১০০ দিনের কাজ প্রকল্প

বর্ষায় মাটি কাটার কাজে উঠল নিষেধ

ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল রাজ্য সরকার। প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন রাজ্যের বিভিন্ন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। শেষ পর্যন্ত ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে মাটি কাটার কাজে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিল কেন্দ্র। ফলে, ওই কাজে আর কোনও বাধা রইল না।

Advertisement

নুরুল আবসার

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৮ ০১:১৮
Share:

ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল রাজ্য সরকার। প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন রাজ্যের বিভিন্ন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। শেষ পর্যন্ত ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে মাটি কাটার কাজে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিল কেন্দ্র। ফলে, ওই কাজে আর কোনও বাধা রইল না।

Advertisement

গত বছরের মতো এ বারও জুলাই-অগস্ট— বর্ষার এই দু’মাসের জন্য ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে মাটি কাটার কাজ বন্ধ করে দিয়েছিল কেন্দ্র। গত ১ জুলাই থেকে এই প্রকল্পের কাজের জন্য কম্পিউটার ‘আপ‌লোডিং’-এর যে ব্যবস্থা আছে, তাতে মাটি কাটার কাজ সংক্রান্ত ‘সাইট’ বন্ধ করে দেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন দফতর মনে করেছিল, বর্ষায় মাটি কাটার কাজ করা অর্থহীন। কারণ, মাঠঘাট জলে ডুবে থাকে। সে জন্য দেশ জুড়েই এই দু’মাসের জন্য মাটির কাজ বন্ধ রাখা হয়। এই অবস্থায় প্রকল্পের কাজ চা‌লিয়ে গেলে দুর্নীতির আশঙ্কা থাকে।

কেন্দ্রীয় এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গতবারের মতো এ বারও রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতিবাদ জানানো হয়। রাজ্য প্রশাসনের দাবি, এর পরেই ৪ জুলাই থেকে ফের মাটি কাটার কাজ সংক্রান্ত ‘সাইট’ খুলে দেওয়া হয়। এই প্রকল্পের রাজ্য কমিশনার দিব্যেন্দু সরকার বলেন, ‘‘বৃষ্টির পরিমাণ দেখেই মাটি কাটার মতো কিছু কিছু কাজের ক্ষেত্রে মরসুমি নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তবে জেলাগুলিই আবার জানিয়ে দেয়, বর্ষা এলেও সে ভাবে বৃষ্টি কোথাও হচ্ছে না। ফলে, মাটি কাটার কাজ একেবারে বন্ধ করার কোনও দরকার নেই। সেই প্রতিক্রিয়া পাওয়ার পরেই ফের সাইট খুলে দেওয়া হয়েছে। এখন আর মাটি কাটার কাজ করতে কোনও বাধা নেই।’’

Advertisement

বিভিন্ন জেলা প্রশাসনের দাবি, এ বছর এখনও বর্ষা সে ভাবে নামেইনি। ফলে, টানা কাজ বন্ধ রাখার কোনও প্রয়োজনীয়তা নেই। মাটি কাটার কাজেই সবচেয়ে বেশি জবকার্ডধারী যুক্ত থাকেন। এই কাজটি টানা বন্ধ রাখলে তাঁদের উপার্জনের সুযোগ নষ্ট হবে। বিশেষ করে পুজোর আগে তাঁরা বাড়তি উপার্জনের সুযোগ হারাবেন। মাটি কাটার কাজ বন্ধ করে দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘‘বৃষ্টি হলে আমরা তো এমনিতেই কাজ বন্ধ রেখে দিই। তার জন্য টানা দু’মাস কাজ বন্ধ রাখার কী যুক্তি?’’

১ জুলাই থেকে মাটি কাটার কাজ বন্ধ করে দেওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন বিভিন্ন পঞ্চায়েতের কর্তারা। আমতা-১ ব্লকের রসপুর পঞ্চায়েতের বিদায়ী উপপ্রধান জয়ন্ত পোল্যে বলেন, ‘‘মাটি কাটার কাজের ১২টি প্রকল্প হাতে নিয়েছিলাম। প্রায় ৩০ হাজার শ্রমদিবস তৈরি হওয়ার কথা। কিন্তু সব বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।’’

গত সোমবার আমতা-১ ব্লকে উন্নয়ন সংক্রান্ত বৈঠকে এসে জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তী জানিয়েছিলেন, মাটি কাটার কাজ যাতে ফের শুরু করা হয় তার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তিনি চিঠি লিখেছেন। শেষ পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন এই কাজের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন মহল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন