Drowned

Drowned: শানপুরের আকাশ ভারী করে ঢুকল চার শববাহী গাড়ি

সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শানপুর মোড়ে শববাহী গাড়ি পৌঁছনোর অনেক আগেই ড্রেনেজ ক্যানাল রোডের দু’পাশে বাসিন্দাদের ভিড় উপচে পড়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২২ ০৬:১৫
Share:

দামোদরে নিখোঁজ যুবকের দেহ উদ্ধার দেখতে ভিড় গ্রামবাসীর।

চার তরতাজা যুবকের দামোদরে তলিয়ে যাওয়ার খবর আসতেই শুক্রবার দুপুর থেকে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল এলাকার কারখানা, দোকানপাট। উলুবেড়িয়া মর্গ থেকে সেই চার জনের দেহ বহন করে আনা চারটি শববাহী গাড়ি শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় হাওড়ার দাশনগরের শানপুরে ঢোকার এক কিলোমিটার আগে থেকেই ছিল শোকস্তব্ধ মানুষের মিছিল। যা বুঝিয়ে দিল, চার যুবকের আকস্মিক মৃত্যু কতটা টলিয়ে দিয়েছে স্থানীয়দের।

Advertisement

শেষ শ্রদ্ধা জানাতে দেহগুলি স্থানীয় ক্লাবের মাঠে নিয়ে যাওয়া হয়। তার আগে পরিজনের বুকফাটা আর্তনাদ, বাসিন্দাদের কান্না ভারী করে তুলেছিল দক্ষিণ শানপুরের বটতলার পরিবেশ। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরের খিলা নয়াচক ঘাটে স্নান করতে নেমে তলিয়ে গিয়েছিলেন দাশনগর শানপুরের ১১ জন যুবক। সাত জন জীবিত উদ্ধার হন। চার জন নিখোঁজ ছিলেন। বিকেলে বির্পযয় মোকাবিলা দফতরের ডুবুরিরা উদ্ধারকাজে নামে। রাত বাড়তেই একে একে উঠে আসে সুমন সাঁপুই (২০), শুভজিৎ মণ্ডল (২২) এবং স্বর্ণেন্দু পাত্রের (২২) দেহ। শনিবার সকালে উদ্ধার হয় তন্ময় দাসের (২১) দেহ। বিকালে চার জনের ময়না-তদন্ত হয়।

সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শানপুর মোড়ে শববাহী গাড়ি পৌঁছনোর অনেক আগেই ড্রেনেজ ক্যানাল রোডের দু’পাশে বাসিন্দাদের ভিড় উপচে পড়ে। চার যুবকের বাড়ির দিকে যত গাড়ি এগিয়েছে, ততই মিছিল দীর্ঘ হয়েছে। শানপুর মোড় থেকে বটতলা পর্যন্ত পাঁচ মিনিটের পথ পেরোতে শববাহী গাড়িগুলির লেগেছে আধ ঘণ্টা। এক সময়ে পুলিশকে যানবাহন বন্ধ করতে হয়। স্থানীয় একটি ক্লাবের মাঠে আগেই এলইডি আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। বাসিন্দা দীপঙ্কর দত্ত বলেন, ‘‘এই মাঠেই ওরা খেলাধুলো করত। আজ নিথর হয়ে এল। এটা মেনে নিতে পারছি না।’’ সঙ্কীর্ণ গলি দিয়ে শববাহী গাড়িগুলি ঢুকতেই পরিবেশ পাল্টে যায়। তাদের একমাত্র ছেলেকে হারানোর যন্ত্রণায় চার পরিবারেরই বুকফাটা আর্তনাদ তখন উপস্থিত সকলের চোখকে ভারী করে তোলে।

Advertisement

মাঠে দাঁড়িয়ে তন্ময়ের ছোটকাকা সৌমিত্র দাস বলেন, ‘‘যারা ডুবে গিয়েছে, ওরা কেউ সাঁতার জানত না। তবে কেন জলে নামল বুঝতে পারছি না।’’ বাসিন্দাদের কথায়, এলাকার প্রিয় এবং মিশুকে হিসাবে পরিচিত ছিলেন এই চার জন। কখনও খারাপ কিছুর সঙ্গে থাকতেন না। তাই হয়তো ওঁদের মৃত্যু গোটা এলাকাকে কাঁদিয়ে দিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন