অচেনা খুদেদের ডরাচ্ছে পুলিশ

হুগলিতে দুষ্কৃতীদের বড় মাথা রমেশ, নেপু, আক্রম, কাশী, হুলো, কেলো, তারকরা এখন জেলে। তাদের ‘রাজপাট’ সামলাচ্ছে খুদেরাই।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৮ ০০:৫৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

পঞ্চায়েত নির্বাচন— আর তা নিয়েই চিন্তায় প্রশাসন। যদিও হুগলি গ্রামীণ ও চন্দননগর কমিশনারেটের পক্ষ থেকে সব রকমের বিধিবদ্ধ সর্তকতা নেওয়া হয়েছে। তবে মাথা ব্যথা কমেনি। আর তার কারণ নামজাদা নয়, তরুণ দুষ্কৃতীরা। যাদের অনেকেই শাসকদলের ছাতায় নীচে রয়েছে। সাধারণ ভাবে পুলিশের সন্দেহের তালিকায় আদৌ নেই এমন খুদেরাই এখন ভয়ের কারণ।

Advertisement

হুগলিতে দুষ্কৃতীদের বড় মাথা রমেশ, নেপু, আক্রম, কাশী, হুলো, কেলো, তারকরা এখন জেলে। তাদের ‘রাজপাট’ সামলাচ্ছে খুদেরাই। ওই সব দুষ্কৃতীরা যে জেলে বসে দুষ্কর্ম চালিয়ে যাচ্ছে— সে বিষয়ে এর আগে পুলিশকে সতর্ক করে গিয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী গুড়াপের প্রশাসনিক সভায়।

দিন কয়েক আগেই উত্তরপাড়ার কোতরং এলাকায় একটি ক্লাবে হামলার অভিযোগে পুলিশ এক অল্প বয়স্ক দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে। নাম তার অটো। পুলিশ সূত্রে খবর, অটোর কথা পুলিশের কানে এসেছিল মাস খানেক আগেই। কিন্তু তাকে কিছুতেই নাগালে পাচ্ছিল না পুলিশ।

Advertisement

অটোকে জেরা করে পুলিশ জেনেছে, তার সঙ্গে রয়েছে ১৬ থেকে ২১ বছর বয়সী বেশকিছু ছেলেছোকরা। তারা দিল্লি রোড ও আশেপাশের এলাকায় নানা অসামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত। কারখানায় ছোটোখাটো চুরি থেকে ট্রাক ড্রাইভারদের থেকে তোলা নেওয়— সবেতেই সিদ্ধহস্ত তারা। সুযোগ বুঝে তারাই আবার শাসকদলের মাঝারি মাপের নেতাদের ধরে দিব্যি করে কর্মে খাচ্ছে। পুলিশের দাবি, এদের প্রায় প্রত্যেকের কাছেই আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। গায়ে রয়েছে রাজনীতির রংও। অনেক সময় সে কারণেই পুলিশ তাদের দেখেও দেখে না।

কিছুদিন আগে মগরায় বাঁশবেড়িয়ার শঙ্খনগর এলাকা থেকে পুলিশ একটি বড় মোটর বাইক চুরি চক্রকে ধরে। মোট ২৪টি মোটর বাইক উদ্ধার হয়। জানা যায়, এলাকার কিছু অল্প বয়স্ক ছেলে ওই চক্রের সঙ্গে যুক্ত। অনেকেই বন্দুক, পিস্তল চালানোর প্রশিক্ষণ নিয়েছে। হুগলি লাগোয়া জেলাগুলোতেও নানা খুচরো অপরাধে জড়িয়ে যাচ্ছে স্কুল-ছুট এই সব কিশোর বা সদ্য তরুণরা।

পুলিশ সূত্রে খবর, এদের কথা অনেকেই জানে না। এমনকী পড়ায় খোঁজ খবর নিলে জানা যায়, ‘ওরা খারাপ ছেলে নয়’। ফলে জটিলতা বাড়ছে পুলিশেরও। খাতায়-কলমে দুষ্কৃতী হিসাবে পরিচিতি নেই, অথচ, অপকর্মে জুড়ি মেলা ভার। পুলিশ কর্তাদের অনেকে মনে করছেন, পঞ্চায়েত ভোটে এরা একটা বড় চিন্তার কারণ হয়ে উঠতে চলেছে।

ঘটনাক্রমও সে দিকে ইঙ্গিত করছে। কমিশনারেট সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু চন্দননগর কমিশনারেট এলাকা থেকেই গত কয়েকদিনে ৭টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। কমিশনারেট এলাকার যেখানে ভোট হচ্ছে সেখানকার অন্তত ২০০ লাইসেন্স প্রাপ্ত বন্দুক পুলিশের কাছে জমা দিয়েছেন গ্রামবাসীরা। চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার অজয় কুমার বলেন, ‘‘পুলিশ সবদিক থেকে প্রস্তুত, যে কোনও ভাবে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করাব আমরা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন