industry

Welding industry: ব্রাত্য ঢালাই শিল্পের ধাত্রীভূমি, প্রশ্নে উদ্যোগ

হাওড়া শহরের মধ্য বালিটিকুরি, কামারডাঙা, বেলিলিয়াস রোড, বেলগাছিয়া, বজরংবলী,সালকিয়ার অলিগলিতে এক সময়ে ঢালাই শিল্পের রমরমা ছিল।

Advertisement

দেবাশিস দাশ

কলকতা শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২২ ০৬:৪৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

এক সময়ে রাজ্যের অর্থনৈতিক মানচিত্রে গুরুত্বপূর্ণ ছিল ঢালাই শিল্প। হাওড়া ছিল সেই শিল্পের ধাত্রীভূমি। অভিযোগ, আজ কেন্দ্রীয় সরকারের নীতি ও রাজ্য সরকারের উদাসীনতায় সেই শিল্পের সঙ্গে জড়িত ৬০০ কারখানাই প্রায় বন্ধ হওয়ার মুখে। কাঁচামালের অভাব ও মূল্যবৃদ্ধি, দুই কারণেই ধুঁকছে এই ক্ষু্দ্র ও মাঝারি শিল্প। ঢালাই শিল্পে জড়িত পাঁচ লক্ষ মানুষ। এই ক্ষেত্র থেকে কেন্দ্র বা রাজ্যের রাজস্ব আদায়ও হত কোটি কোটি টাকা। অভিযোগ, সরকারি উদ্যোগের অভাবে প্রশ্ন উঠছে তার পুনরুজ্জীবন নিয়েই।

Advertisement

হাওড়া শহরের মধ্য বালিটিকুরি, কামারডাঙা, বেলিলিয়াস রোড, বেলগাছিয়া, বজরংবলী,সালকিয়ার অলিগলিতে এক সময়ে ঢালাই শিল্পের রমরমা ছিল। ছোট ছোট কারখানায় উৎপাদন হত
রেল, সেনাবাহিনী, ওএনজিসি, সেল, ইসকো, দুর্গাপুর স্টিল প্লান্ট, রৌরকেলা স্টিল প্লান্টের যন্ত্রাংশ। ওই সব সংস্থার ইঞ্জিনিয়ারদের তৈরি যন্ত্রাংশের নকশা দেখে নিখুঁত ভাবে সে সব বানানোর জন্য নামডাক ছিল এই অঞ্চলের। ফলে কর্মসংস্থানও হত। এখন কাঁচামালের অভাবে অধিকাংশ কারখানায় কাজ নেই। কোনও কোনও কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

কেন এই অবস্থা?

Advertisement

হাওড়া ফাউন্ড্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সন্দীপ দত্ত জানাচ্ছেন, এই শিল্পের উপর প্রথম আঘাত আসে ১৯৯৪ সালে। ওই বছর থেকেই জয়েন্ট প্লান্ট কমিটিকে (জেপিসি) কাজের বরাত দেওয়ার নিয়ন্ত্রণ তুলে নিয়ে বেসরকারি সংস্থাকেও কাজ দিতে শুরু করল কেন্দ্র। দ্বিতীয় আঘাত এল কোভিডের ঢেউয়ের পরে, গত ছ’মাস ধরে কাঁচা লোহা ও কোকের লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধির কারণে। সন্দীপবাবুর অভিযোগ, ‘‘অপরিহার্য এই দু’টি মূল কাঁচামালের দাম কেন বাড়ছে, সেই ব্যাখ্যাও কেউ দিচ্ছে না। ফলে শিল্পে জড়িত ৫ লক্ষ মানুষ বিপদের মধ্যে রয়েছেন। যাঁদের আর্থিক সঙ্গতি আছে, তাঁরা কারখানা চালাচ্ছেন। যাঁদের নেই, তাঁরা মাসে এক-দু’দিন কাজ করছেন।’’

হাওড়া ফাউন্ড্রি অ্যাসোসিয়েশনের কর্তাদের দাবি, এর মধ্যেও হাওড়া পুর এলাকার দূষণ কমাতে রাজ্য সরকারের কাছে গ্রামের দিকে জমি চেয়ে গত ১২ বছর ধরে লড়াই করছেন তাঁরা। সংগঠনের সম্পাদক সত্যজিৎ কুণ্ডু বলেন, ‘‘সরকারের থেকে না পেয়ে আমরা নিজেরাই আমতার কুরিট মৌজায় জমি কিনে শিল্পটাকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’’ ঢালাই শিল্পের মালিকদের অভিযোগ, জমি কেনার পরে সেখানে কারখানা করতে গিয়ে বাধা হয়েছে সরকারি লাল ফিতে। নিত্যদিন নিয়ম পাল্টাচ্ছে। প্রয়োজনীয় ফাইলের সরকারি অনুমোদন পেতে কালঘাম ছুটছে ব্যবসায়ীদের।

যদিও হাওড়া ফাউন্ড্রি অ্যাসোসিয়েশনের এই সব অভিযোগ মানতে নারাজ হাওড়া জেলা প্রশাসন। প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছেন ওঁরা। সমস্ত সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছিল ওঁদের। কিন্তু সরকারি নিয়ম না মেনে ওঁরা শিল্পকারখানা তৈরি করতেচাইছেন। সমস্যা হলে ওঁরা আমাদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন। যে কোনও শিল্পের ক্ষেত্রে প্রশাসন সাহায্য
করে থাকে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন