গতবার হুগলিতে পঞ্চায়েতের তিনটি স্তরেই দলের এক শ্রেণির পদাধিকারীর কাজকর্ম নিয়ে জেরবার হয়েছে শাসকদল। গ্রামবাসীদের ক্ষোভ-বিক্ষোভও ছিল। ওই সব পদাধিকারীদের মধ্যে বেশিরভাগই এ বারও জিতলেও আর তাঁদের পদে ফেরানো হবে না বলে ইঙ্গিত দিলেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
নতুন পদাধিকারী বাছতে জুন মাসের গোড়াতেই আলোচনায় বসছে শাসকদল। তৃণমূলের জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘জেলায় পঞ্চায়েতে কারা দায়িত্বে আসবেন তা ঠিক করতে পরের মাসে প্রথম সপ্তাহে আলোচনায় বসা হবে। স্বচ্ছ ভাবমূর্তির প্রার্থীদেরই এ বার গুরুত্ব দেওয়া হবে।’’ দলের জেলা স্তরের এক নেতাও বলেন, ‘‘পরে যাতে ভুল বোঝাবুঝি মাথাচাড়া না-দেয়, তাই প্রথম থেকেই সর্বজনগ্রাহ্য প্রার্থীকেই বেছে নেওয়াতে জোর দেওয়া হচ্ছে। তাতে ভুল বোঝাবুঝি কমবে।’’
আগামী বছর লোকসভা নির্বাচন। এই বিষয়টিকে মাথায় রেখেই এ বার পঞ্চায়েতে ঘুঁটি সাজাতে চাইছে শাসকদল। লোকসভা ভোটে যাতে গ্রামবাসীদের পূর্ণ সমর্থন মেলে, সেটাই যে তাঁরা নিশ্চিত করতে চাইছেন, তা জানিয়েছেন অনেক তৃণমূল নেতাই। গতবার পঞ্চায়েত পরিচালনায় জেলার নানা প্রান্তে তৃণমূল নেতাদের আকচা-আকচি গ্রামোন্নয়নের কাজে প্রভাব ফেলেছিল। গোঘাট, তারকেশ্বর, বলাগড়, জাঙ্গিপাড়া, পান্ডুয়ায় সেই আকচা-আকচি প্রকাশ্যে চলে আসে।
জেলা পরিষদের বিদায়ী সভাধিপতি মেহেবুব রহমানকে নিয়ে সদস্যদের একাংশের অসন্তোষও সামনে এসেছিল। সেই বিরোধ মেটাতে ব্যার্থ হন জেলার নেতারা। হস্তক্ষেপ করতে হয় দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়কে। তিনি জেলা পরিষদ পরিচালনার ক্ষেত্রে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কোর কমিটি গড়ে দেন। তারপরেও জেলা পরিষদ পরিচালনার ক্ষেত্রে বিরোধ অব্যাহত ছিল। জেলা পরিষদের বিদায়ী পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মনোজ চক্রবর্তীর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল দলে। এমন উদাহরণ রয়েছে পঞ্চায়েতের তিনটি স্তরেই।
গতবারের সেই অভি়জ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বার তাই প্রথম থেকেই সাবধানী হতে চাইছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।