গবেষক মৃত্যুতে খুনের অভিযোগ

পুলিশ সূত্রের খবর, ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে উপর থেকে পড়ার ফলেই মৃত্যুর দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। পুলিশ এখন চূড়ান্ত রিপোর্টের অপেক্ষায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:৫৫
Share:

অর্পণকুমার পাড়ুই

বাউড়িয়ার বাসিন্দা তরুণ গবেষকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় খুনের মামলা দায়ের করল তাঁর পরিবার।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, অর্পণকুমার পাড়ুই নামে ওই গবেষকের বাবা অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে নিউ আলিপুর থানায় খুনের অভিযোগ করেছেন। তদন্ত শুরু হলেও মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত তদন্তকারীরা মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেননি। তবে এ দিন তাঁর মৃতদেহের ময়না-তদন্ত হয়েছে। ঘটনাস্থল ঘুরে গিয়েছেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরাও।

পুলিশ সূত্রের খবর, ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে উপর থেকে পড়ার ফলেই মৃত্যুর দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। পুলিশ এখন চূড়ান্ত রিপোর্টের অপেক্ষায়। এ দিন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা ঘটনাস্থলে এসে বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করেন। আটতলা থেকে নীচে যে জায়গায় অর্পণ পড়েছিলেন, সেখানেও ঘুরে দেখেন তাঁরা। পুলিশ সূত্রের খবর, চলতি সপ্তাহেই তদন্তকারীরা মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিজেদের মতামত জানাবেন। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার সন্ধ্যা নাগাদ অর্পণের সঙ্গে শেষ কথা হয়েছিল তাঁর এক শিক্ষকের। যাঁকে অর্পণ জানিয়েছিলেন, ওই রাতে তিনি একাই আরও কিছুক্ষণ পড়াশোনা করবেন। পুলিশ মৃতের মোবাইল এবং ল্যাপটপ উদ্ধার করলেও সেগুলি ‘লক’ থাকায় খোলা যায়নি।

Advertisement

বিহ্বল: মৃত গবেষকের শোকার্ত পরিবার। নিজস্ব চিত্র

পুলিশ সূত্রের খবর, সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ জুলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া ভবনের নীচে অর্পণকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন নিরাপত্তারক্ষীরা। পরে পুলিশ এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না-তদন্তে পাঠায়। ওই ইনস্টিটিউটের আটতলায় বসতেন অর্পণ। এ মাসেরই পয়লা তারিখ সেখানে ‘পোস্ট-ডক্টরাল রিসার্চ ফেলো’ হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন তিনি।

ছোট থেকেই মেধাবী অর্পণ হাওড়ার বাউড়িয়া থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে আশুতোষ কলেজে প্রাণীবিজ্ঞানে স্নাতক হন। পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি করেন। পড়াশোনার জন্য কলকাতায় আসার পর থেকে বালিগঞ্জে থাকতেন। গত শনিবার অর্পণ বাউড়িয়া গিয়েছিলেন। রবিবার ফেরেন।

অর্পণের অকালমৃত্যুতে শোকস্তব্ধ বাউড়িয়ার রামেশ্বরনগর গ্রাম। ছেলের মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না বৃদ্ধ বাবা অঞ্জন পাড়ুই ও মা দেবী পাড়ুই। বাবা পেশায় রেশন ডিলার। মা বাচ্চাদের একটি স্কুল চালান। এ দিন বিকেলে অর্পণের বাড়ি গিয়ে দেখা গেল, গ্রামবাসীদের ভিড়। বাবা-মা বারবার সংজ্ঞা হারাচ্ছেন। বাবা অঞ্জনবাবু বলেন, ‘‘এ ভাবে ওর মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না। পুলিশকে তদন্ত করতে বলেছি। আমি এর বিচার চাই।’’ অর্পণের পরিবার সূত্রের খবর, অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময়ে অর্পণ দীক্ষা নিয়েছিলেন। পড়াশোনার পাশাপাশি আধ্যাত্মিক চর্চা ও ধ্যানেও সময় কাটাতেন তিনি।

মঙ্গলবার এসএসকেএমে ময়না-তদন্তের পরে অর্পণের দেহ বাউড়িয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন