রাস্তার ধারে কৌটোবোমা ফেটে হাত উড়ল মহিলার

চলতি মাসের ৯ তারিখে ব্যান্ডেলের নেতাজি পার্ক, মানসপুর বস্তিতে দুষ্কৃতীরা বোমাবাজি করে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ব্যান্ডেল শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৯ ০১:৩৬
Share:

রক্তাক্ত: হাসপাতালে জখম বাসন্তী। নিজস্ব চিত্র

জিটি রোডের ধারেই পড়েছিল কৌটোটা। নজরে পড়তে এক মহিলা সেটি খুলতেই বিস্ফোরণ। আর তাতেই হাত উড়ে গেল আনাজ বিক্রেতা ওই মহিলার। মাথায়, চোখে গুরুতর আঘাত লাগল। মঙ্গলবার সকালে ওই কৌটোবোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়ায় ব্যান্ডেলের লিচুবাগান এলাকায়। বাসন্তী মণ্ডল নামে বছর পঁয়ত্রিশের ওই মহিলা চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

Advertisement

চলতি মাসের ৯ তারিখে ব্যান্ডেলের নেতাজি পার্ক, মানসপুর বস্তিতে দুষ্কৃতীরা বোমাবাজি করে। গুলি চালায়। তার পরে এ দিনের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা। চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, ‘‘কে বা কারা ওখানে বোমা রেখেছিল, জানার চেষ্টা চলছে। দুষ্কৃতীদের ধরতে তল্লাশি শুরু হয়েছে।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাসন্তীদেবী স্থানীয় নেতাজি পার্কের বিবেকানন্দপল্লিতে বছর নয়েকের ছেলেকে নিয়ে থাকেন। স্বামী অধিকাংশ দিন বাড়িতে ফেরেন না। বাসন্তীদেবী সাইকেলে চেপে আনাজ বিক্রির পাশাপাশি পরিচারিকার কাজও করেন। এ দিন সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ তিনি আনাজ বিক্রি সেরে ফিরছিলেন। সেই সময়ে রাস্তার ধারে কৌটোটি দেখে সাইকেল থামিয়ে তা খুলতেই ওই বিপত্তি। বোমার ঘায়ে রক্তাক্ত অবস্থায় তিনি লুটিয়ে পড়েন। বিস্ফোরণের বিকট আওয়াজে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন। চুঁচুড়া থানার পুলিশ আসে। বাসন্তীদেবীকে ইমামবাড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকেরা জানান, তাঁর ডান হাতের কব্জির নিচের অংশ ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছিল। অস্ত্রোপচার করে ওই অংশ কেটে বাদ দিতে হয়। ডান চোখ এবং মাথায় বোমার স্‌প্লিন্টার ঢুকেছে।

Advertisement

হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে বাসন্তীদেবী বলেন, ‘‘ওই ধরনের কৌটোয় অনেকে টাকা রাখেন। তাই ভেবেছিলাম, কৌটোটা কারও কাছ থেকে পড়ে গিয়েছে। ওটা যে আসলে বোমা, বুঝিনি। তাতেই এত বড় সর্বনাশটা হল। ছেলেটা কার কাছে থাকবে, তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে গেলাম।’’ তাঁর দিদি জয়ন্তী সরকার বলেন, ‘‘বোন আর কাজ করতে পারবে না। পুলিশ দোষীদের ধরুক।’’

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ব্যান্ডেলে দুষ্কৃতী কার্যকলাপ বন্ধ করতে পুলিশ ব্যর্থ। তার খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘ওই রাস্তা দিয়ে ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা স্কুলে যায়। তারা খেলাচ্ছলে বোমাটা তুলে ফেললে কি হত, ভেবে শিউরে উঠছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন