Kidnapping

‘আমায় দিন’, মায়ের কোল থেকে শিশুকে নিয়ে ধা! কালীঘাটে বিয়েবাড়ি থেকে অপহৃত মিলল হাওড়ায়

পুলিশ সূত্রে খবর, কালীঘাটে একটি বিয়ে বাড়ির অনুষ্ঠান থেকে অপহৃত হয় শিশুটি। তাকে উদ্ধার করা গিয়েছে হাওড়ার সাঁকরাইল থেকে। গামছা জড়ানো অবস্থায় মন্দিরের চাতাল থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

সাঁকরাইল শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০২৩ ১৭:৪৯
Share:

শিশুটির কান্না থামানোর নামে মায়ের কোল থেকে তাকে নিয়ে পালান এক ব্যক্তি। —প্রতীকী চিত্র।

কালীঘাটে একটি বিয়েবাড়ি থেকে অপহৃত হয়েছিল ১০ মাসের শিশু। তাকে আদর করার অছিলায় মায়ের কোল থেকে নিয়ে পালিয়ে যান এক ব্যক্তি। ২ দিন পরে গামছা জড়ানো অবস্থায় সেই শিশুটিকে পাওয়া গেল হাওড়ার আন্দুল রোডে একটি মন্দিরের চাতালে। দু’দিন ধরে তীব্র মানসিক অশান্তিতে ভোগার পর শিশুটিকে ফিরে পেলেন বাবা-মা।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, গত রবিবার বিকেলে কলকাতার কালীঘাট থানা এলাকার একটি বিয়েবাড়ি অনুষ্ঠান ছিল। সেখানে সস্ত্রীক আমন্ত্রিত ছিলেন কলকাতার তালতলা এলাকার বাসিন্দা সুভাষ সাউ। সুভাষের স্ত্রী খুশবুর কোলে ছিল তাঁদের সন্তান আয়ুশ। ওই দিন বিকেলে সাড়ে ৪টে নাগাদ শিশুটি অপহৃত হয় বলে অভিযোগ।

সুভাষ জানান, মায়ের কোলে শিশুটি কাঁদছিল। সেই সময় অপরিচিত এক জন খুশবুকে সাহায্য করার অছিলায় শিশুটিকে কোলে নেন। ‘আমায় দিন’ বলে মায়ের কোল থেকে শিশুটিকে নিয়ে বিয়েবাড়ির ভিড়ে ঢুকে পড়েন ওই ব্যক্তি। আর তাঁকে দেখতে পাননি কেউ। বিয়েবাড়ি তন্নতন্ন করে কোথাও শিশুটিকে না পেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হন বাবা-মা। রবিবার সন্ধ্যায় অভিযোগ দায়ের হয় কালীঘাট থানায়। এর পর কালীঘাট থানার পুলিশ এবং কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ এর তদন্ত শুরু করে। গত দু’দিন ধরে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ চালিয়েছে পুলিশ।

Advertisement

অন্য দিকে, সোমবার সন্ধ্যায় সাড়ে ৭টা নাগাদ আন্দুল রোডের ধারে একটি মন্দিরের চাতালে গামছা জড়ানো অবস্থায় একটি শিশুকে পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। বাদল আইচ নামে এক টোটোচালক বাচ্চাটির কান্নার শব্দ শুনতে পেয়ে তাকে উদ্ধার করে। এর মধ্যে ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। বাঁকড়া আইসিডিএস কেন্দ্রের কর্মী মুনমুন ঘোষ সেই সময় স্বামীর সঙ্গে বাজারে যাচ্ছিলেন। তিনিও ভিড় দেখে দাঁড়িয়ে পড়েন। দুধের শিশুটিকে কোলে তুলে নেন তিনি। খবর দেওয়া পুলিশে।

কিছু ক্ষণের মধ্যে ঘটনাস্থলে আসে সাঁকরাইল থানার পুলিশ এবং স্থানীয় মাশিলা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান। এর পর শিশুটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয় বেসরকারি হাসপাতালে। ঘটনাস্থল থেকে শিশুটির ছবি ভাইরাল করে দেওয়া হয় সমাজমাধ্যমে। সেখান থেকেই খবর পান সুভাষ। তিনি বলেন, ‘‘সন্ধ্যায় আমায় ফোন করে এক জন বললেন, ‘‘শিশুটিকে পেতে হলে আন্দুল পেট্রোল পাম্পের কাছে যেতে হবে। আমি এর পর এক বন্ধুকে খোঁজখবর নিতে বলেছিলাম। ও জানায় খবর ঠিক।’’ সুভাষের দাবি, বিয়েবাড়ি থেকে তাঁর সন্তানকে অপহরণ করা হয়েছিল।

সোমবার রাতেই কালীঘাট থানার পুলিশ এবং কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা সাঁকরাইল থানায় যায়। এর পর শিশুটিকে তার বাবা-মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

পুলিশ সূত্রে খবর, কে বা কারা ওই শিশুটিকে মন্দিরে ফেলে গেল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ জন্য এলাকার সমস্ত সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করা হয়। অপহরণকারীদের উদ্দেশ্যই বা কী ছিল, সেটাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। অপহরণকারীদের সঙ্গে শিশু পাচার চক্র জড়িত কি না, সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন