চন্দননগরের আলোয় সাজছে বিগ-বি’র বাড়ি

এ বার দীপাবলিতে ‘প্রতীক্ষা’, ‘জলসা’ এবং ‘জনক’-এর গায়ে উঠছে চন্দননগরের আলোর সাজ! বাড়ির মালিকের যে তেমনই ইচ্ছে!

Advertisement

তাপস ঘোষ

চন্দননগর শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৬ ০০:৪৪
Share:

দীপাবলি উপলক্ষে আলোর কাজ চলছে অমিতাভর বাড়ি জলসায়।—নিজস্ব চিত্র।

এ বার দীপাবলিতে ‘প্রতীক্ষা’, ‘জলসা’ এবং ‘জনক’-এর গায়ে উঠছে চন্দননগরের আলোর সাজ!

Advertisement

বাড়ির মালিকের যে তেমনই ইচ্ছে!

এলইডি আলোয় নানা মাঙ্গলিক চিহ্ন ফুটে উঠবে তিন বাড়ির নানা দিকে লাগানো ১২০টি বোর্ডে। থাকবে ১২টি আলোর গেট, ৮টি আলোর গাছ!

Advertisement

বাড়ির মালিকের ইচ্ছে পূরণ করতে সোমবারই মুম্বই উড়ে গিয়েছেন চন্দননগরের আলোক-শিল্পী বাবু পাল। দু’টি ট্রাকে আলোর সরঞ্জাম নিয়ে এর আগে, গত ১৭ অক্টোবর বাবুর ১১ জন কারিগর মুম্বই পৌঁছে যান। এখন ওই তিন বাড়িতে আলো লাগানোর কাজ চলছে।

মুম্বইয়ের জুহুর পাশাপাশি এই তিন বাড়ি কার, তা সিনেমা-ভক্তদের অনেকেরই জানা। শাহেনশাহের পৈতৃক বাড়ি ‘প্রতীক্ষা’। তিনি নিজে থাকেন ‘জলসা’য়। আর অতিথিদের থাকা এবং নিজের অফিস সংক্রান্ত কাজকর্ম শাহেনশাহ দেখভাল করেন ‘জনক’ থেকে। ঋভু দাশগুপ্তের ‘তিন’ ছবির শুটিং করতে সম্প্রতি চন্দননগর এসেছিলেন অমিতাভ বচ্চন। শহরের ইতিকথা জানতে গিয়ে এখানকার আলোর নামডাক অমিতাভের কানে পৌঁছয়। তার পরেই নিজের তিন বাড়িকে দীপাবলিতে চন্দননগরের আলোয় সাজানোর পরিকল্পনা মাথায় আসে তাঁর। ঋভুর মাধ্যমে যোগাযোগ করেন বাবুর সঙ্গে।

এ সব গত অগস্টের কথা। বলতে গিয়ে কেঁপে উঠছিলেন বাবু। বিগ-বি বলে কথা! এত দিন কলকাতার বড় বড় দুর্গা মণ্ডপ, নিজের শহরে জগদ্ধাত্রী পুজো, রাজ্য সরকারের স্বাক্ষরতা অভিযান-সহ বিভিন্ন প্রকল্প আলোয় তুলে ধরেছেন। এ বার পুজোয় রেড রোডকে আলোয় সাজিয়েছেন। তা বলে একেবারে বিগ-বি-র বাড়ি সাজানো! তা-ও একটা নয়, তিন-তিনটে!

ঋভু এখন মুম্বইতেই থাকেন। তিনিই বিগ-বি-র ইচ্ছের কথা বাবুকে জানান। বাবুর কথায়, ‘‘অমিতাভের বাড়ি আলোয় সাজাতে হবে শুনে প্রথমে বেশ ঘাবড়ে যাই। গত ২২ অগস্ট মুম্বই যাই। প্রথম দিন ঠাঁই হয়েছিল জনকে। উত্তেজনায় রাতে ঘুমোতে পারিনি। পরের দিন বিকেলে জলসায় ডাক পড়ল।’’

তার পরে?

বরাত পাওয়ার কথা বলতে গিয়ে যেন ঘোরের মধ্যে চন্দননগরের চাঁপাতলার এই আলোক-শিল্পী। তিনি বলেন, ‘‘ঋভুর সঙ্গেই গিয়েছিলাম। আমরা ড্রইংরুমে বসি। কিছুক্ষণের মধ্যেই চেরি রঙের হাউস-কোট পরে দোতলা থেকে নেমে এলেন আমার ছেলেবেলার স্বপ্নের নায়ক। হাতজোড় করে নমস্কার করে বাংলাতেই বললেন, ‘কেমন আছেন’। আমি থাকতে পারিনি। উঠে দাঁড়িয়ে পড়ি। তার পরে হিন্দিতে কথা এগোল।’’

অমিতাভের ইচ্ছে মতো বাবু প্রথমে বেশ কিছু দেবদেবীর নকশা নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু পরে অমিতাভ স্ত্রী জয়া এবং অভিষেক-ঐশ্বর্যর সঙ্গে আলোচনা করে নকশা বদলে মাঙ্গলিক চিহ্নের (স্বস্তিকা, ঘটের উপরে ডাব, কলাগাছ ইত্যাদি) আলো লাগানোর ইচ্ছে প্রকাশ করেন বলে বাবু জানান। বিগ-বি-র কাছে সেই নকশাও পাঠানো হয়। বিগ-বি সম্মতি দেন। বাবুর কারখানায় শুরু হয়ে যায় কাজ।

আগামী ২৭ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ওই আলো ঝলমল করবে অমিতাভের বাড়িতে। বাবু বলেন, ‘‘ওঁর মতো সেলেব্রিটির বাড়ি আলোয় সাজানোটা একটা স্বপ্নের মতো। ভয় কাটিয়ে মনের জোরে কাজটা করে ফেলেছি। এ বার চন্দননগরের আলোর খ্যাতি আরও দূর ছড়াবে।’’

বাবুর কারিগররা বলছেন, চার তারকার (অমিতাভ, জয়া, অভিষেক, ঐশ্বর্য) আলোয় ওই তিন বাড়ি সব সময়েই ঝলমল করে। এ বার তার সঙ্গে চন্দননগরের আলোও যুক্ত হবে। বিরাট সৌভাগ্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন