অস্ত্রের পাশাপাশি উদ্ধার ক্লোরোফর্ম

দুষ্কর্মের ছক বানচাল, রিষড়ায় ধৃত ৯ ডাকাত

মাঝরাতে ধবধবে সাদা গাড়ি থামিয়ে নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা বলছিল কিছু যুবক। খবর পেয়ে পুলিশ যায়। যুবকেরা পালানোর চেষ্টা করলেও পারেনি। ধরা পড়ে যায় ন’জন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রিষড়া শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৭ ০১:৩৮
Share:

ধৃত: পুলিশ গ্রেফতার করেছে এই ন’জনকেই। নিজস্ব চিত্র

মাঝরাতে ধবধবে সাদা গাড়ি থামিয়ে নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা বলছিল কিছু যুবক। খবর পেয়ে পুলিশ যায়। যুবকেরা পালানোর চেষ্টা করলেও পারেনি। ধরা পড়ে যায় ন’জন। পুলিশের দাবি, ওই যুবকরা আদতে ডাকাত দলের । এটিএম লুঠ থেকে গেরস্থ বাড়িতে ডাকাতি— সব কিছুতেই ওস্তাদ। গাড়ি থেকে অস্ত্রশস্ত্রের পাশাপাশি ক্লোরোফর্ম এবং অ্যানাস্থেশিয়া পর্যন্ত মিলেছে। বাড়িতে ডাকাতি করতেই অনলাইনে ক্লোরোফর্ম এবং অ্যানাস্থেশিয়া কেনা হয়েছিল বলে তারা পুলিশকে জানিয়েছে।

Advertisement

এসডিপিও (শ্রীরামপুর) কামনাশিস সেন জানান, দুষ্কৃতী-দলটি ধরা পড়ায় কয়েকটি এটিএম লুঠ এবং ডাকাতির ঘটনার কিনারা করা যাবে। ধৃতেরা একাধিক দুষ্কর্মে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।

ধৃতদের নাম শুভ্র মুখোপাধ্যায়, অনুপ কুজুর ওরফে অনিল, মহম্মদ রিয়াজ, গণেশ চৌহান, সুব্রত কোলে ওরফে বাবু, শৈবাল রায় ওরফে ছোটন, মহম্মদ সাবির, গোপাল আজিয়ান এবং বিশ্বজিৎ হাজরা। বাবু এবং শুভ্রর বাড়ি রিষড়ায়। অনিল, রিয়াজ, গণেশ ও সাবির হাওড়ার দাশনগরের বাসিন্দা। ছোটন থাকে শ্রীরামপুর। গোপাল এবং বিশ্বজিতের বাড়ি উত্তরপাড়ায়। রিষড়ার দেওয়ানজি স্ট্রিটের বাসিন্দা শুভ্র, চক্রের মাথা বলে পুলিশের ধারণা। রবিবার শ্রীরামপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক ধৃতদের ৬ দিন পুলিশ হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের দাবি, শনিবার রাত সাড়ে ৩টে নাগাদ দুষ্কৃতীরা রিষড়ার পাঁচলকিতে জড়ো হয়েছি‌ল। আশপাশে কোনও দুষ্কর্মের পরিকল্পনা ছিল তাদের। ধৃতদের কাছ থেকে একটি পাইপ গান, তিন রাউন্ড গু‌লি, বিভিন্ন আকারের চারটি চপার, একটি ছুরি উদ্ধার হয়। এ ছাড়াও তাদের কাছে গ্যাস কাটার, এক বোতল ক্লোরোফর্ম, এক বোত‌ল অ্যানাস্থেশিয়া, দু’টি গ্লাভস, একটি মাস্ক, তিনটি রুমা‌ল এবং একটি পেপার স্প্রে (আত্মরক্ষার জন্য গোলমরিচের স্প্রে), লিউকোপ্লাস্ট, সেলোটেপ, দড়ি, স্ক্রু ডাইভার ছিল। ছিল দু’টি খেলনা বন্দুক। সে সবের পাশাপাশি গাড়িটিও বাজেয়াপ্ত করা হয়। গাড়িটি শুভ্রর বলে ধৃতেরা পুলিশকে জানিয়েছে।

তদন্তকীরাদের দাবি, যে কোনও পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকার জন্যই দুষ্কৃতীরা অস্ত্র এবং অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিয়েছিল। জেরায় তারা স্বীকার করেছে, হুগলির নানা জায়গায় গ্যাস কাটার দিয়ে এটিএমের ভল্ট কেটে টাকা লুঠের জন্য হানা দিত। সব ক্ষেত্রে অবশ্য টাকা হাতাতে পারেনি। মাস আটেক আগে বৈদ্যবাটির একটি এটিএম থেকে ৮ লক্ষাধিক টাকা লুঠ করে। কয়েকটি চুরির ঘটনাতেও তারা যুক্ত। আজ, সোমবার কলকাতায় একটি ফ্ল্যাটে ডাকাতির পরিকল্পনা ছিল তাদের। হুগলি পুলিশের তরফে এ ব্যাপারে লালবাজারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন