ভিন্ জেলায় আত্মীয়ের বাড়িতে এনে বছর পনেরোর এক বালিকার এমন ভাবে বিয়ের বিয়ের আয়োজন করা হয়েছিল, যাতে কাকপক্ষী টের না-পায়।
মণ্ডপ বাঁধা হয়নি। পাত্রীর মা-বাবাও আসেননি। বাইরে থেকে দেখে বিয়েবাড়ি বলে বোঝার উপায় কার্যত ছিল না। কিন্তু শেষরক্ষা হল না।
বুধবার রাতে খানাকুল-১ ব্লকের ঠাকুরানিচকে ওই আত্মীয়ের বাড়িতে হানা দিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরের মুর্শিদনগরের ওই বালিকার বিয়ে রুখল প্রশাসন। এ দিনই খানাকুলেরই ময়াল গ্রামের বছর আঠাশের এক যুবকের সঙ্গে মেয়েটির বিয়ে হওয়ার কথা ছিল।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মেয়েটি মুর্শিদনগরের একটি স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী। সম্প্রতি তার বিয়ে ঠিক করেন বাড়ির লোকজন। স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি জেনে হস্তক্ষেপ করে। এর পরেই চুপিসারে মেয়েকে ঠাকুরানিচকের শঙ্করপুর গ্রামে মাসির বাড়িতে পাঠিয়ে দেন বাড়ির লোকজন। মেয়েটির বিয়ের কথা প্রথম জানতে পারে হুগলি চাইল্ড লাইন। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি খানাকুলের বিডিও অমর বিশ্বাসকে জানান। খানাকুল থানাকেও অবহিত করা হয়। কালক্ষেপ না করে বিডিও পুলিশকে সঙ্গে নিয়েই ঠাকুরানিচকে ওই বাড়িতে যান।
প্রশাসনের আধিকারিকরা জানান, কারও যাতে সন্দেহ না হয়, তার জন্য সব রকম ব্যবস্থা হয়েছিল। বিডিও জানান, মেয়ের বাবা-মায়ের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।
নাবালিকার বিয়ে দেওয়া যে আইনত অপরাধ, সে ব্যাপারে মেয়ের মেশোমশাইকে বোঝানো হয়। আঠেরো বছর না হলে মেয়েটির বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা আর করা হবে না বলে মেশোমশাই প্রশাসনের কাছে মুচলেকা দেন। এর পরে ময়াল গ্রামে ছেলেটির বাড়িতেও যান বিডিও এবং পুলিশ অফিসাররা। যুবকটি তখন বিয়ে করতে বেরোনোর তোড়জোড় করছিলেন। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে তাঁকে অবশ্য রণে ভঙ্গ দিতে হয়।