Crime

তোলাবাজির পুরনো নালিশ, পুলিশের দ্বারস্থ ব্যবসায়ী

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দেবরাজ জমি-বাড়ি কেনাবেচার সঙ্গে যুক্ত। অন্য ব্যবসাও রয়েছে। তিনি বাঁশবেড়িয়া শহর তৃণমূলের প্রাক্তন কার্যকরী সভাপতি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মগরা শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২৩ ০৬:১৪
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

থানার অদূরে হিমঘর থেকে থেকে এক জমি ব্যবসায়ীকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে তুলে নিয়ে গিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠল ত্রিবেণী কালীতলার বাসিন্দা তৃণমূলের প্রাক্তন নেতা দেবরাজ পাল ও তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে। মহম্মদ কামালউদ্দিন নামে ওই ব্যবসায়ী পূর্ব বর্ধমানের গোলাপবাগের বাসিন্দা। মাস দু’য়েক আগের এই ঘটনায় তিনি সম্প্রতি মগরা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। প্রতিলিপি পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংসদ তথা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্য পুলিশের শীর্ষকর্তাদের কাছে।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দেবরাজ জমি-বাড়ি কেনাবেচার সঙ্গে যুক্ত। অন্য ব্যবসাও রয়েছে। তিনি বাঁশবেড়িয়া শহর তৃণমূলের প্রাক্তন কার্যকরী সভাপতি। যদিও এখন তাঁর সঙ্গে দলের যোগ নেই বলে তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি। হুগলি গ্রামীণ জেলা পুলিশের আধিকারিক জানান, ব্যবসায়ীর অভিযোগের ভিত্তিতে তোলাবাজি, মারধর, প্রাণনাশের হুমকির মতো জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। দেবরাজ অবশ্য অভিযোগ মানেননি।

তৃণমূলের হুগলি-শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক অরিন্দম গুঁইন বলেন, ‘‘দেবরাজ আগে আমাদের দলে ছিলেন। এখন ওঁর সঙ্গে দলের কোনও যোগাযোগ নেই। অন্যায় করলে পুলিশ আইনি ব্যবস্থা নেবে, সে যে-ই হোক।’’ দেবরাজের দাবি, ‘‘কামালউদ্দিন নামে কাউকে চিনিই না। মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।’’ দেবরাজের বিরুদ্ধে আগেও একাধিক বেআইনি কাজে যুক্ত থাকার অভিযোগ উঠেছিল৷ গ্রেফতারও হয়েছিলেন। তৃণমূলের সংগঠনের সূত্রে এলাকায় তাঁর ভাল রকম দাপট ছিল। অভিযোগকারী জানান, পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় তিনি আতঙ্কে রয়েছেন। তাঁর দাবি, তাঁকে অপহরণ করা হয়েছিল।

Advertisement

এ ব্যাপারে এক পুলিশকর্তার বক্তব্য, ‘‘অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত চলছে। সেই মতো পদক্ষেপ করা হবে। তদন্তে প্রমাণ পেলে অন্য ধারাও যোগ করা হবে।’’

সূত্রের খবর, মগরা থানার অদূরে হাঁসগড়া এলাকায় জিটি রোডের পাশে ৮ বিঘা জমিতে কামালউদ্দিনের পরিচিত এক জনের হিমঘর কোনও কারণে ব্যাঙ্কে বন্ধক ছিল। কামালউদ্দিন সেটি ব্যাঙ্ক থেকে কিনে নেন ভাই আজিবউদ্দিনের নামে। কামালউদ্দিনের দাবি, হিমঘরটি কিনতে চেয়ে দেবরাজ কামালউদ্দিনকে ফোন করেছিলেন। কামালউদ্দিন সাড়ে ৭ কোটি টাকা দাম বলেন। তাঁর অভিযোগ, এর কিছু দিন পরে, গত ৯ অগস্ট জনা পঞ্চাশ লোক নিয়ে হিমঘরে আসেন দেবরাজ। তাঁর এবং অন্য এক যুবকের হাতে বন্দুক ছিল। প্রাণের ভয় দেখিয়ে সেখান থেকে তাঁকে ত্রিবেণী কালীতলার কাছে কোনও একটি জায়গায় তুলে নিয়ে গিয়ে এক কোটি টাকা দাবি করে। দরাদরিতে ৫০ লক্ষ টাকা ঠিক হলে কামালউদ্দিনকে ছাড়া হয়। কামালউদ্দিনের দাবি, ওই মাসেই তিনি ১৭ লক্ষ টাকা দেন দেবরাজকে। বাকি ৩৩ লক্ষের জন্য দেবরাজ ফোনে চাপ দিতে থাকেন। ভয়ে মগরায় আসা বন্ধ করে দেন ওই ব্যবসায়ী। শেষে পুলিশ-প্রশাসনের দ্বারস্থ হন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন