স্কুলের শ্রেণিকক্ষে জমেছে জল। — নিজস্ব চিত্র।
টানা বর্ষণের জেরে স্কুলের শ্রেণিকক্ষে একহাঁটু জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। শিকেয় উঠেছে শিশুদের পড়াশোনা। ঘটনাস্থল হাওড়ার বাঁকড়ার মুন্সিডাঙা শেখপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়। বাধ্য হয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ ব্ল্যাক বোর্ড এবং বেঞ্চ ছাড়া পাশের একটি নির্মীয়মাণ বাড়িতে গুটিকয়েক ছাত্রছাত্রী নিয়ে ক্লাস করাচ্ছেন। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের তরফে জানানো হয়েছে, সরকারি ভাবে স্কুলের এই সমস্যা তাদের আগে জানানো হয়নি।
কয়েক বছর আগেও বাঁকড়ার মুন্সিডাঙা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছোটদের কলতানে ভরে থাকত। ক্লাসগুলিতে ছিল উপচে পড়া ভিড়। কিন্তু গত ১০ বছর ধরে বর্ষাকালে ক্লাস রুমে এককোমর জল জমে থাকায় স্কুল চালাতে সমস্যায় পড়ছেন কর্তৃপক্ষ। স্কুলের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা হুহু করে কমতে থাকে। একটা সময় যেখানে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৪০০-এর বেশি ছিল, এখন তা ঠেকেছে ৮১-তে। শিক্ষকশিক্ষিকা রয়েছেন চার জন।
গত কয়েক দিন প্রবল বর্ষণের জেরে স্কুলের মধ্যে জমে গিয়েছে একহাঁটু জল। বাধ্য হয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ পাশের একটি নির্মীয়মাণ বাড়িতে ক্লাস করাচ্ছেন। যেখানে ব্ল্যাকবোর্ড, টেবিল, চেয়ার, বেঞ্চ কিছুই নেই। ছোট ছোট শিশুরা মেঝেতে শতরঞ্চি পেতে বসছে। শিক্ষকশিক্ষিকারা দাঁড়িয়ে ক্লাস নিচ্ছেন। এরই মধ্যে এক পাশে রান্না হচ্ছে মিড ডে মিল। কোনও শৌচালয় নেই। এই পরিস্থিতিতে বহু পড়ুয়া স্কুলে আসছে না। অভিভাবকেরা জানিয়েছেন, নোংরা জল ঠেলে স্কুলে আসার ফলে তাদের ছেলেমেয়েরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। জ্বর, সর্দি ছাড়াও নানা ধরনের চর্ম রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তাই তাঁরা স্কুলে বাচ্চাদের পাঠাতে চাইছেন না।
স্কুলের প্রধানশিক্ষক পল্টু দাস জানান, এই জমা জলের সমস্যা নিয়ে তারা স্থানীয় পঞ্চায়েত, বিডিও এবং জেলা প্রাথমিক শিক্ষা দফতরে লিখিত ভাবে জানিয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও কোনও সুরাহা হয়নি। বছরে প্রায় দু’মাস ধরে এই সমস্যায় ভোগেন।
অন্য দিকে, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান কৃষ্ণ ঘোষ জানিয়েছেন, নিচু এলাকার স্কুলগুলিতে জল জমে থাকার সমস্যা রয়েছে। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষ তাঁদের এই সমস্যা নিয়ে সরকারি ভাবে কিছু জানাননি। সংবাদমাধ্যম থেকে এ ব্যাপারে জেনেছেন তিনি। কেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সমস্যার বিষয়ে জানানো হয়নি, এ ব্যাপারে স্কুলের প্রধানশিক্ষককে লিখিত ভাবে কারণ জানাতে হবে। তার পরে যাতে পাম্প চালিয়ে জল বার করে দেওয়া যায়, তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।