ডাক্তারিতে ভর্তির মতো গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার ফলাফল ঘিরে দুর্নীতির অভিযোগ দানা বেঁধেছে। তাই চলতি বছরের মেডিক্যাল জয়েন্ট এন্ট্রান্সের প্রথম চার হাজার জনের প্রাপ্ত নম্বর-সহ তথ্য-তালিকা প্রকাশ করতে বলল কলকাতা হাইকোর্ট।
ওই পরীক্ষার ফলপ্রকাশে দুর্নীতি ও অস্বচ্ছতার নালিশ তুলে গত সপ্তাহে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছে এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। শুক্রবার যার শুনানির পরে হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি গিরীশ গুপ্ত ও বিচারপতি অরিন্দম সিংহের ডিভিশন বেঞ্চ মেডিক্যাল জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডকে নির্দেশ দিয়েছে, আগামী দশ দিনের মধ্যে নাম প্রকাশ করতে হবে।
রাজ্য মেডিক্যাল জয়েন্ট বোর্ডের চেয়ারম্যান সজল দাশগুপ্ত অবশ্য এ দিন দাবি করেছেন, কোনও অস্বচ্ছতা বা দুর্নীতি হয়নি। ‘‘তবে হাইকোর্টের নির্দেশ মানা হবে।’’— বলেছেন তিনি। পরীক্ষাটি বাতিলের দাবিতে হাইকোর্টে দাখিল অন্য একটি জনস্বার্থ-মামলারও এ দিন শুনানি ছিল। বিচারপতি গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ তার আবেদনকারীকে তিন সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা আকারে বক্তব্য পেশ করতে বলেছে। সে ব্যাপারে কোনও বক্তব্য থাকলে বোর্ড পাল্টা হলফনামা দেবে। ওই মামলার পরবর্তী শুনানি চার সপ্তাহ বাদে।
এ দিন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মামলাটিতে তাদের কৌঁসুলি জিষ্ণু সাহা আদালতকে জানান, ফল প্রকাশের সময়ে বোর্ড নিট-এর নিয়ম মানেনি। একাধিক প্রার্থী একই নম্বর পেয়ে থাকলে কীসের ভিত্তিতে কার নাম মেধাতালিকায় থাকবে বা থাকবে না, তা জানার উপায় নেই। জিষ্ণুবাবুর বক্তব্য— এমন সব ক্ষেত্রে বোর্ডের উচিত ছিল উচ্চ মাধ্যমিকে প্রাপ্ত পদার্থবিদ্যা, রসায়ন ও জীববিদ্যায় নম্বরের ভিত্তিতে মেধা-তালিকা বানানো। তা হয়নি। উপরন্তু ডমিসাইল সার্টিফিকেট’ নেওয়ার ক্ষেত্রেও নিয়ম মানা হয়নি বলে ওঁদের অভিযোগ। মেধা-তালিকার সব প্রার্থীর নম্বর প্রকাশের দাবি তোলে বাদীপক্ষ। রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) জয়ন্ত মিত্র বলেন, মেডিক্যাল জয়েন্টের ফল বেরিয়েছে ২৫ অগস্ট। পরীক্ষার্থী ছিলেন ৫৫ হাজারের বেশি। ১২ হাজারের বেশি প্রার্থীর প্যানেল তৈরি হয়েছে। কাউন্সেলিং চালু হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বারো হাজার জনের নম্বর প্রকাশ করা সম্ভব নয়। ডিভিশন বেঞ্চ এজি-র কাছে জানতে চায়, রাজ্যের সরকারি, বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলিতে মোট কত আসন? এজি বলেন,
তিন হাজার।
বেঞ্চ তখন নির্দেশ দেয়, রোল নম্বর, প্রাপ্ত নম্বর, মেধাতালিকার স্থান ও জন্মের তারিখ দিয়ে প্রথম চার হাজার প্রার্থীর নাম প্রকাশ করুক বোর্ড। শুনে মামলাকারী সংগঠনের তরফে শান্তনু বসুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমরা বারো হাজার জনেরই প্রাপ্ত নম্বরের তালিকা চেয়েছিলাম। তাই পুরোপুরি সন্তুষ্ট নই।’’