প্রতীকী ছবি।
করোনা সংক্রমণ একটু কমতেই ফের স্বাস্থ্যবিধি শিকেয় ওঠার জোগাড়? পান্ডুয়ার রাস্তাঘাটে সাধারণ মানুষের একাংশের বেপরোয়া মনোভাব দেখে এই প্রশ্নই উঠতে শুরু করেছে। বহু ক্ষেত্রে যথাযথ ভাবে মাস্ক পরার অভ্যাস ভুলছেন অনেকে। চিকিৎসকেরা অবশ্য এই অসচেতনতায় বিপদ আঁচ করছেন। তাঁদের আশঙ্কা, স্বাস্থ্যবিধি না-মানলে করোনা ফের দ্রুত হারে ছড়াতে পারে।
বুধবার সকালে পান্ডুয়ার আনাজ হাট ঘুরে অসচেতনতার ছবি চোখে পড়ল। ক্রেতা-বিক্রেতাদের একাংশ মাস্ক পরার ধার ধারেননি। অনেকে আবার মাস্ক পরলেও থুতনিতে ঝুলিয়ে রেখেছিলেন। কারও মাস্ক দেখা গেল হাতে। বলার পরে কেউ পকেট থেকে মাস্ক বের করে দেখাচ্ছেন, তিনি কতটা সচেতন। চিকিৎসকদের একাংশ বলেছেন, এই প্রবণতা বিপজ্জনক। কেননা, অনেকেই উপসর্গহীন সংক্রমিত থাকতে পারেন। মাস্কের সুরক্ষা এবং দূরত্ব বজায় রেখে না-দাঁড়ালে তাঁদের থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা থেকেই যায়।
প্রশাসন সূত্রের খবর, গত মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে এই ব্লকে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। ইদানীং অবশ্য তাতে অনেকটাই লাগাম পরেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সংক্রমণ বাড়তে থাকায়, বিশেষত রাজ্য সরকার কড়া নিয়ন্ত্রণ কার্যকর করার পরে জন-সচেতনতা বেড়েছিল। তা ছাড়া, পুলিশ টহল দেওয়ায় সেই ভয়েও জরুরি প্রয়োজন ছাড়া অনেকেই বেরোচ্ছিলেন না। বেরোলেও মাস্ক পরা বা দূরত্ববিধি পালনের মতো প্রাথমিক বিষয়গুলি যথাসম্ভব মেনে চলছিলেন। কিন্তু দিন কয়েক ধরে সচেতনতায় ছেদ পড়েছে। তারই প্রমাণ মিলছে হাটে-বাজারে। মাস্ক না পরেই কার্যত গায়ে-গায়ে সেঁটে চলছে আলু-পটল কেনা। পুলিশ-প্রশাসন বা বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের তরফে প্রচার চালানো হলেও এক শ্রেণির লোকের হুঁশ ফিরছে না। আনাজ-হাট ছাড়াও তেলিপাড়া মোড়, কালনা রোড মোড়ে ভিড়ভাট্টা লেগে থাকছে।
এ দিন আনাজ-হাটে এক ব্যবসায়ীকে দেখা গেল, মুখে মাস্ক নেই। কারণ জিজ্ঞাসা করতে তাঁর যুক্তি, ‘‘সব সময় মুখে মাস্ক পরে থাকা যাচ্ছে না। তাতে খদ্দেরের সঙ্গে কথা বলতেও অসুবিধা হয়। তাই মাস্ক খুলে রাখছি।’’ মাঝেমধ্যে পুলিশ টহল দিলে ক্রেতা-বিক্রেতা সকলেরই মাস্ক যথাস্থানে উঠছে। পুলিশ চলে গেলে যে কে সেই।
তেলিপাড়ার এক প্রৌঢ় বলেন, ‘‘প্রথম দিকে পুলিশ ধরপাকড় করলেও এখন তা অনেকটাই শিথিল হয়েছে। তাই অনেকে কোনও কিছু না মেনে বেরিয়ে পড়ছেন। পুলিশ তৎপর হোক। না হলে আবার না সংক্রমণ বাড়তে থাকে!’’ পান্ডুয়া ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক মেহেবুব হোসেন বলেন, ‘‘সংক্রমণ কমলেও বিপদ কিন্তু কাটেনি। এটা সাধারণ মানুষকে বুঝতে হবে। বাইরে বেরোলে মাস্ক পরা, দূরত্ববিধি মানা এবং ঘন ঘন হাত ধোওয়ার অভ্যাস ভুলে গেলে চলবে না।’’ পান্ডুয়া থানা সূত্রের দাবি, মাস্ক না পরা বা অকারণে বেরনো নিয়ে প্রতিদিনই অভিযান চালানো হয়। বিনা কারণে স্বাস্থ্যবিধি ভাঙলে আটক করা হয়।