিক ব্যানার নয়।’’ মামলাকারী অভিভাবকদের কয়েক জনের দাবি, বারবার স্কুল বন্ধ হলে পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে। পুলিশ-প্রশাসনকে বলে লাভ হচ্ছিল না। তাই মামলা করা হয়। মামলা করেননি এমন কয়েক জন অভিভাবকও বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশ যথোচিত। স্কুলের দু’হাজার ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যৎ জড়িয়ে রয়েছে।’’

ইসলামপুর মহকুমাশাসক মণীশ মিশ্র বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত কোনও নির্দেশ পাইনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন