মালদহ জেলায় বয়ঃসন্ধিকালীন মেয়েদের জন্য সরবরাহ করা প্যাকেট-বন্দি খাবারের গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন উঠল কলকাতা হাইকোর্টে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর তৈরি করা ওই খাবারের নমুনা কেন্দ্রীয় ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন বোর্ডের আঞ্চলিক দফতরকে দিয়ে পরীক্ষা করানোর জন্য বৃহস্পতিবার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত।
মালদহ জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, দেশের বয়ঃসন্ধিকালীন মেয়েদের প্রোটিন ও ক্যালোরি যুক্ত খাবার সরবরাহ করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের একটি প্রকল্প রয়েছে। মালদহ জেলার কোতোয়ালি থানা এলাকার একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠী ওই জেলার ওই বয়সের মেয়েদের জন্য ওই খাবার তৈরি ও সরবরাহ করে। বেসরকারি একটি সংস্থা সম্প্রতি ওই খাবার সরবরাহের কিছুটা বরাত পাওয়ার জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন জানায়। যেহেতু স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে ওই খাবার সরবরাহ করা হয়, তাই ওই সংস্থাকে বরাত দেওয়া হয়নি।
বরাত পাওয়ার আবেদন জানিয়ে সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে ওই সংস্থা। কিছু দিন আগে মামলাটি শুনানির জন্য উঠেছিল। সেই সময় বিচারপতি দত্ত রাজ্য সরকার ও বেসরকারি সংস্থা দু’পক্ষকেই নির্দেশ দিয়েছিলেন, তাদের তৈরি খাবারের নমুনা আদালতে পেশ করতে।
এ দিন পুনরায় মামলাটির শুনানি ছিল। দেখা যায়, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর নমুনা প্যাকেটের গায়ে খাবার তৈরির তারিখ ও মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার তারিখ লেখা নেই। রাজ্যের অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেল লক্ষ্মী গুপ্ত আদালতে দাবি করেন, ওই খাবার যে স্বনির্ভর গোষ্ঠী তৈরি করছে, তারা ওই খাবার তৈরির বৈজ্ঞানিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এবং তাদের খাবারের গুণগত মান ঠিক। প্রয়োজনে তা পরীক্ষা করানোও যেতে পারে।
বেসরকারি সংস্থার আইনজীবী শ্যামল সরকার দাবি করেন, তাঁর মক্কেলই রাজ্যের একমাত্র সংস্থা যারা ওই প্রকল্পের খাবার তৈরি করে এবং কেন্দ্রের ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন দফতর তাদের সেই শংসাপত্র দিয়েছে। তা ছাড়া তাদের খাবারের প্যাকেটে লেখা রয়েছে তৈরির তারিখ ও মেয়াদ শেষের তারিখও। এ-ও লেখা রয়েছে, কী কী খাদ্যশস্য দিয়ে ওই খাবার তৈরি হয়।
দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারপতি দত্ত হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের মাধ্যমে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর তৈরি করা খাবারের নমুনা ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন দফতরের আঞ্চলিক দফতরে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এ-ও নির্দেশ দেন, ওই দফতরকে আগামী ২৮ অগস্টের মধ্যে খাবারের গুণগত মান পরীক্ষা করে তার রিপোর্ট পাঠাতে হবে।
এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৩১ অগস্ট।