Gondolpara

Agitation: ১২ ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ অমিল শ্রমিক আবাসনে, বিক্ষোভ গোন্দলপাড়ায়

তাতে বিদ্যুতের অভাবে ছোটদের পড়াশোনার সমস্যার কথাও তুলে ধরা হয়েছিল।

Advertisement

প্রকাশ পাল, তাপস ঘোষ

গোন্দলপাড়া শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০২২ ০৮:০৭
Share:

বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন শ্রমিক পরিবাবের লোকেরা। ছবি: তাপস ঘোষ

গরম বাড়ছে। অথচ, দিনের বেলায় ঘরে জিরিয়ে নেওয়ার জো নেই। কপালের ঘাম টপটপ করে পড়ছে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর বইয়ের পাতায়। চন্দননগরের গোন্দলপাড়া জুটমিলের শ্রমিক আবাসনের এটাই রোজনামচা। কারণ, সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ থাকে না এখানে। পর্যাপ্ত জল মেলে না বলেও অভিযোগ। নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পরিষেবা এবং জলের দাবিতে সোমবার মিলের গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন ভুক্তভোগীরা।

Advertisement

চলতি বছরের প্রথম দিন থেকেই মিলটি বন্ধ। ফলে, প্রায় সাড়ে চার হাজার শ্রমিক বেকায়দায়। এ দিকে, প্রচুর টাকা বিল বকেয়া থাকায় গত ১৮ ফেব্রুয়ারি মিলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় সংশ্লিষ্ট দফতর। টানা পাঁচ দিন গোটা মিল এবং আবাসনে বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল না। জলও মেলেনি।

মিল সূত্রের খবর, বিদ্যুৎ দফতরে যোগাযোগ করে কিছু টাকা মেটানোয় বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়। যদিও, শ্রমিক আবাসনে পূর্ণ সময় বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হয়নি। আবাসনের বাসিন্দারা জানান, বিদ্যুৎ মেলে সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরের দিন সকাল ৬টা পর্যন্ত। বাকি সময় গলদঘর্ম হতে হচ্ছে। ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা কার্যত লাটে উঠেছে। অথচ, ক’দিন পরেই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা।

Advertisement

২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ ও জলের দাবিতে এ দিন শ্রমিক এবং তাঁদের পরিবারের লোকেরা সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা ২টো পর্যন্ত বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের দাবি, কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালিপনায় মিলে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনায় অসুবিধা হচ্ছে। গরম পড়ে যাওয়ায় জলকষ্ট দেখা দিয়েছে।

উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সুদেষ্ণা সাউ বলে, ‘‘ক’দিন পরে পরীক্ষা শুরু হবে। বিদ্যুৎ না থাকায় পড়াশোনা করা মুশকিল হচ্ছে। মিল কর্তৃপক্ষ আমাদের কথা একটু ভাববেন না!’’ শ্রমিক পিন্টু ফটিকের কথায়, ‘‘নিজেদের খামখেয়ালিপনার জন্য কর্তৃপক্ষ মিল খুলছেন না। ন্যূনতম পরিষেবাটুকু দেওয়া হচ্ছে না।’’ শ্রমিক পরিবারের সদস্য সবিতাদেবী বলেন, ‘‘সকালে পুরুষরা তা-ও বেরোতে পারেন। মহিলাদের ঘরের কাজের জন্য থাকতেই হয়। গরমে খুব কষ্ট হচ্ছে আমাদের। অসুস্থ লোকের সমস্যা আরও বেশি। বাচ্চাদের পড়াশোনা বন্ধ হওয়ার পরিস্থিতি।’’

বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পরেই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘শ্রমিক কল্যাণ সমিতি’র তরফে প্রশাসনের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছিল অবিলম্বে ওই পরিষেবা চালু নিয়ে হস্তক্ষেপের আর্জি জানিয়ে। তাতে বিদ্যুতের অভাবে ছোটদের পড়াশোনার সমস্যার কথাও তুলে ধরা হয়েছিল। সংগঠনের আইনি পরামর্শদাতা বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে শ্রমিক আবাসনে ১২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ দেওয়া হচ্ছে না। ছেলেমেয়েদের কথা কে ভাববে? বিদ্যুৎহীন অবস্থায় শ্রমিক আবাসনের মানুষজন কী ভাবে আছেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সরেজমিনে দেখে আসুন।’’

মিল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জানা যায়নি। মিলে কোনও আধিকারিকের দেখা মেলেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন