সহায় ‘দিদিকে বলো’, চিকিৎসা ৮ বৃদ্ধবৃদ্ধার

হুগলির বলাগড় ব্লকের ওই তিন বৃদ্ধবৃদ্ধা অসুখে ভুগলেও তাঁদের চিকিৎসার সামর্থ্য নেই। কারণ, সংসারে অনটন। ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে এলাকায় গিয়ে পরিস্থিতি জেনে বুধবার তাঁদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করলেন হুগলি জেলা যুব তৃণমূল নেতৃত্ব।

Advertisement

তাপস ঘোষ

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:৩৮
Share:

ইমামবাড়া হাসপাতালে চলছে চিকিৎসা। —নিজস্ব চিত্র

তারক বাগ স্নায়ুর রোগে ভুগছেন।

Advertisement

বছর কয়েক আগে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন সুশান্ত প্রামাণিকের। তখন থেকেই শরীরের বা’দিক কার্যত অচল।

পুষ্প পলতার চোখে কম দেখছেন।

Advertisement

হুগলির বলাগড় ব্লকের ওই তিন বৃদ্ধবৃদ্ধা অসুখে ভুগলেও তাঁদের চিকিৎসার সামর্থ্য নেই। কারণ, সংসারে অনটন। ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে এলাকায় গিয়ে পরিস্থিতি জেনে বুধবার তাঁদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করলেন হুগলি জেলা যুব তৃণমূল নেতৃত্ব। তাঁদের সঙ্গে ওই ব্লকের আরও পাঁচ জনের এ দিন চিকিৎসা হল চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে।

জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি তথা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, সম্প্রতি দলের যুবকর্মীরা ওই ব্লকের বিভিন্ন গ্রামে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে যান। গ্রামবাসীদের সমস্যার কথা শোনেন। তাঁরা জানতে পারেন, বিভিন্ন রোগে জর্জরিত আট জন বয়স্ক মানুষ অর্থাভাব এবং যাতায়াতের সমস্যার কারণে চিকিৎসা করাতে পারছেন না। তাঁদের মধ্যে কেউ ভুগছেন হৃদরোগে, কেউ চোখের সমস্যায়। সংগঠনের তরফে তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ দিন শান্তনুবাবু এবং সংগঠনের অন্যেরা ওই বৃদ্ধবৃদ্ধাদের গাড়ি করে ইমামবাড়া সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সংশ্লিষ্ট রোগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা তাঁদের চিকিৎসা করেন। হাসপাতালের সুপারিন্টেন্ডেন্ট উজ্জ্বলেন্দুবিকাশ মণ্ডল নিজেও তাঁদের দেখেন। ডাক্তার দেখানো হলে যুব তৃণমূল নেতাদের উদ্যোগেই তাঁদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়।

জিরাটের বাসিন্দা পুষ্পদেবী বলেন, ‘‘বেশ কিছু দিন ধরে চোখে ভাল দেখতে পাচ্ছি না। স্বামী দিনমজুর। খরচের কথা ভেবে চিকিৎসা করাতে পারছি না। আজ ডাক্তারবাবু চোখ পরীক্ষা করে ওষুধ দিয়েছেন। কয়েক দিন পরে আবার আসতে বলেছেন।’’ নিখরচায় যাতায়াত এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা হওয়ায় সুশান্তবাবু, তারকবাবুরাও খুশি। সুশান্তবাবু বলেন, ‘‘আমার চার মেয়ে। চার জনেরই বিয়ে হয়ে গিয়েছে। নিজে কাজ করতে পারি না। মেয়েদের পাঠানো টাকায় কোনও রকমে আমার আর স্ত্রী-র সংসার চলে। বিনা খরচে চিকিৎসার ব্যবস্থা হওয়ায় উপকার হল।’’

শান্তনুর আশ্বাস, ‘‘যাঁদের ক্ষেত্রে চিকিৎসক আবার আসতে বলেছেন, নির্দিষ্ট সময়ে তাঁদের ফের হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা আমরাই করব।’’ তিনি বলেন, ‘‘দিদিকে বলো কর্মসূচি পালন করতে নেমে সাধারন মানুষের নানা সমস্যা এবং অভিযোগ আমরা মন দিয়ে শুনছি। টাকার অভাবে কারও চিকিৎসা হবে না, এটা হতে দেওয়া যায় না। এই ধরনের মানুষ আরও থাকলে, তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টাও আমরা করব।’’

ইমামবাড়া হাসপাতালের সুপার উজ্জলেন্দুবাবু মনে করেন, অনেকেই হয়তো নানা কারণে হাসপাতালে আসতে পারেন না। এমন উদ্যোগে তাঁরা উপকৃত হবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন