(বাঁ দিকে) সল্টলেক দুর্ঘটনায় আগুনে ভস্মীভূত সেই গাড়ি। ঘাতক গাড়ির চালক বিনোদ রায় (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
সল্টলেকের দুর্ঘটনায় ঘাতক গাড়ির চালককে গ্রেফতার করা হল হাওড়া থেকে। হাওড়ার মালিপাঁচঘড়া থানা এলাকায় তিনি লুকিয়ে ছিলেন বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার সেখান থেকে তাঁকে গ্রেফতার করেছে মালিপাঁচঘড়া থানার পুলিশ। অভিযুক্তকে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
বুধবার বিকেলে কেষ্টপুর এবং সল্টলেকের মাঝে ৮ নম্বর ব্রিজের কাছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি বাইকে ধাক্কা মারে চারচাকার গাড়ি। বাইকটি সিগন্যালে দাঁড়িয়ে ছিল। বাইরে আরোহী ছিলেন দু’জন। গাড়ির ধাক্কায় এক জন ছিটকে পড়েন। বাইকের চালক সৌমেন মণ্ডল পিষে যান রাস্তার পাশের রেলিংয়ে। তার পর ওই গাড়িতে আগুন ধরে গিয়েছিল। সেই আগুনে ঝলসে মৃত্যু হয় সৌমেনের। তিনি পেশায় ডেলিভারি বয়। দুর্ঘটনাগ্রস্ত চারচাকার গাড়িটি চালাচ্ছিলেন বিনোদ রায় নামের ব্যক্তি। বৃহস্পতিবার পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করল।
বুধবারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে কেষ্টপুর লাগোয়া সল্টলেক রণক্ষেত্রের আকার নিয়েছিল। পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিল উত্তেজিত জনতা। পরিস্থিতি ক্রমে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। স্থানীয়দের দাবি ছিল, পুলিশের চোখের সামনেই এই ঘটনা ঘটেছে। যুবককে বাঁচানোর চেষ্টা না-করে তারা ঘটনার ভিডিয়ো রেকর্ড করছিল। পুলিশকে লক্ষ্য করে একসময় ঢিল ছুড়তে শুরু করেন স্থানীয়েরা। পরে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা দাবি করেছিলেন, ঘাতক গাড়ির চালক নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ছিলেন। সেই কারণেই গাড়ি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি। বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থলের যে সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে এসেছে, তাতেও ভয়াবহ ঘটনার ছবি ধরা প়়ড়েছে। দেখা গিয়েছে, সিগন্যালে দাঁড়়িয়েছিল বাইকটি। ডান দিক থেকে আচমকা ছুটে আসে কালো চারচাকার গাড়ি। প্রথমে অন্য একটি গাড়িতে তা ধাক্কা মারে। তার পর বাইকের সঙ্গে ওই গাড়ির সংঘর্ষ হয়। বাইকটি গাড়ির ধাক্কায় রাস্তার পাশের রেলিংয়ের দিকে এগিয়ে যায়।
বিধাননগর পুলিশ এফআইআর দায়ের করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছিল। গাড়ির আরোহীরাও আহত হয়েছিলেন। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অভিযোগ, গাড়ির চালক বুধবার থেকেই পলাতক ছিলেন। তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। অবশেষে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তিনি পুলিশের জালে ধরা প়ড়লেন। আদৌ তিনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছিলেন কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।