ডালহৌসি চটকল

চার শ্রমিককে কাজে ফেরানোর দাবি, অবরোধ

চার শ্রমিককে কর্তৃপক্ষ কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়ায় দিন পাঁচেক ধরে অচলাবস্থা চলছিল ভদ্রেশ্বরের ডালহৌসি চটকলে। তাঁদের কাজে ফেরানোর দাবিতে সোমবার চটকলের প্রায় ২০০ শ্রমিক রাস্তায় নামলেন। চটকলের গেট থেকে তাঁরা বৈদ্যবাটি রেলগেট পর্যন্ত মিছিল করেন। তার পরে সেখানেই অবরোধ করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বৈদ্যবাটি শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৬ ০৫:৪৭
Share:

বৈদ্যবাটি স্টেশনে বিক্ষোভ। ছবি: তাপস ঘোষ।

চার শ্রমিককে কর্তৃপক্ষ কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়ায় দিন পাঁচেক ধরে অচলাবস্থা চলছিল ভদ্রেশ্বরের ডালহৌসি চটকলে। তাঁদের কাজে ফেরানোর দাবিতে সোমবার চটকলের প্রায় ২০০ শ্রমিক রাস্তায় নামলেন। চটকলের গেট থেকে তাঁরা বৈদ্যবাটি রেলগেট পর্যন্ত মিছিল করেন। তার পরে সেখানেই অবরোধ করেন। বেলা ১১টা থেকে রেলগেটে প্রায় দেড় ঘণ্টার এই অবরোধে একই সঙ্গে বন্ধ হয়ে যায় ট্রেন ও অন্য যান চলাচল। দুর্ভোগে পড়েন বহু যাত্রী। ওই রেলগেটের অদূরে দাঁড়িয়ে যায় আপ রাজগির প্যাসেঞ্জার। বহু যাত্রীকে রেল লাইন ধরে হাটতে দেখা যায়। জেলা প্রশাসন আগামী ২২ জুন চটকল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের নিয়ে বৈঠকের আশ্বাস দিলে বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ অবরোধ ওঠে।

Advertisement

ওই চটকলে প্রায় সাড়ে চার হাজার শ্রমিক কাজ করেন। তবে, আন্দোলনে নেমেছেন মূলত বিজেপি সমর্থিত শ্রমিক সংগঠনের সদস্যেরাই। এ দিনের মিছিল ও অবরোধে নেতৃত্ব দেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার এবং সহ-সভানেত্রী রাজকুমারী কেশরী। ওই বিজেপি নেত্রী বলেন, ‘‘কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলবেন, তা হতে দেব না। একটা সামান্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে চটকল কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের উপর তুঘলকি শাসন চালাচ্ছেন। সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।’’

চটকলের ওয়ার্কার প্রেসিডেন্ট রঞ্জন মোহান্তির দাবি, চার শ্রমিকের জন্য অন্যেরা যে ভাবে কাজ বন্ধ করে আন্দোলনে নেমেছেন তাতে উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে।। তাঁরা কাজে যোগ না দেওয়া পর্যন্ত আলোচনা করা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘‘আন্দোলনকারীরা কাজে যোগ দিলে তার পরে চার শ্রমিককে কাজে ফেরানো নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে।’’

Advertisement

দিন পাঁচেক আগে চটকলের ‘স্পিনিং’ বিভাগের চার শ্রমিক নানা দাবি ও সমস্যা নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করতে যান। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তাঁদের কথা না শুনে ফিরিয়ে দেন এবং কাজের পরিবেশ নষ্টের কথা বলে তাঁদের বসিয়ে দেন বলে অভিযোগ। এর পরেই বহু শ্রমিক প্রতিবাদ করেন। ব্যাহত হয় কাজ। চার শ্রমিককে কাজে ফেরানো না হলে তাঁরা কাজে যোগ দেবেন না বলে হুঁশিয়ারিও দেন। তার পরে এ দিনের আন্দোলন। অশান্তি এড়াতে বৈদ্যবাটি রেলগেট এবং সংলগ্ন এলাকায় জেলা পুলিশ এবং রেল পুলিশের বিশাল বাহিনী মোতায়েন করা হয়।

ওই চটকলের শ্রমিক সন্তোষ পাসোয়ান বলেন, ‘‘কর্তৃপক্ষ বিনা কারণে চার জনকে কাজ থেকে বসিয়ে দিয়েছেন। ওঁরা কাজে কোনও ক্ষতি না করে নিজেদের কিছু দাবি নিয়েই কর্তৃপক্ষের কাছে গিয়েছিলেন। ফলে, অন্য শ্রমিকেরা ক্ষিপ্ত হয়েই কাজ বন্ধ করে আন্দোলনের পথে নেমেছেন।’’

চটকলের আইএনটিটিইউসি-এর সাধারণ সম্পাদক অমর প্রামাণিকের দাবি, ‘‘চাঁপদানি এলাকায় চটকলগুলিতে নোংরা রাজনীতি চলছে। প্রশাসনের উচিত অবিলম্বে কড়া হাতে দমন করা।’’ সিটুর সাধারণ সম্পাদক আকবর আলি বলেন, ‘‘কর্তৃপক্ষ সকলের সঙ্গে বৈঠক করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করলেই অচলাবস্থা কেটে যায়। আমাদের সংগঠনের তরফে সব শ্রমিককে কাজে নিয়ে চটকল চালুর দাবি জানানো হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন