WB assembly election

WB Municipal Election 2022: শান্তিতেই ভোট মিটল চন্দননগরে

শহরের বাসিন্দা, বিজেপির রাজ্যনেতা দীপাঞ্জন গুহ দলীর কর্মীদের কাছে অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটছিলেন।

Advertisement

প্রকাশ পাল ও কেদারনাথ ঘোষ

চন্দননগর শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৮:১৪
Share:

পুলিশি প্রহরায় ভোটদান পর্ব। চন্দননগর ছবি: তাপস ঘোষ

প্রকাশ পাল
কেদারনাথ ঘোষ
চন্দননগর
এই দিনটার জন্য দিন গুনছিল চন্দননগর।
সাড়ে তিন বছর নির্বচিত জনপ্রতিনিধি ছিল না চন্দননগর পুরসভায়। অবশেষে শনিবার ভোট হল। মোটের উপরে শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট হয়েছে। যা দেখে এই শহরে বিভিন্ন ভোট দেখার অভিজ্ঞতা থাকা চোখ বলছে, কার্যত নির্বিঘ্নে ভোট হওয়ার ঐতিহ্য বজায় থেকেছে। উল্টো মত বিজেপির। তারা বিভিন্ন জায়গায় শাসক দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে। শেষ বেলায় বিক্ষোভ দেখিয়েছে মহকুমাশাসকের (চন্দননগর) দফতরের সামনে। গুরুতর অভিযোগ নেই সিপিএমের। তৃণমূল নেতৃত্বে কোনও অভিযোগই মানেননি।
পুলিশ-প্রশাসনের দাবি, গোলমাল ছাড়াই ভোট হয়েছে। বোরোকালীতলায় ডিসি (চন্দননগর) অফিসে বসে ভোটের পুলিশি ব্যবস্থা তদারক করেন আইজি (বাঁকুড়া রেঞ্জ) সুনীলকুমার গুপ্ত। সিপি অর্ণব ঘোষ-সহ গুরুত্বপূর্ণ আধিকারিকরাও চন্দননগরে ছিলেন। আইজি-র কথায়, ‘‘ভোট শান্তিপূর্ণ হয়েছে।’’
২৭ নম্বর ওয়ার্ডে গৌরহাটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোটকেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থীকে মারধরের অভিযোগ ওঠে শাসক দলের বিরুদ্ধে। ঘটনাস্থলে পুলিশ বাহিনী যায়। বিজেপি প্রার্থী দীপা চৌধুরীর অভিযোগ, ‘‘শাসক দলের ৪০-৫০ জন বহিরাগত ভোটকেন্দ্রে ঢুকে ভোটার তালিকা নর্দমায় ফেলে দেয়। পুলিশ বাধা দেয়নি। আমাকে ফেলে মারধর করে।’’ অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূল প্রার্থী বিনয়কুমার সাউয়ের দাবি, ‘‘জনসংযোগ না থাকায় বিজেপি মিথ্যা অভিযোগ করছে। লাইনে দাঁড়ানো ভোটারদের উনি বহিরাগত বলছেন। ওঁরা কোনও অশান্তি করেননি।’’ পুলিশ আধিকারিকরা জানান, মারধরের অভিযোগের প্রমাণ মেলেনি। গোলমাল দ্রুত সামাল দেওয়া হয়।

Advertisement

শহরের বাসিন্দা, বিজেপির রাজ্যনেতা দীপাঞ্জন গুহ দলীর কর্মীদের কাছে অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটছিলেন। অভিযোগ, ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে পুলিশ তাঁকে ঢুকতে দেয়নি। এই সব অভিযোগ নিয়েই বিজেপি বিকেলে মহকুমাশাসকের দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখায়। মহকুমাশাসক অয়ন দত্তগুপ্ত বিজেপি নেতাদের অভিযোগ শোনেন।

৫ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী গোপাল শুক্লার অভিযোগ, গঙ্গামাতা স্কুল এবং প্রবর্তক নারী মন্দিরের বুথে ইভিএম-এ তৃণমূলের প্রতীকের পাশে ভোটারদের হাতে লাগানোর কালির দাগ লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল ভোটদাতাদের প্রভাবিত করতে। তাঁর কথায়, ‘‘জোর করে ওই দাগ মুছিয়েছি। নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছি।’’ সকালে তৃণমূলের এক কর্মীর সঙ্গে তাঁর একপ্রস্ত বাদানুবাদ হয় প্রবর্তক নারী মন্দিরে। দু’একটি জায়গায় ভোটকেন্দ্রের আশপাশে তৃণমূলের ছেলেদের জমায়েত দেখা গিয়েছে।

Advertisement

পুলিশের বিরুদ্ধে বাড়ির সিসিক্যামেরা বন্ধের অভিযোগ তোলেন ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী রেখা তিওয়ারি। তিনি শহরের নিচুপট্টি মেন রোডে থাকেন। অভিযোগ, তৃণমূল প্রার্থী মৌমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাবা রেখার ভাইকে সিসি ক্যামেরা বন্ধ করতে বলেন। পরে, পুলিশ গিয়ে একই দাবি করে। বাধ্য হয়ে তাঁরা সিসিক্যামেরা বন্ধ করেন। মৌমিতা বলেন, ‘‘সিসিক্যামেরায় রাস্তার ছবি তোলা হচ্ছিল বলে ব্যক্তিগত ভাবে নিষেধ করা হয়।’’ রেখার বাবা রমেশ তিওয়ারি বিগত পুরবোর্ডে সিপিএম কাউন্সিলর তথা বিরোধী দলনেতা ছিলেন।

বিভিন্ন জায়গায় যুযুধান দু’পক্ষের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সৌজন্য বিনিময়ও দেখা গিয়েছে। কোথাও সিপিএম প্রার্থীর সঙ্গে করমর্দন করেছেন বিজেপি নেতা, কোথাও ভরদুপুরে সিপিএম নেতা বিস্কুট এগিয়ে দিয়েছেন নির্দল প্রার্থীর দিকে। রেললাইনের পূর্ব দিকের নানা এলাকা কার্যত নিস্তরঙ্গ ছিল। বিদায়ী মেয়র তথা ৩০ নম্বরের তৃণমূল প্রার্থী রাম চক্রবর্তীকে দেখা গেল মোটরবাইকের পিছনে ঘুরছেন। মুখে হাসি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন