প্রতীকী ছবি।
যে কাজ মিটে যাওয়ার কথা ১০ টাকার স্ট্যাম্প-পেপারে, তার জন্য গুনতে হচ্ছে পাঁচ বা দশ গুণ বেশি টাকা। কেননা, ১০ টাকার স্ট্যাম্প পেপার উধাও শ্রীরামপুর মহকুমা আদালত থেকে। মিলছে না ২০ টাকার স্ট্যাম্প-পেপারও। ফলে, উপায়ান্তর না দেখে বিভিন্ন জরুরি কাজ সারতে ৫০ বা ১০০ টাকার স্ট্যাম্প-পেপার কিনতে বাধ্য হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
ওই আদালতে গত কয়েক মাস ধরে এই পরিস্থিতি চলছে বলে সাধারণ মানুষ এবং আইনজীবীদের একাংশের অভিযোগ। সমস্যার দ্রুত সমাধানের দাবিতে হুগলি জেলা প্রশাসন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটকের কাছে চিঠি দিয়েছে একটি নাগরিক সংগঠন। শ্রীরামপুর মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ এই আদালতের উপরে নির্ভরশীল।
আইনজীবীরা জানান, বিভিন্ন এফিডেভিট বা কোনও বিষয়ে পারস্পরিক চুক্তির ক্ষেত্রে ১০ টাকার ‘নন-জুডিশিয়াল’ স্ট্যাম্প-পেপারের প্রয়োজন হয়। ফলে, আদালতে প্রতিদিনই এর দরকার হয়। সরকার অনুমোদিত নির্দিষ্ট ভেন্ডারদের কাছ থেকে তা কিনতে হয়। ‘অল বেঙ্গল সিটিজেন্স ফোরাম’ নামে ওই নাগরিক সংগঠনের সদস্যেরা জানান, তাঁরা খোঁজ নিয়ে জেনেছেন, শ্রীরামপুর আদালতে এমন পাঁচ জন ভেন্ডার রয়েছেন। গত এপ্রিল মাস থেকে ১০ এবং ২০ টাকার স্ট্যাম্প-পেপারের আকাল চলছে। তাঁদের দাবি, ভেন্ডারদের কাছে ৫০ টাকার স্ট্যাম্প-পেপারও সব সময় থাকছে না। তার জন্য দ্বিতীয় দিন যেতে হচ্ছে।
হারাধন ঘোষ নামে এক আইনজীবী এবং ওই সংগঠনের সদস্য বলেন, ‘‘এই জেলারই চুঁচুড়া বা চন্দননগর আদালতে ১০, ২০ টাকার স্ট্যাম্প-পেপার পাওয়া যাচ্ছে। প্রয়োজনে সেখান থেকে আনিয়ে কাজ চালাচ্ছি। কেন শ্রীরামপুরে পাওয়া যাচ্ছে না, জানি না। সাধারণ মানুষ খুবই অসুবিধায় পড়ছেন।’’
সংগঠনের সভাপতি শৈলেন পর্বতও আইনজীবী। তিনি বলেন, ‘‘অনেক দূর থেকে গরিব মানুষ আদালতে এসে স্ট্যাম্প-পেপার কিনতে না পেরে হয়রান হচ্ছেন। যে দামে প্রয়োজন মিটবে, তার থেকে অতিরিক্ত দাম দিয়ে কেন তাঁদের স্ট্যাম্প-পেপার কিনতে হবে? সরকারি ব্যবস্থায় এই আকাল হচ্ছে? জেলা কালেক্টরেট দেখুক।’’ সমস্যার কথা বিস্তারিত ভাবে জানিয়ে ওই সংগঠনের তরফে গত ২ তারিখে জেলাশাসককে চিঠি দেওয়া হয়। বুধবার চিঠি পাঠানো হয় মুখ্যমন্ত্রী এবং আইনমন্ত্রীর কাছে।