Coronavirus

coronavirus in West Bengal: ১৬ হাজারে সব সংস্কার সম্ভব? প্রশ্ন বহু স্কুলেই

নির্দিষ্ট বরাদ্দে প্রয়োজনীয় সব মেরামতিও করা যাবে কি না, তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন বহু স্কুল কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

নুরুল আবসার

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২১ ০৭:২৮
Share:

ফাইল চিত্র।

স্কুলপ্রতি বরাদ্দ ১৬ হাজার টাকা। সেই টাকায় সংস্কারকাজ করবে ব্লক প্রশাসনের নিযুক্ত ঠিকাদার সংস্থা। কিন্তু এখনও গ্রামীণ হাওড়ার বহু স্কুলে সেই কাজ শুরুই হয়নি। ফলে, তা সময়ে (১৬ নভেম্বরের আগে) শেষ হবে কি না, সেই প্রশ্ন তো উঠছেই, নির্দিষ্ট বরাদ্দে প্রয়োজনীয় সব মেরামতিও করা যাবে কি না, তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন বহু স্কুল কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

শ্যামপুরের একটি স্কুলের কথাই ধরা যাক। সেখানকার প্রধান শিক্ষক জানান, স্কুলে জানলা, বেঞ্চ,জলের পাইপলাইন, শৌচাগার সংস্কারের জন্য তিনি প্রথমে শিক্ষা দফতরের কাছে ৭০ হাজার টাকার হিসাব দিয়েছিলেন। পরে দফতরের নির্দেশে কমিয়ে ৫০ হাজার টাকা করেন। এখন শুনছেন বরাদ্দ মাত্র ১৬ হাজার টাকা।

ওই প্রধান শিক্ষকের খেদ, ‘‘১৬ হাজার টাকার মধ্যে ১০ হাজার টাকা খরচ হবে মিড-ডে মিলের রান্নাঘরের ছাউনি মেরামতিতে, যেটা এখনই দরকার নেই। বাকি ৬ হাজার টাকায় কী কাজ হবে? ফলে, খারাপ শৌচাগার বা ভাঙা বেঞ্চ নিয়েই আমাকে পঠনপাঠন চালাতে হবে।’’ একই রকম খেদের কথা শোনা
গিয়েছে আরও কিছু স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের মুখে।

Advertisement

আগামী ১৬ নভেম্বর থেকে স্কুল খুলছে। করোনা আবহে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় স্কুলগুলির পরিকাঠামোতে বেশ কিছু ক্ষতি হয়েছে। সংস্কারের খরচ হিসেবে স্কুলগুলির কাছ থেকে হিসেবে চেয়েও বরাদ্দ নির্দিষ্ট করে প্রশাসন। সেই পরিমাণ অনেক কম বলে বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি। তা-ও সরাসরি স্কুলের হাতে না দিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্লক প্রশাসনের মাধ্যমে খরচ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সম্প্রতি ওই সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্লক প্রশাসনের ডাকা বৈঠকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন গ্রামীণ হাওড়ার বেশ কিছু স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা। ব্লক প্রশাসনের কর্তারা সাফ জানিয়ে দেন এটা সরকারি সিদ্ধান্ত। তাঁদের কিছু করার নেই। গ্রামীণ হাওড়ায় প্রায় ৪০০ হাইস্কুল আছে। সব স্কুলেই ওই প্রক্রিয়ায় কাজ হবে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর।

কেন এই সিদ্ধান্ত?

জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, টাকা কম। তাই স্কুল কর্তৃপক্ষের হাতে সরাসরি টাকা দিলে তাঁরা অগ্রাধিকার ঠিক করতে পারবেন না। উল্টোপাল্টা খরচ করে বসতে পারেন। তা ছাড়া, সরাসরি টাকা দিলে তাঁরা ‘ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট’ সময়মতো দিতে পারবেন না। কারণ, তাঁদের হাতে এ বিষয়ে অভিজ্ঞ কর্মী নেই। জেলা প্রশাসনের ওই কর্তার কথায়, ‘‘পঠনপাঠন চালুর জন্য যতটুকু প্রয়োজন, ঠিক সেই সংস্কার কাজটুকুই করা হবে। সেই কারণেই ব্লক পর্যায়ে কেন্দ্রীয় ভাবে কাজগুলি করা হচ্ছে। এর জন্য ঠিকা সংস্থা নিয়োগ করা হয়ে গিয়েছে।’’ সময়মতো কাজ শেষ করার ব্যাপারে প্রধান শিক্ষকদের একাংশ যে সংশয় প্রকাশ করেছেন সেই প্রসঙ্গে ওই প্রশাসনিক কর্তার বক্তব্য, ‘‘পঠনপাঠন চালু হওয়ার আগেই কাজ শেষ করার জন্য ঠিকা সংস্থাগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’

স্কুলকে জীবাণুমুক্ত করা বা মাস্ক কেনার জন্যেও কোনও টাকা দেওয়া হয়নি বলে প্রধান শিক্ষকেরা জানান। গতবারে এটা প্রশাসনের তরফেই করে দেওয়া হলেও এ বারে স্কুলগুলিকে তাদের ‘বিশেষ আর্থিক সহায়তা তহবিল’ থেকে খরচ করতে
বলা হয়েছে।

একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘আমি গত বছরে ৭০ হাজার টাকা ওই তহবিল বাবদ পেয়েছিলাম। কিন্তু তার সিংহভাগ খরচ হয়ে গিয়েছে সারাবছর ধরে ছাত্রছাত্রীদের অ্যাক্টিভিটি টাস্ক চালাতে গিয়ে। তহবিলে আর টাকা নেই বললেই চলে। কী ভাবে জীবাণুমুক্ত করার কাজ করব বুঝতে পারছি না।’’

জেলা সর্বশিক্ষা দফতরের এক কর্তা অবশ্য জানান, খুব শীঘ্রই স্কুলগুলিতে চলতি বছরের বিশেষ আর্থিক সহায়তা তহবিলের টাকা পাঠানো হবে। ফলে, জীবাণুমুক্ত করার কাজে সমস্যা হবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন