Crime

সম্পত্তি-বিবাদের জেরে তরুণীকে খুনের অভিযোগ

পুলিশ সূত্রের খবর, চকপাড়া মিলনীর বাসিন্দা ইতির সঙ্গে ১৫ বছর আগে বিয়ে হয়েছিল বেলগাছিয়া লিচুবাগানের বাসিন্দা শৈলেনের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:৪১
Share:

ইতি দে

এক গৃহবধূকে খুনের অভিযোগ ঘিরে সোমবার উত্তাল হয়ে উঠল লিলুয়ার চকপাড়া মিলনী এলাকা। মৃতার বাড়ির লোকের অভিযোগ, শ্বশুরের দেওয়া সম্পত্তি স্বামী ও ভাশুরের নামে লিখে না দেওয়ায় ইতি দে (৩২) নামে ওই গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে খুন করে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন। তার পরে হাওড়া জেলা হাসপাতালে দেহ রেখে পালিয়ে যায়। পরে ইতির দাদা সঞ্জীব মজুমদারের অভিযোগের ভিত্তিতে স্বামী শৈলেন দে এবং ভাশুর শিবু দে-কে গ্রেফতার করে পুলিশ। অভিযুক্ত আরও দু’জনের খোঁজে তল্লাশি চলছে।

Advertisement

যদিও ওই মহিলার শ্বশুরবাড়ির পাড়ার দাবি, এটি আত্মহত্যা। সেটাকে খুন বলে দেখানো হচ্ছে। আর সেই কারণেই ইতির একমাত্র ছেলে, বছর বারোর দীপকুমার দে মায়ের মুখাগ্নি করতে রাজি হয়নি। পুলিশের অবশ্য পাল্টা অভিযোগ, এলাকার লোকজনই ওই বালককে আটকে রাখায় তরুণীর মৃতদেহ দীর্ঘক্ষণ সৎকার হয়নি।

পুলিশ সূত্রের খবর, চকপাড়া মিলনীর বাসিন্দা ইতির সঙ্গে ১৫ বছর আগে বিয়ে হয়েছিল বেলগাছিয়া লিচুবাগানের বাসিন্দা শৈলেনের। বছরখানেক আগে ওই তরুণীর শ্বশুর নারায়ণ দে তাঁর দুই ছেলে ও পাঁচ মেয়েকে সম্পত্তি ভাগ করে দেন। অভিযোগ, সম্পত্তি নিয়েই ইতির সঙ্গে গোলমাল বাধে শ্বশুরবাড়ির।

Advertisement

মৃতার দাদা সঞ্জীব বলেন, ‘‘এক সময়ে বোন ওর শাশুড়ির খুব সেবা করেছিল বলে শ্বশুরমশাই বোনের নামে বসতবাড়ি সমেত অনেকটা জমি আর দোকানঘর লিখে দিয়েছিলেন। এটাই হল বোনের উপরে অত্যাচারের মূল কারণ। এ কারণেই বোনকে খুন করে আমাদের না জানিয়েই দেহের ময়না-তদন্ত পর্যন্ত করে ফেলা হয়।’’

সঞ্জীব জানান, রবিবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ তাঁরা খবর পান ইতি অসুস্থ হয়ে পড়েছে। কিছু ক্ষণের মধ্যেই লিচুবাগানে তরুণীর শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছে যান তাঁরা। গিয়ে দেখা যায়, বাড়ি তালাবন্ধ। প্রায় এক ঘণ্টা পরে সঞ্জীবেরা জানতে পারেন, ইতিকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কিন্তু সেখানে গিয়েও বোনের দেখা পাননি দাদা। দুপুর আড়াইটে নাগাদ জানা যায়, তরুণীর দেহ আছে পুলিশ মর্গে। এর পরে মর্গে গিয়ে সঞ্জীবেরা শোনেন, দেহের ময়না-তদন্ত হয়ে গিয়েছে।

বাড়ির লোকের অভিযোগ, খুনের ঘটনা আড়াল করতেই তাঁদের না জানিয়ে ইতির দেহের ময়না-তদন্ত করা হয়েছে এবং খুনের ঘটনা দেখে ফেলায় ছেলেকেও মায়ের মুখাগ্নি করতে আটকানো হয়েছিল। ইতির ছেলে দীপ অবশ্য এই ঘটনায় কাকা-পিসিদের পাশেই দাঁড়িয়েছে। সে বলে, ‘‘মামারা বলেছিল আমাকে একা মুখাগ্নি করতে। কিন্তু আমি বলেছি পিসি, কাকারা ছাড়া যাব না। কিন্তু মামারা ওদের যেতে দেয়নি।’’ ইতির স্বামী শৈলেনের পাড়ার এক বাসিন্দা পায়েল কর্মকার বলেন, ‘‘ইতি আত্মহত্যা করেছে। ওর ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। পাড়ার ছেলেরাই দরজা ভেঙে ঢোকে।’’

ময়না-তদন্তের পরে সোমবার ওই গৃহবধূর দেহ চকপাড়া এলাকায় নিয়ে গেলে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। মৃতার শ্বশুরবাড়ি ও নিজের বাড়ির লোকজন পরস্পরের উপরে চড়াও হন। হাতাহাতি বেধে যায় দু’পক্ষে। বিশাল পুলিশবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি সামলায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন