মহারাজ নাগ।
যখন তিনি তৃণমূলে ছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে তারকেশ্বরে ভুরি ভুরি অভিযোগ শোনা গিয়েছিল। ঢাকঢোল পিটিয়ে কয়েক দিন আগে কলকাতায় বিজেপিতে যোগ দেওয়া তারকেশ্বরের সেই মহারাজ নাগ ও তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে এ বার এলাকার দুই ব্যবসায়ীর দোকানে লুটপাট এবং তৃণমূলের একটি কার্যালয়ে এবং দু’টি মোটরবাইকে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ উঠল। যার জেরে অস্বস্তিতে পড়েছেন স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব।
বুধবার রাতে চাঁপাডাঙার মিষ্টি ব্যবসায়ী শুভেন্দু পাল এবং চা-বিক্রেতা নাসিরুদ্দিন মল্লিক থানায় মহারাজের বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ জানায়, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। কোনও অভিযোগই মহারাজ মানেননি। তাঁর দাবি, ‘‘আমি এলাকায় নেই। তৃণমূল ওইসব ঘটনা ঘটিয়ে আমায় ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।’’
মহারাজের নামে অভিযোগ নতুন নয়। বছর দুয়েক আগে মহারাজ যখন তৃণমূলে ছিলেন, তখন অশোক ভট্টাচার্য নামে এক ব্যক্তিকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এ ছাড়াও তাঁর বিরুদ্ধে কখনও মহিলা নির্যাতন, কখনও তোলাবাজি, কখনও এলাকায় দাদাগিরির অভিযোগ উঠেছিল। দিন কয়েক আগে কলকাতায় গিয়ে মুকুল রায়ের হাত থেকে বিজেপির দলীয় পতাকা নিয়ে তৃণমূল-ত্যাগ করেন মহারাজ। তারপরেই তারকেশ্বরের চাঁপাডাঙায় দুই ব্যবসায়ীর দোকানে হামলার অভিযোগ উঠল তাঁর বিরুদ্ধে।
শুভেন্দুবাবু বলেন, ‘‘আমার দোকানে মাঝেমধ্যেই হামলা চালান মহারাজ ও তাঁর দলবল। দাবিমতো টাকা না-দিলেই অশান্তি। আমার দোকানে সিসিটিভি রয়েছে। বুধবার রাতে ওরা এসে মিষ্টি তৈরির জন্য রাখা দুধ উল্টে দিল। সরঞ্জাম নষ্ট করল। বাধা দিতে গেলে আমাকেও ধাক্কা মেরে সরিয়ে ক্যাশবাক্স থেকে টাকা নিয়ে উধাও হয়।’’ একই ভাবে নালিরুদ্দিনের চায়ের দোকানেও হামলা হয় বলে অভিযোগ।
এরপরে তালপুরে তৃণমূলের একটি কার্যালয়ে এবং বাইরে রাখা দু’টি মোটরবাইকে অগ্নিসংযোগের ঘটনাতেও মহারাজের নাম জড়ায়। তৃণমূলের অভিযোগ ঘটনায় মহারাজের দলবলই জড়িত। একই রাতে সদ্য দলে আসা মহারাজের বিরুদ্ধে তিন অভিযোগে বিব্রত বিজেপি নেতৃত্ব। তারকেশ্বরের বিজেপি নেতা গণেশ রায় বলেন, ‘‘ওই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে এত অভিযোগ সত্ত্বেও কেন যে আমাদের দলে নেওয়া হল তা আমাদের নেতারাই বলতে পারবেন। আমরা এর বিরোধিতা করে দলকে জানাব।’’ বিজেপির
আরামবাগ সাংগঠিক জেলার সভাপতি বিমান ঘোষ বলেন, ‘‘মহারাজ নাগকে দেখা করতে বলা হয়েছে। ওঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সত্যি কিনা তা দল দেখবে।’’
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।