Air pollution

হুগলিতেও বায়ুদূষণ অব্যাহত, ঠেকাবে কে?

পরিবেশকর্মীদের একাংশের বক্তব্য, বায়ুদূষণ চে-কন্যার অসুস্থতার একমাত্র কারণ নয়। তবে, দূষণ রোধে শিথিলতার জায়গা নেই।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়  , প্রকাশ পাল

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:২৪
Share:

কালো ধোঁয়ায় ঢাকা চন্দননগরের গঙ্গার ধারের আকাশ। নিজস্ব চিত্র

উত্তরপাড়া থেকে ফিরে শনিবার সন্ধ্যায় শ্বাসকষ্টের জেরে কলকাতায় অসুস্থ হয়ে পড়েন চে-কন্যা আলেইদা গেভারা। কলকাতার দূষণের কারণে তাঁর অসুস্থতা বাড়ে বলে চিকিৎসকেরা জানান। কলকাতার দূষণ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই পরিবেশকর্মীরা সরব। সংলগ্ন জেলা হুগলিও দূষণমুক্ত নয় বলে তাঁদের দাবি। কিন্তু তা ঠেকাবে কে, সে উত্তর অমিল।

Advertisement

পরিবেশকর্মীদের একাংশের বক্তব্য, বায়ুদূষণ চে-কন্যার অসুস্থতার একমাত্র কারণ নয়। তবে, দূষণ রোধে শিথিলতার জায়গা নেই।

হিন্দমোটর-সহ হুগলি শিল্পাঞ্চলের অনেক কারখানাই বর্তমানে বন্ধ। বড় শিল্প আসেনি। ফলে, সামগ্রিক ভাবে শিল্পক্ষেত্র থেকে দূষণ না বাড়লেও বায়ুদূষণ রোখা যাচ্ছে না বলে পরিবেশকর্মীদের দাবি।

Advertisement

কেন?

রাস্তার ধারে খাবারের দোকানে উনুন জ্বালিয়ে রান্না এ জেলার বহু জায়গাতেই এখনও চোখে পড়ে। রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা ক্রমবর্ধমান। সঙ্গে জুড়েছে ইঞ্জিন-ভ্যান। ডানকুনি শিল্পাঞ্চল-সহ নানা জায়গায়, দিল্লি রোড, দুর্গাপুর রোডের ধারে প্রতিদিন প্রচুর আবর্জনা জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। এ সবের ‘বিষ-ধোঁয়া’ বাতাসে মেশে। নির্মাণকাজের ধূলিকণাও হজম করে বাতাস। সব মিলিয়ে বাতাস ভারী হয়ে বিপত্তি ডেকে আনে বলে বিশেষজ্ঞদের মত। ধানের নাড়া, দেদার বাজি পোড়ানোও বায়ুদূষণের বড় কারণ।

একাধিক চিকিৎসক জানান, এখানে বায়ুদূষণের মাত্রা সহন-ক্ষমতার বেশি। ফলে, ফুসফুস আক্রান্ত হয়। শ্বাসকষ্ট-সহ নানা রোগ হয়। ক্যানসারের ঝুঁকিও থাকে। যা মৃত্যুরও কারণ হতে পারে।

পরিস্থিতি বেশি খারাপ হয় শীতে। ধোঁয়া, ধূলিকণা বাতাস ভারী করে। বৃষ্টি না-হওয়ায় বাতাসে তা ভাসতে থাকে। আগুন পোহানোর জন্য শীতের রাতে কাঠকুটো পোড়ানোর ধোঁয়াও বাতাস বিষিয়ে দেয়। পরিবেশকর্মীদের অনেকের বক্তব্য, বাজি, নাড়া পোড়ানো বন্ধে জন-সচেতনতা প্রয়োজন। ব্যক্তিগত গাড়ির পরিবর্তে গণ-পরিবহণ ব্যবহার বাড়ানো গেলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। বর্জ্য নিষ্কাশনে পুরসভা, পঞ্চায়েতের উদাসীনতা ঝেড়ে ফেলতে হবে।

পরিবেশকর্মী জয়ন্ত পাঁজার আশঙ্কা, ‘‘মানুষ সচেতন এবং প্রশাসন কড়া না হলে অবস্থা উত্তরোত্তর খারাপ হবে।’’ আর এক পরিবেশকর্মী বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দূষণ রোধে আমরা দীর্ঘদিন ধরেই সাধারণ মানুষ থেকে সরকারকে সচেতন করছি। কিন্তু, সচেতনতা সেই ভাবে দেখছি না। চে-কন্যার শারীরিক সমস্যা শুধু বায়ুদূষণের কারণে বলে মনে হয় না। টানা সফরসূচি আর ধকল চলছে তাঁর। জল, খাবার পাল্টে গেলে বিদেশে শরীরের সমস্যা হয়ই। সব মিলিয়েই অসুস্থতা। তবে, বায়ুদূষণ নিয়ে ঢিলেমির কোনও জায়গা নেই। এখনই সতর্ক না হলে আগামী প্রজন্মকে চূড়ান্ত ফল ভুগতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন