আরামবাগে আজ বন্‌ধের ডাক বিজেপির

লকাই খুনে ধৃত আর এক তৃণমূল কর্মী

রবিবার সকালে ১২ নন্বর ওয়ার্ডের কালীপুর মোড়ে একটি চায়ের দোকানের সামনে লকাইকে পিটিয়ে-কুপিয়ে খুন করা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আরামবাগ শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৯ ০০:২৬
Share:

নিহতের স্ত্রীকে সান্ত্বনা মাফুজা। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ।

বিজেপি কর্মী আমির আলি খান ওরফে লকাই খুনের ঘটনায় আরও এক তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতার করল পুলিশ।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার রাতে শেখ ইসমাইল ওরফে মান্টে নামে ওই অভিযুক্ত বাঁকুড়ার জয়পুরের বান্না গ্রামে আত্মীয় বাড়িতে লুকিয়ে ছিল। সেখান থেকেই তাকে ধরা হয়। তার বাড়ি আরামবাগের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কালীপুরে। ধৃতকে মঙ্গলবার আরামবাগ আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাকে তিন দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। এই নিয়ে ওই খুনের ঘটনায় পাঁচ তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। রবিবার খুনের দিনই চার জনকে ধরা হয়। অভিযুক্তের সংখ্যা ১১। খুনের প্রতিবাদে আজ, বুধবার আরামবাগ বিধানসভা এলাকায় ১২ ঘণ্টার বন্‌ধ ডেকেছে বিজেপি।

অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশ তৎপর হলেও আরামবাগে বিক্ষিপ্ত অশান্তি অব্যাহত। শহরের নানা জায়গায় তৃণমূলের পতাকা-ফেস্টুন খুলে দেওয়ার অভিযোগ উঠছে বিজেপির বিরুদ্ধে। সোমবার রাতে ১২ নন্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর কৃষ্ণ বারিকের মোটরবাইক বাইরে নিয়ে গিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে পদ্ম-শিবিরের বিরুদ্ধে। খুনের ঘটনার পর থেকেই কৃষ্ণবাবু-সহ বহু তৃণমূল কর্মী-সমর্থক ঘরছাড়া হয়ে রয়েছেন।

Advertisement

রবিবার সকালে ১২ নন্বর ওয়ার্ডের কালীপুর মোড়ে একটি চায়ের দোকানের সামনে লকাইকে পিটিয়ে-কুপিয়ে খুন করা হয়। অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তার পরেই তেতে ওঠে ওই ওয়ার্ড এবং আশপাশের এলাকা। গত দু’দিনে তৃণমূলের দু’টি কার্যালয়ে ভাঙচুর এবং একটিতে আগুন লাগানো হয়। এর মধ্যে ২ নম্বর ওয়ার্ডের মনসাতলার কার্যালয়টিতে ভাঙচুরের অভিযোগে সোমবার রাতে চার বিজেপি কর্মীকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, ধৃত পরিতোষ পাত্র, অনুপ চোংদার, দেবু সিংহরায় এবং নীলমাধব দে মনসাতলারই বাসিন্দা।

নিহত লকাইয়ের পরিবারকে সমবেদনা জানাতে বিজেপি নেতৃত্বের আনাগোনা চলছেই। মঙ্গলবার বিকেলে ওই পরিবারের লোকজনের সঙ্গে দেখা করতে আসেন বিজেপির রাজ্য সংখ্যালঘু মোর্চার সভাপতি আলি হোসেন মণ্ডল এবং নেত্রী মাফুজা খাতুন। দলের তরফে তাঁরা পরিবারটিকে আইনি এবং আর্থিক সহায়তার আশ্বাস দেন। দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ এবং রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের নির্দেশেই তাঁরা এসেছেন জানিয়ে আলি হোসেন দুষ্কৃতীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘মহালয়া থেকে এ পর্যন্ত আমাদের ১১ জনকে হত্যা করেছে শাসকদল।’’ মাফুজা বলেন, “শাসকদল পুরোপুরি খুনের রাজত্ব কায়েম করেছে। আইনশৃঙ্খলা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে।” রাতে লকাইয়ের বাড়িতে আসেন বিজেপির সহ-সভানেত্রী ভারতী ঘোষ। পরে আরামবাগ থানাতেও যান।

দলীয় কর্মীরা গ্রেফতার হলেও প্রথম থেকেই এই খুনের ঘটনায় রাজনীতির যোগ নেই বলে দাবি করে আসছে তৃণমূল। দলের জেলা সভাপতি দিলীপ যাদবের দাবি, পাড়াগত ঝামেলার জেরে ওই খুন। বিজেপির ডাকা বন্্ধের িবরোধীতাতেও তারা নেমেছেন বলে জানান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন