রাজ্যে বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গিতে কত জনের মৃত্যু হয়েছে, সরকারকে জানানোর নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। আজ বুধবারই সরকারকে ওই তথ্য দিতে হবে আদালতে, পাশাপাশি দিতে হবে সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গি-মৃত্যুর সর্বশেষ পরিসংখ্যানও।
৯ নভেম্বর ডেঙ্গি নিয়ে হাইকোর্টে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা যে রিপোর্ট দিয়েছিলেন তাতে ওই দিন পর্যন্ত রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে মৃত্যুর সংখ্যা ১৯ দেওয়া ছিল। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অধীন ন্যাশনাল ভেক্টর বোর্ন ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রামের কাছে গত ৪ অক্টোবর রাজ্য যে তথ্য পাঠিয়েছিল তাতেও মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১৯। মঙ্গলবার হাইকোর্টে আইনজীবীরা প্রশ্ন তোলেন, ৫ অক্টোবর থেকে ৯ নভেম্বর পর্যন্ত সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গিতে কি কারও মৃত্যু হয়নি?
আইনজীবীদের সওয়াল শুনে হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্তকে ডেঙ্গিতে মৃত্যুর সর্বশেষ পরিসংখ্যান পেশ করতে নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গি-ভয়কে পুঁজি করে ভুয়ো ডাক্তারি
ডেঙ্গি নিয়ে জনস্বার্থে যে সব মামলা দায়ের হয়েছে হাইকোর্টে, মঙ্গলবার একযোগে সেগুলির শুনানি ছিল। আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য তাঁর সওয়ালে জানান, সরকারি রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত জানুয়ারি থেকে কেন্দ্রীয় সরকার ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা মেনে বিভিন্ন পুর ও পঞ্চায়েত এলাকায় ডেঙ্গি প্রতিরোধে কাজ হয়েছে। মুখ্য সচিব, স্বাস্থ্য দফতরের শীর্ষ কর্তাদের নিয়ে একাধিক বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ‘‘এত কাজ হয়ে থাকলে ডেঙ্গি মহামারীর আকার নিল কী করে? রাজ্য সরকার কেন মৃত্যুর প্রকৃত পরিসংখ্যান পেশ করছে না,’’ প্রশ্ন বিকাশরঞ্জনবাবুর।
ডেঙ্গি নিয়ে কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরীও জনস্বার্থ মামলা করেছেন। তাঁর আইনজীবী আশিস সান্যাল আদালতে বলেন— সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ, ডেঙ্গি নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কাছে স্বাস্থ্য দফতর কোনও তথ্য নিয়ম মতো দেয়নি। বিজেপির চিকিৎসক সেলের দুই সদস্যের দায়ের করা মামলার আইনজীবী লোকনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, উত্তরপ্রদেশ সরকার গত বছর ডেঙ্গিকে মহামারী ঘোষণা করে রোগ ঠেকাতে ব্যবস্থা নিয়েছে। এ রাজ্য পারবে না কেন!
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষকের পক্ষে আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তী বলেন, প্রত্যন্ত এলাকায় ভ্রাম্যমাণ রক্ত পরীক্ষার গাড়ি পাঠিয়ে দ্রুত রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিক আদালত। তাতে সময় মতো চিকিৎসা শুরু হবে। রাজ্য সরকারের পক্ষে এজি এদিন বক্তব্য পেশ করতে পারেননি। বুধবার তিনি সওয়াল শুরু করবেন।