সিভিক ভলান্টিয়ারের ‘শাস্তি’! —নিজস্ব চিত্র।
রাস্তার উপরে সিভিক ভলান্টিয়ারের মারধর করে তাঁর পায়ে এবং কোমরে দড়ি বেঁধে কান ধরে ওঠবস করানো হচ্ছে! এমন একটি ভিডিয়ো (ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম) সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হতেই পদক্ষেপ করল হাওড়া জেলা গ্রামীণ পুলিশ। ইতিমধ্যে ওই ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত এখনও চলছে। পাশাপাশি এই ঘটনার প্রেক্ষিতে আমতার পেঁড়ো থানার ওসিকে ক্লোজ় করে দেওয়া হয়েছে এবং ওই সিভিকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ সুপার।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত বুধবার আমতার পেড়ো থানার বসন্তপুর বাজার এলাকায় দুপুরবেলায় এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে মারধর করা হয়। তাঁর কোমরে এবং পায়ে দড়ি বেঁধে কান ধরিয়ে ওঠবস করানো হয়েছিল। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সিভিককে ওই ‘শাস্তিদান’ করেন তৃণমূলের কয়েক জন কর্মী। কারণ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে খারাপ কথা বলেছিলেন তিনি। ভাইরাল ভিডিয়োয় (ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম) শোনা যায়, কয়েক জন ওই সিভিককে জোর করছেন তিনি যেন বিজেপির এক নেতার নাম বলেন। যেন স্বীকার করে নেন ওই ব্যক্তির উস্কানিতে তিনি ওই মন্তব্য করেছেন। ওই সিভিক সেটা করতে চাননি।
ভিডিয়োটি ভাইরাল হতেই শুরু হয় রাজনৈতিক চাপানউতর। আলোড়ন শুরু হয় জেলা পুলিশ মহলে। হাওড়া গ্রামীণের বিজেপি সহ-সভাপতি রমেশ সাধুখাঁ বলেন, ‘‘তৃণমূল কর্মীরা ওই সিভিক ভলেন্টিয়ারকে মারধর করেছেন এবং তাঁকে জোর করেছেন এক বিজেপি নেতার নাম বলে।’’ অন্য দিকে, উদয়নারায়ণপুরের তৃণমূল বিধায়ক তথা হাওড়া গ্রামীণের তৃণমূল চেয়ারম্যান সমীর পাঁজা এই ঘটনায় তাঁদের দলের নাম জড়ানোয় ক্ষুব্ধ। তিনি জানান, যাঁরা ওই কাজ করেছেন, তাঁদের সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই। পাশাপাশি তাঁর বক্তব্য, ‘‘ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে। তিনি মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কু-কথা বলছিলেন। তাই স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে চড় মারেন। এর সঙ্গে তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই।’’
ওই ঘটনা প্রসঙ্গে হাওড়া জেলা গ্রামীণ পুলিশ সুপার সুবিমল পাল জানান, মারধরের ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের শনিবার উলবেড়িয়া আদালতে হাজির করানো হয়েছে। পাশাপাশি কর্তব্যে গাফিলতির জন্য পেঁড়ো থানার ওসিকে ক্লোজ় করা হয়েছে। পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধেও বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। আপাতত তাঁকে ‘ডিউটি’ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।’’