দুই জেলার হাসপাতালের নতুন অগ্নি-সুরক্ষা ব্যবস্থার দুই ছবি

হুগলির পাঁচ হাসপাতালের জন্য ৯ কোটি

পাশের জেলা হাওড়ার বড় সরকারি হাসপাতালগুলির আধুনিক অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা তৈরি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে দমকল থেকেই। হুগলির পাঁচ সরকারি হাসপাতালে ওই কাজ নিয়ে অবশ্য সন্তোষই প্রকাশ করলেন জেলা প্রশাসন এবং দমকল-কর্তারা।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:১২
Share:

হাসিমুখে: উত্তরপাড়া হাসপাতালে পরিদর্শনের পর। নিজস্ব চিত্র

পাশের জেলা হাওড়ার বড় সরকারি হাসপাতালগুলির আধুনিক অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা তৈরি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে দমকল থেকেই। হুগলির পাঁচ সরকারি হাসপাতালে ওই কাজ নিয়ে অবশ্য সন্তোষই প্রকাশ করলেন জেলা প্রশাসন এবং দমকল-কর্তারা।

Advertisement

রাজ্য সরকারের নির্দেশমতো হুগলির জেলাসদর চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতাল, চন্দননগর মহকুমা হাসপাতাল, শ্রীরামপুর ওয়ালশ, আরামবাগ মহকুমা হাসপাতাল এবং উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেলে আগুন মোকাবিলায় ‘ইনবিল্ট সিস্টেম’-এর কাজ শুরু হয় গত বছর ডিসেম্বরে। এর মধ্যে চন্দননগরের কাজ শেষ হয়েছে সম্প্রতি। সোমবার জেলা স্বাস্থ্য দফতর, পূর্ত দফতর এবং দমকলের পদস্থ কর্তাদের নিয়ে গঠিত একধিক দল পাঁচ হাসপাতালে গিয়ে ওই কাজ খতিয়ে দেখেন। প্রয়োজনীয় পরামর্শও দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।

আপাতত সাবেক অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করা হলেও দ্রুত ‘ইনবিল্ট সিস্টেম’-এর মাধ্যমেই আগুন মোকাবিলায় নামা হবে জানিয়েছে জেলা দমকল দফতর। দফতরের বিভাগীয় কর্তা সনৎ মণ্ডল বলেন, ‘‘বিভাগীয় অফিসারদের থেকে চূড়ান্ত রিপোর্ট পেলেই হাসপাতালগুলিতে কাজের অগ্রগতি সঠিক ভাবে বোঝা যাবে। তবে, সব জায়গাতেই কাজ হচ্ছে।’’ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তীও বলেন, ‘‘পাঁচটি হাসপাতালে আগুন মোকাবিলার ব্যবস্থা পুরোপুরি গড়ে তুলতে ইতিমধ্যেই মোট ৯ কোটি টাকা রাজ্য সরকারের কাছ থেকে পাওয়া গিয়েছে। সেই কাজ শুরু হয় গত বছরের ডিসেম্বর মাসে। হাসপাতালগুলিতে ইতিমধ্যেই সেই কাজ অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে।’’

Advertisement

রাজ্য সরকার হাসপাতালগুলিতে ‘ইনবিল্ট সিস্টেম’ চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরেই হুগলি জেলা স্বাস্থ্য দফতর ওই পাঁচ হাসপাতালে তা চালু করার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করে। সাড়া দেয় রাজ্য সরকার। এরপরই ওই পাঁচ হাসপাতালে আগুন মোকাবিলায় ঠিক কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন, তার নির্দিষ্ট রূপরেখা তৈরির কাজ শুরু হয়। সেই কাজ জেলা দমকল বিভাগ ও পূর্ত দফতরের (সিভিল এবং ইলেকট্রিক্যাল) পদস্থ কর্তাদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতেই করা হয় বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের পদস্থ কর্তারা জানিয়েছেন।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, দমকল বিভাগের নির্দেশিকা অনুয়ায়ী প্রতিটি হাসপাতালেই অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা তৈরির কাজ করছেন পূর্ত দফতরের সিভিল এবং ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের কর্মীরা। উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ওই ব্যবস্থায় ইতিমধ্যেই দু’টি পর্যায়ে মোট ৭০ লক্ষ টাকার কাজ হয়ে গিয়েছে। চন্দননগর মহকুমা হাসপাতালের ওই কাজের জন্য প্রায় দেড় কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে কাজ হয়েছে আড়াই কোটি টাকার। ওই হাসপাতালে পূর্ত দফতরের সিভিল বিভাগের ৮৫ শতাংশ কাজই শেষ হয়ে গিয়েছে বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের দাবি। শ্রীরামপুর ওয়ালশেও ৮৫ শতাংশ কাজ হয়েছে।

দমকল দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন, আগুন মোকাবিলায় বহু সময়েই জলের জোগান পেতে খুবই সমস্যা হয়। সেই সমস্যা দূর করতেই জেলার পাঁচটি হাসপাতালেই প্রাথমিক ভাবে আগুন প্রতিরোধের জন্য নিজস্ব জলাধার তৈরি করার কথা বলা হয়েছে। উত্তরপাড়া হাসপাতালের সুপার দেবাশিস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘উত্তরপাড়া হাসপাতালে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থার কাজ অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। জলাধার তৈরির কাজও শেষ।’’ একইভাবে শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে পূর্ত বিভাগের সিভিল ও ইলেকট্রিক্যাল দফতরের কাজও অন্তত ৮৫ শতাংশ হয়ে গিয়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন।

আরামবাগ হাসপাতালে কাজের গতি কিছুটা ঢিমেতালে চলছে বলে মেনে নিয়েছেন প্রশাসনের কর্তারা। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, সেখানে ৭০ শতাংশ কাজ হয়েছে। কাজে গতি আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন