পারদ চড়ছে পঞ্চায়েত ভোটে, শাসকদলে অস্বস্তির কাঁটা দুই জেলাতেই

হাওড়ায় সব আসনে লড়াই জেলা পরিষদে

ত্রি-স্তর পঞ্চায়েতের বহু আসনে গোঁজ প্রার্থীদের অনেকে আবার নির্দল হিসেবে লড়বেন বলে ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছেন। এই সব প্রার্থীদের লড়াই থেকে কী ভাবে সরিয়ে নেওয়া যায় সেটাই এখন চ্যালেঞ্জ বলে জানিয়েছেন জেলা তৃণমূল নেতাদের একটি বড় অংশ।

Advertisement

নুরুল আবসার

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৮ ০০:৫৭
Share:

বেহুঁশ: ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ প্রচার চলছে পুরোদমে। তা সত্ত্বেও রবিবার সকালে চণ্ডীতলার কলাছড়া থেকে জনাই বাজার পর্যন্ত এ ভাবেই মিছিল করেন শাসকদলের কর্মী সমর্থকেরা। নিজস্ব চিত্র

পঞ্চায়েত সমিতি এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশ কিছু আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় এসেছে। কিন্তু হাওড়া জেলা পরিষদের একটি আসনও বের করতে পারল না শাসকদল। ফলে, সেখানে বিরোধীদের সঙ্গে লড়াই হবে পুরোদস্তুর। গোঁজ প্রার্থীর চিন্তাও তৃণমূল নেতাদের কপালের ভাঁজ বাড়িয়েছে।

Advertisement

ত্রি-স্তর পঞ্চায়েতের বহু আসনে গোঁজ প্রার্থীদের অনেকে আবার নির্দল হিসেবে লড়বেন বলে ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছেন। এই সব প্রার্থীদের লড়াই থেকে কী ভাবে সরিয়ে নেওয়া যায় সেটাই এখন চ্যালেঞ্জ বলে জানিয়েছেন জেলা তৃণমূল নেতাদের একটি বড় অংশ। অভিযোগ, সাঁকরাইল এবং জগৎবল্লভপুরে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকট হয়েছে প্রতীক বিলিকে ঘিরে। ওই দুই ব্লকের তিনটি স্তরেরই বহু আসনে একাধিক তৃণমূল প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। প্রতীক বিলির পরে যাঁরা পাননি, তাঁরা নিজেদের বঞ্চিত বলে মনে করছেন। দলের কড়া নির্দেশের পরেও তাঁরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি। দলের পক্ষ থেকে তাঁদের জানানো হয়, যাঁরা নির্দল হয়ে লড়াই করবেন তাঁদের নামের তালিকা বহিষ্কারের সুপারিশ-সহ রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠানো হবে। কিন্তু তাতেও দমানো যায়নি বিক্ষুব্ধদের। স্থানীয় মানুষ জানিয়েছেন, নিজের নিজের অনুগামীদের নিয়ে তাঁরা রবিবার থেকেই পাড়ায় পাড়ায় বৈঠক শুরু করে দিয়েছেন।

ভোটের দিনে এই বিক্ষুব্ধ প্রার্থীরা তাঁদের কতটা বিপাকে ফেলবেন, এরমধ্যে সেই হিসেব শুরু করে দিয়েছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। যদিও দলের জেলা (গ্রামীণ) সভাপতি পুলক রায় বলেন, ‘‘আমরা মনে করছি, শেষ পর্যন্ত ওঁরা দলের আদর্শ মেনে লড়াই থেকে সরে আসবেন। ওঁদের বোঝানো হচ্ছে।’’ একই দাবি জেলা (সদর) তৃণমূল সভাপতি অরূপ রায়েরও।

Advertisement

হুগলি

• জেলা পরিষদ

• মোট আসন: ৫০

• তৃণমূল জয়ী: ১৩

• ভোট হচ্ছে: ৩৭

পঞ্চায়েত সমিতি

মোট আসন: ৬০৭

তৃণমূল জয়ী: ২৬২

ভোট হচ্ছে: ৩৪৫

গ্রাম পঞ্চায়েত

মোট আসন: ৩১৯২

তৃণমূল জয়ী: ১৩৬১

ভোট হচ্ছে: ১৮৩১

হাওড়া

• জেলা পরিষদ

মোট আসন: ৪০

তৃণমূল জয়ী: নেই

ভোট হচ্ছে সব আসনে

• পঞ্চায়েত সমিতি

মোট আসন: ৪৬২

তৃণমূল জয়ী: ৯৯

ভোট হচ্ছে: ৩৬৩

গ্রাম পঞ্চায়েত

মোট আসন: ২৪৩১

তৃণমূল জয়ী: ৫৩০

ভোট হচ্ছে: ১৯০১

বিরোধীদের মধ্যে গ্রাম পঞ্চায়েতে মনোনয়নপত্র পেশ করার ক্ষেত্রে এগিয়ে আছে বিজেপি। দ্বিতীয় স্থানে বামফ্রন্ট। কংগ্রেসের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। একমাত্র সাঁকরাইলেই তিনটি স্তরে বেশ কিছু আসনে তারা একক ভাবে প্রার্থী দিতে পেরেছে। বাকি এলাকায় তাদের প্রার্থী কার্যত নেই বললেই চলে। আমতা বিধানসভা কেন্দ্রটি কংগ্রেসের দখলে রয়েছে। সেখানে গোটাচারেক পঞ্চায়েতে সিপিএমের সঙ্গে আসন সমঝোতা করে প্রার্থী দিয়েছে কংগ্রেস। একটি পঞ্চায়েতে নাগরিক কমিটির নামে প্রতীক ছাড়াই লড়াই করছেন বাম এবং কংগ্রেস সমর্থিত প্রার্থীরা।

জেলা পরিষদের সব আসনেই ভোট হওয়ায় প্রতিটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রেই ভোট নেওয়া হবে বলে প্রশাসন জানিয়েছে। সেই প্রস্তুতিই এখন তুঙ্গে। তবে, গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির বহু আসনে ভোটগ্রহণ করতে না-হওয়ায় ভোটকর্মী কম লাগবে। সেটা প্রশাসনের কর্তাদের কাছে
কিছুটা স্বস্তির।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন