মাস্ক না-পরে রাস্তায়, পুলিশের পদক্ষেপ
COVID-19

আরামবাগে ধৃত বেড়ে ৮১, ‘লুকোচুরি’ খেলা পান্ডুয়ায়

মাস্ক পরার প্রবণতা বাড়ল হুগলিতে। কারণ, ধরপাকড় শুরু হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

পীযূষ নন্দী এবং সুশান্ত সরকার

শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২১ ০৬:২৩
Share:

মাস্ক না পরার কারণে ৩৫ জনকে আটক করে পুলিশ। তাঁরা ভদ্রেশ্বরের তেলেনিপাড়া এবং চাঁপদানি এলাকার বাসিন্দা। রবিবার। ছবি: তাপস ঘোষ।

পুলিশ কঠোর হতেই রাস্তাঘাটে মাস্ক পরার প্রবণতা বাড়ল হুগলিতে। কারণ, ধরপাকড় শুরু হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

শনিবার রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতর মাস্ক না-পরার জন্য পুলিশকে অভিযান চালাতে নির্দেশিকা জারি করে। তার দু’দিন আগে থেকেই অবশ্য আরামবাগে পুলিশ রাস্তায় নামে। টানা চার দিনের অভিযানে আরামবাগ শহরের ৯৯% মানুষের মুখেই এখন মাস্ক দেখা যাচ্ছে বলে পুলিশের দাবি। রবিবার অবশ্য পান্ডুয়ায় মাস্ক নিয়ে পুলিশের সঙ্গে ‘লুকোচুরি’ খেলতে দেখা গেল এক শ্রেণির মানুষকে।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার পরেও আরামবাগ মহকুমায় মাস্ক না-পরে ঘোরাঘুরি করতে দেখা গিয়েছিল বহু মানুষকে। শহর উজাড় হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে পুলিশ ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগও তুলছিলেন সচেতন মানুষ। গত বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে পুলিশ আর কাউকে রেয়াত করছে না। গ্রেফতারের পরে একটি রাত লকআপে রেখে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে আদালতে।

Advertisement

এসডিপিও (আরামবাগ) অভিষেক মণ্ডল বলেন, “ শহরের মতো ৯৯% না হলেও খানাকুল, পুরশুড়া, গোঘাট এবং আরামবাগ থানা এলাকার সর্বত্র প্রায় ৯৫% মানুষের মুখে মাস্ক তুলতে পেরেছি আমরা। নজরদারি, ধরপাকড়ের পাশাপাশি জোরকদমে প্রচারও চালাচ্ছি। এ পর্যন্ত মাস্ক না-পরায় মহকুমায় ৮১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে আরামবাগ শহরের ৩৫
জন রয়েছেন।’’

আরামবাগ শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডের পাড়ায় পাড়ায় জটলা দেখলেও পুলিশ তাড়া করছে। এই অভিযানে অনেকটাই ভরসা পাচ্ছেন মানুষ। তবে, এত কড়াকড়ির মধ্যেও রবিবার শহরের কয়েকটি জায়গায় মাস্ক ছাড়াই ঘুরে বেড়াতে দেখা
গেল ৪-৫ জনকে। তাঁরা এখনও সচেতন নন।

কেন মাস্ক পরেননি জানতে চাওয়ায় বাসস্ট্যান্ডের ফলপট্টির কাছে থাকা শেখ সোনাচাঁদ বলে দিলেন, ‘‘পরতে ভুলে গিয়েছি। পকেটে আছে।’’ পিসি সেন রোডের শেখ জাফর আলিও নির্লিপ্ত, ‘‘কড়াকড়ি থাকলে তো লকডাউন ঘোষণা করা হত। রোজা রেখেছি। থুথু গেলা যাবে না। ফেলতে হচ্ছে। তাই মাস্ক পরিনি।’’

পান্ডুয়ার কালনা মোড়ে সকাল থেকেই ধরপাকড় শুরু করে পুলিশ। সে কথা রটে যেতেই বাইক আরোহী থেকে টোটোচালক— সকলেই পকেটে থাকা মাস্ক মুখে বেঁধে নেন। বেশ কয়েকজনকে রুমাল বেঁধে নিতেও দেখা যায়। আবার ওই
মোড় পেরিয়ে মাস্ক খুলতেও দেখা গিয়েছে কয়েকজনকে। ওই মোড়ে
দেড় ঘণ্টার অভিযানে মাস্কহীন চার জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের পক্ষ থেকে মাস্ক পরার জন্য প্রচারও চলতে থাকে। একই ভাবেবে প্রচারে শামিল হয়েছে টোটো-অটোচালক এবং ব্যবসায়ীদের সংগঠনগুলিও।

অনেকে মনে করছেন, পুলিশ দেরিতে কঠোর হল। সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢে়উ শুরু হওয়ার সঙ্গেই যদি পুলিশ এই পদক্ষেপ করত, তা হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকত। তবে, এখনও এক শ্রেণির মানুষের হুঁশ ফেরেনি। কালনা মোড় থেকে ধৃতদের মধ্যে পরিতোষ ক্ষেত্রপালের দাবি, ‘‘মাস্ক কিনতেই যাচ্ছিলাম। বুঝতে পারিনি পুলিশ এখনই ধরপাকড় করবে। ধরা পড়ে গেলাম।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement