কর্মনাশা: আবর্জনায় মুখ ঢেকেছে শেওড়াফুলি হাট।
মজুরি বাড়ানোর দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করেছেন বৈদ্যবাটি পুরসভার অস্থায়ী সাফাইকর্মীরা। আর কর্মীদের এ হেন অসহযোগিতার ফল ভুগতে শুরু করেছে শহরও।
পুরসভা সূত্রের খবর, বৈদ্যবাটিতে প্রায় তিনশো অস্থায়ী সাফাইকর্মী রয়েছেন। দীর্ঘ দিন ধরেই তাঁরা মজুরি বাড়ানোর দাবি করছেন। কিন্তু আশ্বাস মিললেও ভাগ্যে শিঁকে ছেঁড়েনি বলে অভিযোগ। এই নিয়ে সাফাইকর্মী এবং জঞ্জাল অপসারণের গাড়ির চালকদের ক্ষোভ বাড়ছিলই। শেষ পর্যন্ত তাঁদের একাংশ মঙ্গলবার থেকে কাজ বন্ধ করে দেন। আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, দৈনিক ১২০ টাকা মজুরিতে তাঁদের কাজ করতে হয়। এই টাকায় সংসার চালানো দায় হয়।
বুধবার সকালে পুর-এলাকার কঠিন বর্জ্য প্রতিস্থাপন (সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট) প্রকল্পের ভিতরে দু’জন কাউন্সিলর এবং সাফাই বিভাগের আধিকারিককে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। সাফাইকর্মীদের ২০০ টাকা এবং গাড়ি-চালকদের আড়াইশো টাকা দৈনিক মজুরি দিতে হবে বলে দাবি ওঠে। পুর কর্তৃপক্ষ অবশ্য তাতে সম্মত নন। আন্দোলনকারীরা জানান, দাবি মানা না হলে লাগাতার কর্মবিরতি করা হবে। শহরবাসীর অনেকেরই বক্তব্য, এমনতেই এখানে জঞ্জাল অপসারণ ব্যবস্থা নিয়ে এখনও প্রশ্ন রয়ে গিয়েছে। তার উপর কর্মবিরতি চলতে থাকলে পরিস্থিতি খারাপ হবে বলে তাঁদের আশঙ্কা।
সাফাইয়ের হাল সবথেকে খারাপ শেওড়াফুলি হাট চত্বরে। বুধবার দুপুরে সেখানে গিয়ে দেখা গেল, ছাতুগঞ্জ থেকে হাটে ঢোকার মুখে রাস্তার ধারে ডাঁই হয়ে রয়েছে আবর্জনা। হাটের মধ্যে ভ্যাট থেকে জঞ্জাল উপছে রাস্তায় উঠে এসেছে। নোংরা পাড়িয়েই যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছেন সকলেই। ব্যবসায়ীরা জানান, বেশ কয়েক দিন ধরেই ভ্যাটের এই হাল।
কাজ বন্ধ রেখে বিক্ষোভ কর্মীদের।
স্টেশন সংলগ্ন শেওড়াফুলি হাট এ রাজ্যের অন্যতম বড় সব্জি বাজার। ভোর থেকে রাত পর্যন্ত হাটে বেচাকেনা চলে। শুধু সব্জিই নয়, মাছ-মাংস, মুদিখানা থেকে হরেক জিনিস এখানে বিক্রি হয়। ফলে প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে আবর্জনা হয়। জঞ্জাল অপসারণের দায়িত্ব পুরসভার। সেই কাজ ঠিক হচ্ছে না বলে ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ। ভ্যাটের আবর্জনা থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এক সব্জি ব্যবসায়ীর ক্ষোভ, ‘‘দুর্বিসহ পরিস্থিতি।’’
পুর-কর্তৃপক্ষ অভিযোগ মানেননি। পুরপ্রধান অরিন্দম গুঁইনের বক্তব্য, ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল আরবান এমপ্লয়মেন্ট স্কিম’-এ নেওয়া হয়েছিল, এমন অস্থায়ী শ্রমিকদের একাংশ মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে কাজ বন্ধ করেছেন। সরকারি নিয়মেই তাঁদের মজুরি দেওয়া হয়। মজুরি বাড়ানোর কথা আগে থেকেই ভাবা হচ্ছিল। কিন্তু তাঁদের দাবিমতো টাকা বাড়ানো সম্ভব নয়। তাঁর কথায়, ‘‘ওই কয়েক জন কাজ না করায় জঞ্জাল অপসারণে কোনও সমস্যা হয়নি। আর শেওড়াফুলি হাটে প্রতিদিন দু’বেলা সাফাই করা হয়। আজ, বুধবার রাতেই ফের করা হবে।’’
নিজস্ব চিত্র।