Supreme Court

সিঙ্গুরকাণ্ডে টাটাকে ৭৬৬ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের মামলা শুনবে হাই কোর্ট, রাজ্যের আবেদন খারিজ হল সুপ্রিম কোর্টে

সিঙ্গুরে টাটা মোটরসের কারখানা না হওয়ার জন্য টাটা গোষ্ঠীকে ক্ষতিপূরণ ৭৬৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল তিন সদস্যের একটি সালিশি আদালত।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০২৫ ২২:৪৭
Share:

(বাঁ দিকে) সিঙ্গুরের সেই পরিত্যক্ত কারখানা। সুপ্রিম কোর্ট (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।

সালিশি আদালতের বিচারকের বিরুদ্ধে রাজ্যের অভিযোগ নিয়ে মামলায় কলকাতা হাই কোর্ট যে রায় দিয়েছিল, তা বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট। রাজ্যের আবেদন খারিজ করল শীর্ষ আদালত। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট জানায়, সিঙ্গুরে কারখানা না-হওয়ার জন্য টাটা মোটরসকে ৭৬৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত বিষয়টি কলকাতা হাই কোর্ট শুনবে। আগামী ১২ অগস্ট বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়ের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি রয়েছে।

Advertisement

সিঙ্গুরে টাটা মোটরসের কারখানা না-হওয়ার জন্য টাটা গোষ্ঠীকে ৭৬৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল তিন সদস্যের একটি সালিশি (আরবিট্রাল) আদালত। ২০২৩ সালের ৩০ অক্টোবর রাজ্যকে ওই ক্ষতিপূরণ দিতে বলেছিল সালিশি আদালত।

সেই নির্দেশের প্রেক্ষিতে ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জে একটি বিবৃতি জারি করে টাটা গোষ্ঠী। সেখানে তারা জানায়, “২০২৩ সালের ৩০ অক্টোবর তিন সদস্যের সালিশি আদালতে সিঙ্গুরে অটোমোবাইল কারখানা মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। সর্বসম্মত ভাবে ট্রাইব্যুনাল, টাটা মোটরসকে ৭৬৫.৭৮ কোটি টাকা দিতে বলেছে। সেই সঙ্গে, ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে পুরো ক্ষতিপূরণ পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত ১১ শতাংশ হারে সুদ দিতে বলা হয়েছে।”

Advertisement

এই রায়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য। তাদের মামলা দায়ের করার অনুমতি দেয় হাই কোর্ট। রাজ্যের বক্তব্য ছিল, সালিশি আদালতের সভাপতি তথা অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ভিএস সিরপুরকরের সঙ্গে টাটা মোটরসের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। এমনকি, মামলার শুনানি চলাকালীন টাটা গ্রুপের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাঁকে দেখা গিয়েছে। পক্ষপাতদুষ্ট হওয়ার অভিযোগ তুলে হাই কোর্টে সালিশি আদালতের রায় খারিজ করার আবেদন জানায় রাজ্য।

গত ১৯ জুন হাই কোর্টের বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায় রাজ্যের সেই আবেদন খারিজ করে দেয়। হাই কোর্ট জানায়, সালিশি আদালতের সভাপতির বিরুদ্ধে অভিযোগের কোনও আইনি ভিত্তি নেই।

হাই কোর্টের ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। শুক্রবার শীর্ষ আদালতে ওই মামলার শুনানি ছিল। বিচারপতি পিএস নরসিংহ এবং বিচারপতি অতুল এস চন্দুরকরের বেঞ্চ হাই কোর্টের নির্দেশ বহাল রাখে। রাজ্যের দায়ের করা মামলা খারিজ করে দেয়। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট জানায়, ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত মামলার শুনানি হাই কোর্টে হবে।

২০০৬ সালের বিধানসভা ভোটে জয় পাওয়ার পরে হুগলির সিঙ্গুরে টাটার ন্যানো গাড়ি কারখানা প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। টাটাকে এ বাবদ ১০০০ একর জমি দেওয়া হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সিঙ্গুরে গাড়ি প্রকল্প গড়তে পারেনি টাটা। গাড়ি প্রকল্প যখন ব্যর্থ হয়, তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার টাটার কাছে জমি ফেরত চেয়ে পাঠায়। টাটা গোষ্ঠী জমি ফেরাতে সম্মত হয়। পাশাপাশি, জমি ফেরানো বাবদ খরচ দাবি করে রাজ্য সরকারের কাছে। জমির দামের সঙ্গেই সেই খরচের অন্তর্গত ছিল ওই জমির পিছনে টাটার বিনিয়োগ করা অর্থও। টাটার প্রস্তাবে রাজি হয়নি রাজ্য সরকার। তার পর সেই লড়াই যায় আদালতে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement