India Jutemill

India Jutemill: ইন্ডিয়া জুটমিল খুলছে ১০ জুন, বৈঠকে সিদ্ধান্ত

শ্রমিক মহল্লায় হাহাকার চলছে। সেই আঁচ লেগেছে স্থানীয় অর্থনীতিতে। এই পরিস্থিতিতে বন্ধ জুটমিলগুলি খোলার দাবি বাড়ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০২২ ০৬:৪৪
Share:

খোলার অপেক্ষায়: ইন্ডিয়া জুটমিল। নিজস্ব চিত্র

লোকসান, আর্থিক সমস্যা এবং পাটের অভাবের কারণ দেখিয়ে গত পয়লা জানুয়ারি শ্রীরামপুরের ইন্ডিয়া জুটমিলে তালা ঝুলিয়েছিলেন কর্তৃপক্ষ। সেই তালা খোলার ঘোষণা হল বুধবার, পয়লা জুন। শ্রমমন্ত্রী বেচারাম মান্নার উপস্থিতিতে কলকাতায় ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হল, আগামী ১০ জুন রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শুরু হবে। উৎপাদন শুরু হবে পয়লা জুলাইয়ের মধ্যে। পয়লা জুলাই রথযাত্রা।

Advertisement

হুগলির একাধিক জুটমিল বন্ধ। শ্রমিক মহল্লায় হাহাকার চলছে। সেই আঁচ লেগেছে স্থানীয় অর্থনীতিতে। এই পরিস্থিতিতে বন্ধ জুটমিলগুলি খোলার দাবি বাড়ছিল। এ নিয়ে গত শুক্রবার বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের ডাকে হুগলির নানা জায়গায় রাস্তা অবরোধ করেন শ্রমিকরা। তার পরেই ইন্ডিয়া জুটমিল খোলার সিদ্ধান্তে শ্রমিক-মহলে কিছুটা খুশির হাওয়া। ইন্ডিয়া জুটমিলের শ্রমিকদের অনেকেই বলছেন, মিল খোলার সিদ্ধান্তে তাঁরা খুশি। তবে, মিল যাতে ধারাবাহিক ভাবে চলে, তা নিশ্চিত করা হোক।’’

শ্রমমন্ত্রী বলেন, ‘‘ইন্ডিয়া জুটমিল খোলার সিদ্ধান্ত আজ হল। চন্দননগরের গোন্দলপাড়া এবং রিষড়ার ওয়েলিংটন জুটমিলও এই মাসের মধ্যেই খোলার চেষ্টা চলছে।’’ মন্ত্রী জানিয়ে দেন, কয়েক মাস আগে কাঁচা পাটের যে সঙ্কট ছিল, তা এখন নেই। বৈঠকে মন্ত্রী বাদেও রাজ্যের সহকারি শ্রম কমিশনার তীর্থঙ্কর সেনগুপ্ত, শ্রীরামপুরের যুগ্ম শ্রম কমিশনার ত্রিদিবেশ চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ শ্রমকর্তা ছিলেন। কর্তৃপক্ষের তরফে ছিলেন মিলের মালিক সঞ্জয় কাজোরিয়া-সহ একাধিক আধিকারিক। বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরাও যোগ দিয়েছিলেন।

Advertisement

প্রশাসন ও মিল সূত্রের খবর, কাজের পরিকাঠামো বা শ্রমিক সমস্যার কথা বিশেষ ওঠেনি। একটি জমি মিল কর্তৃপক্ষের হাতে পাওয়ার ব্যাপারে কথা হয়। কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ওই জমি হাতে না পেলে আর্থিক সমস্যা পুরোপুরি কাটবে না। এ নিয়ে বেচারামবাবু বৈঠক থেকেই ফোনে হুগলির জেলাশাসক দীপাপ্রিয়া পি’র সঙ্গে কথা বলেন। বৈঠকের পরে মিলের সিনিয়র পার্সোনেল ম্যানেজার সজল দত্ত বলেন, ‘‘পাটের সঙ্কট অনেকটা কেটেছে। ওই জমির সমস্যাও সিংহভাগ মিটেছে। বাকিটাও দ্রুত মিটবে বলে আশা করছি। মিল খোলার পরে পর্যায়ক্রমে সব শ্রমিককেই কাজে নেওয়া হবে।’’ মিলে বর্তমানে শ্রমিক সংখ্যা তিন হাজারের আশপাশে বলে তিনি জানান।

২০১৮ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে টানা ৩৭ মাস ইন্ডিয়া জুটমিল বন্ধ ছিল। বিস্তর টালবাহানার পরে গত বছরের ১২ জুলাই, রথযাত্রার দিন মিল খোলে। কিন্তু সাড়ে ৫ মাসের বেশি চলেনি। মিল যাতে হুটহাট বন্ধ না হয় এবং সব শ্রমিক যাতে কাজ পান, সেই দাবি করছেন শ্রমিকনেতারা।

এআইইউটিইউসির সর্বভারতীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য দিলীপ ভট্টাচার্য বৈঠকে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘মালিকপক্ষ যাতে ইচ্ছেমতো সাসপেনশন অব ওয়ার্ক ঘোষণা না করেন, সেটা দেখতে হবে। কাজের ক্ষেত্রে জুটমিল শ্রমিকের জীবনের অনিশ্চয়তার অবসান ঘটাতে হবে।’’ একই দাবি এআইটিইউসির হুগলি জেলা সম্পাদক প্রাণেশ বিশ্বাসের। সিআইটিইউ জেলা সম্পাদক তীর্থঙ্কর রায়ের বক্তব্য, ‘‘ইন্ডিয়া জুটমিল খোলার সিদ্ধান্তকে স্বাগত। সব শ্রমিককে কাজে নিতে হবে। বন্ধ বাকি সব জুটমিল অবিলম্বে খুলতে হবে। মর্জিমতো মিল বন্ধ করা চলবে না।’’ আইএনটিটিইউসি নেতা সন্তোষ সিংহের বক্তব্য, ‘‘পাট কেনাবেচায় কেন্দ্রের ভুল নীতির জন্য জুটমিল বন্ধ হয়েছিল। ওই নীতি প্রত্যাহারের পরেই রাজ্যের শ্রমমন্ত্রীর উদ্যোগে মিল খুলতে চলেছে। শ্রমিকদের জন্য সুখবর।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন