যেমন হবে সেই মিনার
হাওড়ার দিকে গঙ্গার পাড়ে ‘কলকাতা আই’ প্রকল্প আদালতের নির্দেশে কার্যত বিশ বাঁও জলে। তার পরে এ বার হাওড়াতেই তৈরি হচ্ছে দেশের মধ্যে সব চেয়ে উঁচু অবজারভেটরি টাওয়ার। ৪০ তলা বাড়ির সমান উঁচু এই মিনার তৈরি হবে মধ্য হাওড়ার বেলিলিয়াস পার্কে। খরচ পড়বে আনুমানিক ৬ কোটি টাকা। একটি বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে মিনারটি তৈরি করবে হাওড়া পুরসভা।
এমনিতেই ঘিঞ্জি হাওড়া শহর নিয়ে অভিযোগ বিস্তর। পুরসভায় ক্ষমতায় আসার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যারের নির্দেশে এই ‘কুলি টাউনের’ বদনাম ঘোচাতে এবং এর সৌন্দর্যায়নে উদ্যোগী হয় তৃণমূল পরিচালিত বোর্ড। শহর জুড়ে ত্রিফলা আলো, পার্ক-উদ্যান ও রাস্তার দু’পাশে সৌন্দর্যায়ন ছাড়াও ভোল পাল্টে দেওয়া হয় অলিগলির। পাশাপাশি, কলকাতার শহিদ মিনার বা দিল্লির কুতুব মিনারের মতো একটি দর্শনীয় স্থান তৈরিরও সিদ্ধান্ত নেয় নতুন পুরবোর্ড।
মেয়র রথীন চক্রবর্তী এ ব্যাপারে বলেন, ‘‘হাওড়া শহরকে যাতে ভ্রমণার্থীদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তোলা যায়, সে জন্য হাওড়া স্টেশন থেকে একটি রিং রোড তৈরি হচ্ছে। ওই রাস্তার দু’পাশে থাকছে বেশ কিছু দ্রষ্টব্য জিনিস। তারই একটি এই অবজারভেটরি টাওয়ার।’’ মেয়র আরও জানান, হাওড়া স্টেশন থেকে শুরু হওয়া ওই রিং রোডের শুরুতেই রয়েছে রেল মিউজিয়াম। এর পরে সুসজ্জিত ফোরশোর রোড হয়ে কোনা এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে চক্রাকারে ওই রাস্তা এসে মিশবে ড্রেনেজ ক্যানাল রোডে। ওই রাস্তাটির মাঝের বুলেভার্ডও বিভিন্ন মনীষীর মূর্তি, ফোয়ারা, ফুলের বাগান ও আলো দিয়ে সাজানো হয়েছে।
কেমন হবে এই অবজারভেটরি টাওয়ার?
হাওড়া পুরসভার মেয়র পারিষদ (পার্ক ও উদ্যান) বিভাস হাজরা জানান, মিনারটি কুতুব মিনার ও কলকাতার শহিদ মিনারের থেকে উঁচু হবে। কুতুব মিনার ও শহিদ মিনারের উচ্চতা যেখানে যথাক্রমে ২৩৮ ফুট ও ১৫৭ ফুট, সেখানে ‘পঞ্চদীপ’ নামে এই পাঁচতলা মিনারটি হবে ৪০০ ফুট উঁচু। সর্বোচ্চ তল থেকে গোটা কলকাতা ও হাওড়া শহরকে দেখা যাবে। প্রতিটি তলে ওঠা-নামার জন্য থাকবে লিফ্ট। পাশাপাশি, প্রতি তলে থাকছে ফুড কোর্ট-সহ নানা বিনোদনের ব্যবস্থাও।
বিভাসবাবু বলেন, ‘‘মিনার তৈরিতে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ-সহ অন্যান্য দফতরের প্রয়োজনীয় অনুমতি পাওয়া গিয়েছে। দেড় বছরের মধ্যে কাজ শেষ হবে।’’ হাওড়া পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের একমাত্র বিনোদনমূলক পার্ক বেলিলিয়াস পার্কে যাতায়াতের সুবিধার জন্য টিকিয়াপাড়ায় ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে আধুনিক মানের একটি বাস টার্মিনাস। পুরকর্তাদের তাই আশা, ওই মিনার দেখতে ভিন্ রাজ্যের লোকজনের আসতে কোনও সমস্যা হবে না।