ভিন রাজ্যের এক তরুণীকে চাকুরি দেওয়ার নাম করে এনে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগে দুই যুবককে গ্রেফতার করল পুলিশ। তাদের সহায়তা করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে এক মহিলাকেও। অসুস্থ ওই তরুণী চন্দননগর হাসপাতালে চিকিৎধীন। অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয় শনিবার। রবিবার ধৃতদের পাঁচদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। চন্দননগর হাসপাতালের সুপার শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই তরুণীর চিকিৎসা শুরু হয়েছে। ওঁর সব রকম পরীক্ষাই করা হবে।’’ চন্দননগরের এসডিপিও অসিত সাউ বলেন, ‘‘ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে পাচারচক্রের কোনও যোগ আছে কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অসমের শিবসাগর জেলার খুড়ানকুকড়ি গ্রামের বাসিন্দা বছর পঁচিশের ওই তরুণীকে চাকরি দেওয়ার নাম করে তাঁর পরিচিত এক বন্ধু নির্মলা দাস এবং দুই যুবক সাদ্দাম হোসেন ও আবদুল হাসিম কয়েক মাস আগে কেরালায় নিয়ে যায়। সেখান থেকে ওই তরুণীকে নিয়ে যাওয়া হয় চেন্নাইয়ে। কিন্তু সেখানেও কাজের ব্যবস্থা না হওয়ায় ওই তিনজন তরুণীকে নিয়ে কলকাতায় চলে আসে। ভদ্রেশ্বরে রাস্তার কাজে নিযুক্ত এক ঠিকাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করে তারা। এরপরে ভদ্রশ্বরের বিঘাটিতে একটি ঘর ভাড়া নিয়ে তারা থাকতে শুরু করে। নির্মলাকে নিজের স্ত্রী হিসাবে সেখানে সাদ্দাম পরিচয় দেয়। নির্যাতিতা পুলিশকে জানিয়েছেন, ওই বাড়িতে আবদুল ও সাদ্দাম তাঁর উপর যৌন নির্যাতন চালাত। কিছুদিন আগে অসুস্থ হয়ে পড়ায় সাদ্দাম চন্দননগর হাসপাতালে ভর্তি হয়। সেখানে তাকে রোজই নির্মলা দেখতে যেত।
গত ১৪ অগস্ট, শুক্রবার ওই তরুণীও অসুস্থ হয়ে চন্দননগরে হাসপাতালে ভর্তি হন। পরদিন শনিবার হাসপাতালের এক নার্সকে তাঁর উপরে অত্যাচারের সমস্ত ঘটনা জানান ওই তরুণী। ওই নার্স হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সব জানালে তাঁরা পুলিশকে খবর দিলে বিকেলে পুলিশ হাসপাতালে যায়। তরুণী পুলিশকে জানান যে সাদ্দামও ওই হাসপাতালে ভর্তি। এরপর সন্ধ্যার সময় নির্মলা ও আবদুল হাসপাতালে এলে তাদের আটক করে জেরা করে পুলিশ। পরে রাতে তিনজনকেই গ্রেফতার করা হয়।
নির্যাতীতা তরুণী বলেন,‘‘চাকরি দেওয়ার নাম করে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরিয়ে আমাকে এখানে এনে একটা বাড়িতে আটকে রাখা হয়েছিল। পরে জানতে পারি নির্মলা ও সাদ্দাম আবদুল হাসিমের কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা নিয়েছে আমাকে আনার জন্য। হাসপাতালে ভর্তি হয়ে দিদিদের সব জানাই। ওরাই আমাকে বাঁচিয়েছেন।’’