Capital Punishment

‘পথের কাঁটা’ ছেলেকে খুনে মা হাসিনা ও তাঁর প্রেমিক ভান্নুরকে ফাঁসির সাজা শোনাল হাওড়ার আদালত

মায়ের প্রেমের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল সন্তান। তাই সন্তানকে খুন করে ব্যাগে ভরে হাওড়াগামী ট্রেনের সিটের নীচে রেখে আসেন মা। সেই ঘটনায় মা ও তাঁর প্রেমিককে ফাঁসির সাজা আদালতের।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

হাওড়া শেষ আপডেট: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৬:৩৮
Share:

— প্রতীকী চিত্র।

মায়ের প্রেমের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল দেড় বছরের সন্তান। সেই ছেলেকেই খুন করেন মা হাসিনা সুলতানা। এবং এই কাজে হাসিনাকে সহযোগিতা করেন তাঁর প্রেমিক ভান্নুর শেখ। এই মামলায় আগেই হাসিনা এবং ভান্নুরকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল হাওড়ার ফার্স্ট ট্র্যাক আদালত। বৃহস্পতিবার দু’জনকেই ফাঁসির সাজা দিলেন বিচারক।

Advertisement

অন্ধ্রপ্রদেশের গুন্টুরের বাসিন্দা হাসিনা স্বামীর সঙ্গে থাকতেন না। সন্তানকে নিয়ে থাকতেন মায়ের সঙ্গে। সেখানে থাকাকালীনই হাসিনার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয় স্থানীয় ভান্নুরের। কিন্তু দু’জনের প্রেমের পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছিল হাসিনার দেড় বছরের সন্তান শেখ জিশান আহমেদ। হাসিনা এবং ভান্নুর পরিকল্পনা তৈরি করেন পথের কাঁটাকে দূরে সরানোর। ঠিক করেন, খুন করা হবে জিশানকে। সেই মতো এক পাতা ঘুমের ওষুধ গুঁড়ো করে খাওয়ানো হয় জিশানকে। তার পর মা এবং মায়ের প্রেমিক মিলে গলায় দড়ি পেঁচিয়ে খুন করেন সন্তানকে। খুন তো হল, কিন্তু দেহের কী হবে? তদন্তে প্রকাশ, খুনের পর ছোট্ট জিশানের দেহ ভরা হয় হাসিনার একটি ব্যাগে। তার পর যাত্রীর বেশে ভান্নুর সেই ব্যাগ রেখে আসেন হাওড়াগামী ফলকনুমা এক্সপ্রেসে। ট্রেন হাওড়া পৌঁছলে সেই ব্যাগ উদ্ধার হয়। রেলকর্মীরা ব্যাগ খুলে দেখেন, তাতে ভরা রয়েছে একটি শিশুর দেহ। এর পরেই তদন্তে নামে হাওড়া জিআরপি। তদন্তের সূত্র ধরে তাঁরা হাজির হন অন্ধ্রপ্রদেশে। সেখানেই রহস্যের পর্দাফাঁস করে পুলিশ। স্থানীয় পুলিশের সহযোগিতায় হাসিনা এবং ভান্নুরকে নিয়ে পুলিশ ফেরে হাওড়া। শুরু হয় শুনানি প্রক্রিয়া। মঙ্গলবার সেই মামলায় হাসিনা এবং ভান্নুরকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। বৃহস্পতিবার দু’জনকেই ফাঁসির সাজা দিল আদালত।

বিচারক নিজের পর্যবেক্ষণে জানান, মায়ের জন্যই পৃথিবীর আলো দেখে সন্তান। শৈশবে তার মধ্যে বাইরের আঘাত প্রতিরোধ করার ক্ষমতাই জন্মায় না। মা-ই তখন তাকে আঁকড়ে রাখে, আঘাত থেকে বাঁচায়। সেই জন্মদাত্রী মা নিজের সন্তানকে শেষ করে দিয়েছেন। এ জন্যই এই অপরাধ বিরলের মধ্যে বিরলতম।

Advertisement

সরকারি আইনজীবী অরিন্দম মুখোপাধ্যায় জানান, সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে দু’জনকে দোষী সাব্যস্ত করেন ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক। বৃহস্পতিবার দু’জনকে ফাঁসির সাজা ঘোষণা করে আদালত। আসামি পক্ষের আইনজীবী ফিরোজ সরকার জানান, ফাঁসির নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে তাঁরা উচ্চ আদালতে যাবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন