TMC Inner Conflict

চুঁচুড়ায় তৃণমূলের নতুন কমিটি ভেঙে দিল দলই! নেপথ্যে গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের আশঙ্কা

রবিবার চুঁচুড়ার একটি প্রেক্ষাগৃহে নবনিযুক্ত তৃণমূলের শহর সভাপতি শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় তৃণমূলের নতুন কমিটি গঠন করেছিলেন। ওই কমিটিতে ছিলেন কয়েক জন পুরনো কর্মীও।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০২৫ ০২:৪১
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

চুঁচুড়ায় তৃণমূলের নবগঠিত কমিটি ঘোষণার পর মাত্র ২৪ ঘণ্টা কাটতে না-কাটতেই ওই কমিটি ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল জেলা তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব। সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে হুগলি-শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল সভাপতি অরিন্দম গুঁই ও জেলা চেয়ারপার্সন অসীমা পাত্র এ কথা ঘোষণা করেন। অরিন্দম বলেন, “গতকাল যে নতুন কমিটি চুঁচুড়ায় ঘোষণা করা হয়েছিল, তা আগামী ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত অকার্যকরী থাকবে।”

Advertisement

রবিবার চুঁচুড়ার একটি প্রেক্ষাগৃহে নবনিযুক্ত তৃণমূলের শহর সভাপতি শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় তৃণমূলের নতুন কমিটি গঠন করেছিলেন। ওই কমিটিতে ছিলেন কয়েক জন পুরনো কর্মীও। উল্লেখযোগ্য ভাবে ছিলেন সপ্তগ্রামের বিধায়ক তপন দাশগুপ্তের ভাই এবং প্রাক্তন হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার সিআইসি গোবিন্দ দাশগুপ্ত-সহ একাধিক নতুন মুখ। কিন্তু সোমবারই জেলা নেতৃত্ব জানান, সর্বোচ্চ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই আপাতত কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। অরিন্দম বলেন, “বর্তমানে এসআইআর এবং ভোট সংক্রান্ত নানা কাজে দলের কর্মীরা ব্যস্ত থাকায়, সংগঠনিক ভাবে কিছু দিনের জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

রবিবার কমিটি গঠনের পর প্রতিক্রিয়ায় নবনিযুক্ত শহর সভাপতি শ্যামাপ্রসাদ বলেছিলেন, “আমরা দলের সভাপতি সুব্রত বক্সীর নির্দেশে নতুন কমিটি গঠন করেছি। দলের দায়িত্ব নিয়ে চুঁচুড়া শহরকে সংগঠিত করার চেষ্টা করছি।” সোমবার কমিটির অকার্যককারিতা ঘোষণার পর তিনি বলেন, “আমার কাছে একটি পত্র এসেছে তাতে নতুন কমিটির উপর স্থগিতাদেশের নির্দেশিকা রয়েছে, তবে আমাদের সর্বোচ্চ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় অনেক বিচক্ষণ। তাঁদের সিদ্ধান্তই আমাদের কাছে চূড়ান্ত। আমি তাঁদের সিদ্ধান্তকেই গুরুত্ব দিচ্ছি।”

Advertisement

চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার বলেন, “নতুন কমিটি গঠনের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। কখন গঠন হল, কবে স্থগিত হল— সে সম্পর্কেও আমার কাছে কোনও তথ্য নেই।”

অন্য দিকে, নবনিযুক্ত চুঁচুড়া শহরের সহ-সভাপতি সঞ্জয় পাল বলেন, “আমাকে সহ-সভাপতি করা হয়েছে। কিন্তু নতুন কমিটি গঠন এবং স্থগিতাদেশের বিষয়ে আমাকে কিছু জানানো হয়নি। আমি সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকে নতুন কমিটির কথা জানতে পারি। বর্তমানে আমরা এসআইআরের প্রতিবাদে আগামী ৫ নভেম্বর চুঁচুড়া ঘড়িমোড়ে এক ঐতিহাসিক সমাবেশের প্রস্তুতিতেই ব্যস্ত। আমাদের বিধায়ক অসিত মজুমদার যে ভাবে সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছেন, সেটাই এখন দলের মূল অগ্রাধিকার।”

পুজোর পর হুগলির তৃণমূল সাংসদ রচনা বন্দ‍্যোপাধ‍্যায় চুঁচুড়া পুরসভার সামনে বিজয়া সম্মিলনীতে শ্যামাপ্রসাদকে পাশে নিয়ে বলেছিলেন, “ওঁর নামে ফণি আছে। কেউ পিছনে লাগলে ফণা তুলে ছোবল মারতে পারে।” প্রসঙ্গত, শ্যামাপ্রসাদের ডাক নাম ফণি।

হুগলির সাংসদ রচনার ঘনিষ্ঠ শ্যামাপ্রসাদকে শহর সভাপতি করার পর, চুঁচুড়া শহরে তৃণমূলের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে একাধিকবার। এসআইআর-সহ আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে চুঁচুড়ার তৃণমূলের ভিতর যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চলছে, তা আবার সামনে এল। অতীতে হুগলির চুঁচুড়া পুরসভার পুরপ্রধান অমিত রায়ের সঙ্গে চুঁচুড়ার বিধায়কের যে দ্বন্দ্ব ছিল এবং পরবর্তী সময় শহরে নবযুক্ত সভাপতি শ্যামাপ্রসাদের সঙ্গেও চুঁচুড়ার বিধায়কের যে দূরত্ব তা স্পষ্ট।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement