ফের ডেঙ্গির থাবা হাওড়ায়

গত বছর হাওড়ায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে চার জন মারা গিয়েছিলেন। গত বছরই ঠিক হয় বাড়ি বাড়ি জল সংগ্রহ করে তাতে মশার লার্ভা আছে কিনা, পরীক্ষা করে দেখা হবে। ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এ বছরেও একই কাজ করছে স্বাস্থ্য দফতর।

Advertisement

নুরুল আবসার

শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৭ ০১:২২
Share:

বর্ষার মরসুমে এ বার ফের ডেঙ্গি হানা দিল হাওড়ায়।

Advertisement

এখনও এই রোগে মৃত্যুর খবর মেলেনি। তবে, জেলা স্বাস্থ্য দফতরই মানছে, গত বছর এই সময়ের (মে থেকে জুন) থেকে এ বার হাওড়ায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা অন্তত ১০ শতাংশ বেশি। ফলে, গত বারের পরিস্থিতি থেকে জেলা স্বাস্থ্য দফতর আদৌ কোনও শিক্ষা নিয়েছে কিনা, সে প্রশ্ন ইতিমধ্যেই উঠে গিয়েছে।

স্বাস্থ্য দফতর গত ১৫ দিনে দু’বার জেলা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর এবং হাওড়া ও উলুবেড়িয়া পুরসভাকে চিঠি দিয়ে জমা জল দূর করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভবানী দাস বলেন, ‘‘গ্রাম-শহর সর্বত্রই পাকা বাড়ির সংখ্যা বাড়ছে। ছাদের কোণে বা বাড়ির বিভিন্ন খাঁজে জল জমে থাকছে। তাতেই জন্মাচ্ছে ডেঙ্গির মশার লার্ভা।’’

Advertisement

ডেঙ্গি সাধারণত শহরের রোগ বলে চিহ্নিত। কিন্তু এ বার স্বাস্থ্য দফতরের সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে ছবিটা অন্য। এ বার গ্রামেও ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। সেই কারণেই জমা জল পরিষ্কার করতে হাওড়া এবং উলুবেড়িয়া পুরসভার সঙ্গে পঞ্চায়েতগুলিকেও কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর।

গত বছর হাওড়ায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে চার জন মারা গিয়েছিলেন। গত বছরই ঠিক হয় বাড়ি বাড়ি জল সংগ্রহ করে তাতে মশার লার্ভা আছে কিনা, পরীক্ষা করে দেখা হবে। ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এ বছরেও একই কাজ করছে স্বাস্থ্য দফতর। গতবারে মাসে একবার করে অভিযান চালিয়ে জল সংগ্রহ করা হতো। এ বছর মাসে দু’বার করে অভিযান চালানো হচ্ছে। জল পরীক্ষা করে বহু ক্ষেত্রে লার্ভার সন্ধান পাওয়া গিয়েছে বলেও জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর।

ওই দফতরের এক কর্তা জানান, জল পরীক্ষার রিপোর্টের ভিত্তিতে বাড়ি বাড়ি প্রচার জোরদার করা হয়েছে। বাড়িতে যাতে জল জমতে না-পারে তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বাসিন্দাদের অনুরোধ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের পাইপ লাইনের জল সংগ্রহ করেও
পরীক্ষা হচ্ছে।

তবে, জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, ডেঙ্গি নিয়ে নার্সিংহোম এবং প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরিগুলি বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করে। সে জন্য ওই কেন্দ্রগুলির মালিকদের নিয়ে আগামী ১৭ জুলাই বৈঠক করবেন দফতরের কর্তারা। সেখানে উপস্থিত থাকার কথা জেলাশাসকেরও।

বৈঠকে নার্সিংহোম এবং প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরিগুলিকে এ ব্যাপারে সতর্ক করা হবে। কারণ, কারও রক্তের ‘এলাইজা’ পরীক্ষার রিপোর্ট যদি ‘পজিটিভ’ হয, তা হলেই বলা যায়, সেই রোগীর ডেঙ্গি হয়েছে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, ‘ছায়া’ লক্ষণ দেখেই ওই কেন্দ্রগুলি রোগীকে ডেঙ্গি হয়েছে বলে জানিয়ে দিচ্ছে। এই প্রবণতাই বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হবে বৈঠকে।

আক্রান্ত এলাকা


উলুবে়ড়িয়া পুরসভা: ৩০টি ওয়ার্ড থেকেই আক্রান্তের খবর মিলছে।


হাওড়া পুরসভা: ৬৬টি ওয়ার্ডেই কম বেশি আক্রান্তের খবর রয়েছে।


গ্রামীণ হাওড়া: ডোমজুড়, সাঁকরাইল, বাগনান।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement