তৎপর: হাসপাতালে ব্যস্ত এক কর্মী। ছবি: সুব্রত জানা।
নামেই করোনা হাসপাতাল। কিন্তু সেখানে করোনা রোগীর চিকিৎসার মতো কোনও পরিকাঠামোই নেই। এই স্বীকারোক্তি খোদ হাসপাতাল সুপারের। আর এমন হাল উলুবেড়িয়া ইএসআই হাসপাতালের।
করোনা সংক্রমণের জেরে গত বছর উলুবেড়িয়া ইএসআই হাসপাতালকে করোনা হাসপাতাল ঘোষণা করা হয়েছিল। ওই বছরের শেষের দিকে সংক্রমণ কমতে শুরু করায় করোনা হাসপাতালের তকমা উঠে যায় হাসপাতাল থেকে। চলতি বছরে ফের সংক্রমণ বা়ড়তে থাকায় পুনরায় ইএসআই হাসপাতালকে করোনা হাসপাতাল হিসেবে ঘোষণা করেছে স্বাস্থ্য দফতর। এখানে ১০০ শয্যার মধ্যে রোগী ভর্তি রয়েছেন ৫০জন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার শ্বাসকষ্ট নিয়ে এক রোগী হাসপাতালে গেলে তাঁকে অন্যত্র রেফার করা হয়। ওই রোগীর অক্সিজেন স্যাচুরেশন ছিল ৮৩। রোগীর পরিবারের এক আত্মীয়ের ক্ষোভ, ‘‘এক চিকিৎসক ইএসআই হাসপাতালে ভর্তি করতে বলেন। সেই মতো উলুবেড়িয়া ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকে অন্যত্র নিয়ে যেতে বলা হয়। পরে অনেক ঘুরে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এমন হলে তো রোগী রাস্তাতেই মারা যাবে!’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ইএসআই হাসপাতালের পক্ষ থেকে বলা হয় আশঙ্কাজনক রোগীর চিকিৎসা দেওয়ার মতো পরিকাঠামো নেই বলে জানানো হয়েছে তাঁদের।
অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন হাসপাতালের সুপার সুবীরকুমার বর্মণ। তিনি বলেন, ‘‘হাসপাতালে যথেষ্ট অক্সিজেন সিলিন্ডার নেই। যে সমস্ত রোগীর অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমে যাচ্ছে, তাঁদের ভেন্টিলেটর বা বাইপ্যাপ দিতে হতে পারে। সেই পরিকাঠামো হাসপাতালে নেই। তাই রোগীর আত্মীয়দের অন্যত্র নিয়ে যেতে বলা হয়েছে। করোনায় মৃতদের দেহ দাহ করার খরচ পর্যন্ত স্বাস্থ্য দফতর
দিচ্ছে না।’’
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, উলুবেড়িয়া ইএসআই হাসপাতালে চিকিৎসকের সংখ্যা কম। এবং বিভিন্ন ধরনের টেকনিশিয়ান নেই। প্রয়োজনের তুলনায় অক্সিজেন সিলিন্ডার কম থাকায় প্রায়ই রোগী ভর্তি নেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতরকে চিঠি করা হয়েছে।
হাওড়া জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘এই জেলায় নতুন দায়িত্ব নিয়েছি। সবটা এখনও দেখে উঠতে পারিনি। তবে করোনা হাসপাতালকে বিভিন্ন স্তরে ভাগ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে উলুবেড়িয়া ইএসআই হাসপাতাল কোন স্তরে রয়েছে, সেটা দেখতে হবে। তবে করোনা আক্রান্ত রোগীদের সকলকেই ভর্তি নিয়ে চিকিৎসা শুরু করতে হবে।’’