Scams

শিশুদের পুষ্টি নিয়ে উদ্বিগ্ন কর্তারা, নিম্নমানের খাবার দেওয়ার নালিশ

খানাকুল ১ ব্লকের তৃণমূল পরিচালিত ঘোষপুর পঞ্চায়েতের প্রধান হায়দার আলির অভিযোগ, ‘‘নিম্নমানের চাল-ডাল দেওয়া হচ্ছে। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের উপভোক্তারা পঞ্চায়েতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন।

Advertisement

পীষূষ নন্দী

খানাকুল শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০২০ ০০:৪২
Share:

এইরকম ডাল দেওয়ার অভিযোগ।

অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে খারাপ মানের চাল-ডাল দেওয়ার অভিযোগ নতুন কিছু নয়। এ নিয়ে মাঝেমধ্যেই সরব হন উপভোক্তারা। এ বার শিশু ও প্রসূতিদের নিম্নমানের খাদ্য সামগ্রী দেওয়ার অভিযোগ জানাতে বিডিও-র দ্বারস্থ হলেন খোদ পঞ্চায়েত প্রধান। ঘটনাটি খানাকুলের।

Advertisement

খানাকুল ১ ব্লকের তৃণমূল পরিচালিত ঘোষপুর পঞ্চায়েতের প্রধান হায়দার আলির অভিযোগ, ‘‘নিম্নমানের চাল-ডাল দেওয়া হচ্ছে। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের উপভোক্তারা পঞ্চায়েতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। এমনিতেই লকডাউনে শিশুদের জন্য পুষ্টিকর খাবার দেওয়া বন্ধ রয়েছে। যে খাদ্য সামগ্রী দেওয়া হচ্ছে, তা খারাপ হওয়ায় মানুষকে শান্ত করা যাচ্ছে না। বিডিও-কে বিষয়টি জানিয়ে বিহিত করতে বলেছি।”

করোনা-আবহে গত ছ’মাস ধরে বন্ধ রয়েছে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলি। ফলে, মিলছে না রান্না করা পুষ্টিকর খাবার, ডিম, কলা ও লাড্ডু। দেওয়া হচ্ছে মাথাপিছু ২ কেজি চাল এবং ৩০০ গ্রাম মুসুর ডাল। অভিযোগ, অনেক জায়গায় খারাপ খাদ্য সামগ্রী দেওয়া হচ্ছে উপভোক্তাদের। বিডিও (খানাকুল ১) দেবাশিস মণ্ডল বলেন, “প্রধানের অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি সিডিপিও-কে (ব্লক শিশু বিকাশ প্রকল্প আধিকারিক) দেখতে বলা হয়েছে।” সিডিপিও মহাদেব মণ্ডলের বক্তব্য, “এই রকম হওয়ার কথা নয়। সমস্ত কর্মীদের বলা আছে, খারাপ সামগ্রী এলে তা দফতরকে জানাতে হবে। উপভোক্তাদের সেই সামগ্রী দেওয়া যাবে না। পুরো বিষয়টা তদন্ত করছি।”

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে খবর, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে দেওয়া খাদ্যসামগ্রীর গুণমান নিয়ে অনেক জায়গাতেই প্রশ্ন উঠেছে। জেলার ১৮টি ব্লকের আধিকারিকেরা এ নিয়ে উদ্বিগ্ন। কয়েকদিন আগে আরামবাগের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের একটি কেন্দ্রে খারাপ চাল-ডাল দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। সেখানেও সিডিপিও-কে হস্তক্ষেপ করতে হয়। শিশু বিকাশ প্রকল্পের আধিকারিকদের আশঙ্কা, দীর্ঘ দিন ধরে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলি বন্ধ থাকায়, নতুন করে কোনও শিশু অপুষ্টির শিকার হল কিনা, তা পরীক্ষা করে দেখার সুযোগ থাকছে না। অপুষ্ট শিশুদের চিহ্নিত করতে ওজন এবং বিভিন্ন অঙ্গের মাপ নেওয়া বন্ধ রয়েছে। তা ছাড়া অপুষ্ট বলে চিহ্নিত শিশুদের অবস্থা এখন কেমন, তা-ও খোঁজ নেওয়ার সুযোগ নেই।

জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে নিম্নমানের খাবার দেওয়ার অভিযোগ তিনি পাননি। তবে অপুষ্ট শিশুদের চিহ্নিতকরণে সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন ওই আধিকারিক। তিনি বলেন, “বিষয়টি রাজ্য প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।” জেলা নারী ও শিশু উন্নয়ন ও সমাজকল্যাণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত মার্চ পর্যন্ত জেলায় চরম অপুষ্ট শিশুর সংখ্যা ছিল ১৪০ জন। ‘মাঝারি অপুষ্ট’ শিশুর সংখ্যা প্রায় ১২ হাজার। জেলার ১৮টি ব্লকের ২০৭টি পঞ্চায়েতে মোট ৬৫৭৩টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র রয়েছে। শিশু ও প্রসূতি মা মিলিয়ে উপভোক্তার সংখ্যা প্রায় ৪ লক্ষ। তাঁদের মধ্যে শিশুর সংখ্যা ৩ লক্ষের কিছু বেশি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন