ভোটের মাঝেই কোর্টের ধাক্কা, সিভিক পুলিশ নিয়োগে স্থগিতাদেশ

নারদ-কাণ্ডের পরে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন চলাকালীন কলকাতা হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণে ফের অস্বস্তিতে শাসকদল। এ বারের অস্বস্তি লক্ষাধিকেরও বেশি সিভিক পুলিশ নিয়োগ নিয়ে। রাজ্য জুড়ে সিভিক পুলিশ নিয়োগে কেলেঙ্কারি হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার পর্যবেক্ষণ করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৬ ১৯:৫৬
Share:

নারদ-কাণ্ডের পরে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন চলাকালীন কলকাতা হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণে ফের অস্বস্তিতে শাসকদল। এ বারের অস্বস্তি লক্ষাধিকেরও বেশি সিভিক পুলিশ নিয়োগ নিয়ে। রাজ্য জুড়ে সিভিক পুলিশ নিয়োগে কেলেঙ্কারি হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার পর্যবেক্ষণ করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগে রাজ্যের বিভিন্ন ক্লাবকে হাজার হাজার টাকা অনুদান দেওয়ার জন্য রাজ্যকে তুলোধোনা করেছিলেন এই বিচারপতি।

Advertisement

বাঁকুড়া জেলায় সিভিক পুলিশ নিয়োগ নিয়ে দায়ের করা মামলার শুনানিতে এ দিন বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ, ‘‘গ্রেট স্ক্যাম। খেয়ালখুশি মতো নিয়োগে জনগণের টাকা অপচয় হয়েছে।’’ এই পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি নতুন করে সিভিক পুলিশ নিয়োগের উপর এ দিন স্থগিতাদেশ জারি করেছে হাইকোর্ট। একই সঙ্গে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবকে নির্দেশ দিয়েছে, কী ভাবে, কোন পদ্ধতি মেনে সিভিক পুলিশ নিয়োগ হয়েছে, তা সবিস্তার হলফনামা দিয়ে ৯ মে-র মধ্যে আদালতকে জানাতে।

তৃণমূল সরকার রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে ২০১৩ সালে সিদ্ধান্ত নেয়, প্রতিটি থানায় সিভিক পুলিশ নিয়োগ করা হবে। তাদের কাজ হবে থানার পুলিশ বাহিনীকে সাহায্য করা। রাজ্য জুড়ে ১ লক্ষ ৩০ হাজার সিভিক পুলিশ নিয়োগ হয়। বাঁকুড়া জেলায় নিয়োগ হয় ৫ হাজার ১০০ জন। ওই জেলার সারেঙ্গা ও বারিকুল থানা এলাকার দশ জন প্রার্থী চলতি মাসে হাইকোর্টে পৃথক দু’টি মামলা দায়ের করেন। তাঁদের আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত জানান, মামলার আবেদনে অভিযোগ করা হয়, সিভিক পুলিশ নিয়োগে স্বচ্ছতা ছিল না। তাঁর মক্কেলরাও আরও ৫০ জনের সঙ্গে মৌখিক পরীক্ষায় বসেছিলেন। প্রায় একই ধরনের প্রশ্ন তাঁদেরও করা হয়েছিল। কিন্তু পরীক্ষার ফল প্রকাশের পরে দেখা যায়, মেধা তালিকায় তাঁদের নাম নেই। নিয়োগের পদ্ধতিকেও চ্যালেঞ্জ করা হয় মামলার আবেদনে। আইনজীবী সুদীপ্তবাবু জানান, গত ২২ এপ্রিল এই মামলার শুনানি ছিল। ওই দিন বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, কী ভাবে সিভিক পুলিশদের নিয়োগ করা হয়েছে, তা হলফনামা দিয়ে জানাতে।

Advertisement

আরও পড়ুন:

মামাগিরির ঠেলায় দাদারা ব্যাকগিয়ারে

এ দিন সরকারি আইনজীবী তপন মুখোপাধ্যায় আদালতে হলফনামা পেশ করেন। তাতে বলা হয়, প্রতি জেলায় এক জন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে জেলা পুলিশকর্তাদের পাঁচ জনের একটি কমিটি গড়া হয়। প্রতি থানা এলাকায় আলাদা করে ২০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। সেই পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে তৈরি হয় মেধা তালিকা। হলফনামায় আরও বলা হয়, নিয়োগের পরে ছ’মাস অন্তর ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে বিভিন্ন থানা এলাকায় কাজে লাগানো হচ্ছে সিভিক পুলিশদের। তাঁদের নিয়োগ হয়েছে স্থায়ী নয়, অস্থায়ী।

বিচারপতি হলফনামা পড়ে জানান, অস্থায়ী ভিত্তিতে নিযুক্ত করা হলেও নিয়োগের পদ্ধতি ঠিক নয়। নিয়োগ হয়েছে খেয়ালখুশি মতো। এতে জনগণের টাকা অপচয় হয়েছে। সরকারি আইনজীবী তপনবাবুও বলেন, ‘‘নিয়োগে স্বচ্ছতা থাকা উচিত।’’ একই সঙ্গে সরকারি আইনজীবী জানান, যে ভাবে নিয়োগ হয়েছে, তা-ই হলফনামায় বলা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন