উলুবেড়িয়া থানার আইসি-র বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করলেন শ্যামপুরের অবসরপ্রাপ্ত এক স্কুল শিক্ষক।—ফাইল চিত্র।
একটি চুরির তদন্তে উলুবেড়িয়া থানার আইসি-র বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ এনে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করলেন শ্যামপুরের অবসরপ্রাপ্ত এক স্কুল শিক্ষক।
শ্যামপুরের গুটিনাগরি গ্রামের বাসিন্দা, ৭১ বছরের সৈয়দ মহম্মদ মহিউদ্দিন নামে ওই বৃদ্ধের ব্যাগ কেটে ৫৯ হাজার টাকা চুরি হয়েছিল গত ২ নভেম্বর। তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হন। তার পরে ২১ নভেম্বর আইসি-র বিরুদ্ধে আদালতে ওই মামলা করেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘চুরির তদন্ত করে কিনারা না-হলে আমি কিছু মনেই করতাম না। কিন্তু পুলিশ মামলা রুজু করল না, তদন্তও করল না। অথচ আমাকে দিনের পর দিন আশ্বাস দেওয়া হল। আমার ক্ষোভটা সেই জায়গায়। তাই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছি।’’
অভিযোগ মানেননি উলুবেড়িয়ার আইসি কৌশিক নন্দী। তাঁর দাবি, ‘‘ওই বৃদ্ধকে লিখিত অভিযোগ করতে বলা হয়েছিল। তা তিনি করেননি।’’ মহিউদ্দিন এ কথা শুনে আকাশ থেকে পড়েন। তাঁর পাল্টা দাবি, ‘‘আইসি-র সঙ্গে কথা বলার পরে ওইদিনই আমি লিখিত অভিযোগ জমা দিই। সেই সংক্রান্ত কাগজও আদালতে জমা দিয়েছি।’’
মহিউদ্দিনের স্ত্রীও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা। মহিউদ্দিন জানান, গত ২ নভেম্বর তিনি উলুবেড়িয়ার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে নিজের এবং স্ত্রীর পেনশনের মোট ৬২ হাজার টাকা তোলেন। সঙ্গে তাঁর দাদাও ছিলেন। টাকা তোলার পরে দাদার সঙ্গে তিনি উলুবেড়িয়া স্টেশন রোডে একটি ওষুধের দোকানে যান। আগেই একটি ব্যাগে ৫৯ হাজার টাকা রেখে বাকি তিন বাজার টাকা বের করে নেন ওষুধ কেনার জন্য। ব্যাগটি তাঁর কাঁধে ছিল। ব্যাগে ওষুধ রাখতে গিয়ে তিনি দেখেন, সেটি কাটা হয়েছে। গায়েব ৫৯ হাজার টাকা।
বৃদ্ধের দাবি, ৪ নভেম্বর তিনি উলুবেড়িয়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। পুলিশ তখন জানিয়েছিল, মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। কিন্তু প্রায় পনেরো দিন পরেও কোনও ফল না-হওয়ায় থানায় যোগাযোগ করলে পুলিশ তাঁকে একটি জেনারেল ডায়েরি নম্বর দেয়। মহিউদ্দিন বলেন, ‘‘এর অর্থ, পুলিশ এতদিন আমাকে তদন্ত হচ্ছে বলে মিথ্যা আশ্বাস দিচ্ছিল। জেনারেল ডায়েরি করা হয়েছে মানে কোনও মামলা রুজু হয়নি, তদন্তও শুরু হয়নি।’’
পুরো ঘটনাটি তিনি (গ্রামীণ) জেলা পুলিশ সুপার গৌরব শর্মাকে জানালেও কোনও সহযোগিতা পাননি বলে মহিউদ্দিনের অভিযোগ। পুলিশ সুপার অবশ্য বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন।