জীবনবিমা করিয়ে দেওয়া কিংবা খুব সহজে ব্যাঙ্কের পাশ বই, আধার কার্ড পাইয়ে দেওয়ার নাম করে বিভিন্ন বাড়িতে যেত বাইশ বছরের এক যুবক। কোন বাড়িতে মহিলা একা আছেন তার খোঁজ নিয়েই যুবক সেখানে হানা দিত। সুযোগ বুঝে ওই মহিলাদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে ভয় দেখিয়ে জিনিসপত্র লুঠ করে চম্পট দিত!
বালির গৃহবধূ রাখি সিংহের খুনের ঘটনার তদন্তে নেমে মূল অভিযুক্ত দীপক সিংহকে গ্রেফতারের পরে এমনই জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। পুলিশের দাবি, বালির বাদামতলার জিটি রোডের উপর আবাসনের বাসিন্দা রাখিই প্রথম শিকার নয় দীপকের। এর আগেও সে বিভিন্ন জায়গায় এ ভাবেই লুঠপাট করেছে। তবে অনেক ক্ষেত্রেই পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের হয়নি।
পুলিশ জানায়, চিৎকার জুড়ে দেওয়াতেই তাঁর গলার নলি কেটে খুন করে দিয়েছিল বলে জেরায় স্বীকার করেছে দীপক। হাওড়ার সিটি পুলিশের কমিশনার দেবেন্দ্রপ্রকাশ সিংহ বলেন, ‘‘ওই যুবককে পুলিশ হেফাজতে এনে আরও জেরা করা হবে।’’
২৭ ফেব্রুয়ারি দুপুরে রাখির ফ্ল্যাটে এসেছিল দীপক। বিকেলে ওই মহিলা রক্তাক্ত অবস্থায় আবাসনের নীচে এসে এক প্রতিবেশীকে জানান, তাঁর গলা কেটে দেওয়া হয়েছে। এর পরে তাঁকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে ও পরে কলকাতা মেডিক্যালে নিয়ে গেলে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, সাদা রঙের স্যান্ডো গেঞ্জি পরা এক যুবককে রাখির ঘর থেকে বেরিয়ে তাড়াহুড়ো করে নীচে নামতে দেখেছিলেন ওই আবাসনের এক মহিলা। ওই মহিলার পাঁচ বছরের মেয়ে পুলিশকে জানায়, যে যুবক এসেছিলেন তাকে তারা পিন্টু কাকা নামেই চেনে। পুলিশ পিন্টু কাকার খোঁজ শুরু করে। তবে সোমবার লিলুয়ার ভট্টনগর থেকে গ্রেফতার হওয়া দীপকই ওই পিন্টু কাকা কি না তা এখনই স্পষ্ট করে কিছু বলতে চাননি তদন্তকারীরা।
পুলিশ জানায়, রাখির স্বামীর বড়বাজারে যেখানে চায়ের দোকান রয়েছে তার পাশে একটি দোকানে আগে কাজ করত দীপক। সেই সূত্র ধরেই ওই মহিলার সঙ্গে পরিচয় তৈরি করেছিল দীপক। তা জানতেন না ওই রাখির স্বামী। ঘটনার দিন দুপুরে ওই যুবক রাখির ফ্ল্যাটে আসে। ছিল প্রায় সাড়ে চারটে পর্যন্ত। তখনই টাকা ও গয়না দাবি করলে দিতে রাজি হননি রাখি। পুলিশ জানায়, হাতাহাতি শুরু হলে রাখির গলা কেটে দেয় দীপক।