মাটি থেকে রাস্তার উচ্চতা বেশি হওয়ায় হাও়ড়া শহরে কখনও দুর্ঘটনা ঘটছে, কখনও বা সামান্য বৃষ্টিতে বাড়িতে জল ঢুকে যাচ্ছে। এই সমস্যার প্রতিকার চেয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। শুক্রবার সেই মামলার শুনানিতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নিশীথা মাত্রের ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছে, একটি কমিটি গড়ে সমস্যার সমাধানসূত্র খুঁজতে। কী ভাবে সমাধান হবে, সেই ব্যাপারে দু’সপ্তাহের মধ্যে আদালতে একটি রিপোর্টও জমা দিতে হবে রাজ্যকে।
হাইকোর্টের নির্দেশ, পূর্ত দফতরের চিফ ইঞ্জিনিয়ার এবং ইন্ডিয়ান রোড কংগ্রেসের প্রতিনিধি নিয়ে ওই কমিটি গড়তে হবে। ওই কমিটিই ঠিক করবে, রাস্তার উচ্চতা কী ভাবে কমানো হবে এবং ভবিষ্যতে রাস্তা কী ভাবে মেরামতি করতে হবে।
জনস্বার্থ মামলাটি দায়ের করেছেন শিবপুরের এক বাসিন্দা। তাঁর আইনজীবী শক্তিনাথ মুখোপাধ্যায় ও সপ্তাংশু বসু এ দিন আদালতে জানান, রাস্তা মেরামতি করার সময়ে ঠিকাদারেরা পিচের পুরনো আস্তরণ না সরিয়ে তার উপরেই নতুন প্রলেপ দিচ্ছেন। তার ফলে মাটি থেকে রাস্তার উচ্চতা দিন দিন বাড়ছে। বড় রাস্তাই হোক বা গলি, সর্বত্র এক পরিস্থিতি। তার জেরে কেবল দুর্ঘটনাই বাড়ছে না, সামান্য বৃষ্টিতে বাড়িতে জলও ঢুকে যাচ্ছে। তা ছাড়া, মাটি থেকে রাস্তার উচ্চতা বেশি হওয়ায় অ্যাম্বুল্যান্স ও জরুরি পরিষেবা দেওয়ার যান চলাচলেও বিস্তর অসুবিধা হচ্ছে।
হাওড়া পুরসভার পক্ষে আইনজীবী শান্তনু চট্টোপাধ্যায় এ দিন আদালতে জানান, হাওড়া পুর এলাকায় জিটি রোড-সহ কিছু রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পূর্ত দফতরের। অন্য সব রাস্তা পুরসভার অধীন। নিকাশি ব্যবস্থা ঠিক থাকলেই নাগরিকদের দুর্ভোগ কমবে বলে ওই আইনজীবী জানান।
রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত আদালতে জানিয়েছেন, দিন দিন যানবাহনের চাপ বাড়ছে। রাস্তার তলা দিয়ে বিভিন্ন পরিষেবা সংস্থার সংযোগ গিয়েছে। রাস্তা খুঁড়ে পিচের আস্তরণ সরিয়ে রাস্তা নিচু করা সম্ভব না-ও হতে পারে।
আইনজীবী শক্তিনাথবাবু ডিভিশন বেঞ্চে জানান, রাস্তার উচ্চতা কমানোর কাজ রাতে করা যেতে পারে। আদালত এটা নিশ্চিত করুক, যাতে রক্ষণাবেক্ষণের নামে কোনও রাস্তা আর উঁচু করা না হয়। পূর্ত দফতরের পক্ষে আইনজীবী তপন মুখোপাধ্যায় আদালতে প্রস্তাব দেন, রাস্তার বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের নিয়ে রাজ্য সরকার একটি কমিটি গড়ে দিক। ওই কমিটিই সিদ্ধান্ত নেবে, কী করে রাস্তার উচ্চতা কমিয়ে আনা যায়।
সব পক্ষের বক্তব্য শুনে ডিভিশন বেঞ্চ কিশোরবাবুকে নির্দেশ দেন, কমিটি গড়ে দু’সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট দিতে হবে রাজ্যকে।