চপার দিয়ে বিষ্ণুর গলা কাটে বিশাল
Murder

Murder: আদালতে জানাল রাজসাক্ষী

পুলিশ সূত্রের খবর, গ্রেফতার হওয়ার পরে জেরায় ঘটনার কথা মিন্টু স্বীকার করে। আদালতে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জবানবন্দিও দেয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২১ ০৭:৩৮
Share:

বিষ্ণুর (ইনসেটে) খুনিদের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ। ছবি: তাপস ঘোষ

গত বছর কী ভাবে মারা হয়েছিল চুঁচুড়ার রায়বেড়ের তেইশ বছরের যুবক বিষ্ণু মালকে?

Advertisement

সাড়া ফেলে দেওয়া ওই খুনের মামলার সাক্ষ্যে শনিবার চুঁচুড়া আদালতে পুরো ঘটনা বর্ণনা করল প্রত্যক্ষদর্শী তথা অন্যতম অভিযুক্ত শেখ মিন্টু। সে এই ঘটনার রাজসাক্ষী।

গত বছরের ১১ অক্টোবর প্রেমঘটিত কারণে আক্রোশবশত পরিকল্পনা করে কুখ্যাত দুষ্কৃতী বিশাল শাগরেদদের নিয়ে বিষ্ণুকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে খুন করে বলে অভিযোগ।

Advertisement

আইনজীবী সূত্রের খবর, এ দিন আদালতে মিন্টু জানায়, সে নিউটাউন মেঠোপাড়া এলাকায় ভাড়া থাকত। সেখানেই রথীন সিংহ এবং বিপ্লব দাসের (তারাও অন্যতম অভিযুক্ত) বাড়ি। সেই সূত্রে ওই দু’জনের সঙ্গে তার আলাপ। আর্থিক অনটনের কারণে মেয়ের জন্মদিন পালনের জন্য মিন্টু তাদের কাছে কিছু টাকা চেয়েছিল। তারা তাকে বলেছিল, বৈদ্যবাটীতে তাদের ‘দাদা’ বিশাল টাকা দিতে পারবে। সেইমতো ঘটনার দিন রথীন ও বিপ্লবের সঙ্গে মিন্টু বৈদ্যবাটীতে আসে। ওই দু’জন এবং বিশাল ও রামকৃষ্ণের সঙ্গে সে বৈদ্যবাটীর একটি বাড়িতে যায়। সেখানে অন্য অভিযুক্তরাও ছিল। বিষ্ণুকেও আনা হয়। বিষ্ণু বলেন, তাঁকে মায়ের ওষুধ কিনতে হবে। তাঁকে যেন ছেড়ে দেওয়া হয়। উত্তরে বিশাল বলে, তাঁর সেটাই শেষ দিন।

এরপর বিশালের চোখের ইশারায় বিপ্লব গামছা দিয়ে পিছন থেকে বিষ্ণুর গলা পেঁচিয়ে ধরে। বিষ্ণু ছটফট করতে থাকেন। দুষ্কৃতীরা তাঁর হাত-পা চেপে ধরে তাঁর উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ধীরে ধীরে বিষ্ণু নিস্তেজ হয়ে যান। তিনি মারা গেলে বিশাল তাঁর দেহে লাথি মারে। পাশের ঘর থেকে একটি বঁটির বাঁট এবং চপার নিয়ে আসা হয়। বঁটির বাঁটে দেহ রেখে চপার দিয়ে গলা কেটে ফেলে বিষ্ণু। ওই চপার দিয়েই তাঁর দুই হাত-পা দেহ থেকে আলাদা করে ফেলে কালা। বিষ্ণুর কাটা মুণ্ড মাথার উপরে তুলে রামকৃষ্ণ বলে, ‘ছেলেটা কত কথা বলছিল। এখন আর বলছে না।’ এর পরে বিশালের নির্দেশে বিষ্ণুর কাটা হাত-পা পলিথিনে মুড়ে বিভিন্ন জায়গায় ফেলতে চলে যায় শাগরেদরা। মুণ্ড ঘরেই ছিল। পরের সকালে বিষ্ণু সেটি ফেলে আসে। রথীন, বিপ্লব এবং মিণ্টু বাড়ি ফিরে যায়। বিশাল বাড়ি গিয়ে মিন্টুকে হুমকি দিয়ে আসে, পুলিশকে সে যেন কিছু না জানায়।

আলোড়ন ফেলে দেওয়া এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ পর্ব সোমবার শুরু হয়েছে চুঁচুড়া আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (প্রথম ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট) কাজি আবুল হাসেমের এজলাসে।

পুলিশ সূত্রের খবর, গ্রেফতার হওয়ার পরে জেরায় ঘটনার কথা মিন্টু স্বীকার করে। আদালতে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জবানবন্দিও দেয়। এক আইনজীবী জানান, খুনে ব্যবহৃত চপার এবং বঁটি এ দিন আদালতে শনাক্ত করে মিন্টু। একটি শাবল দিয়ে মিন্টুর পায়ে মারা হয়েছিল। সেটিও শনাক্ত করে। বিশাল-সহ অন্য অভিযুক্তদেরও শনাক্ত করে।

দোষীদের ফাঁসির দাবিতে এ দিনও আদালত চত্বরে সাধারণ মানুষ জড়ো হন। বিষ্ণুর বাড়ির লোকেরাও সেখানে ছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন