প্রতীকী ছবি।
স্কুলে রান্নার জন্য ছাউনি (কিচেন শেড) তৈরির টাকা নিয়ে স্কুল-কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিরোধে জড়ালেন পুর-কর্তৃপক্ষ। ওই কাজের জন্য মঞ্জুর হওয়া টাকা হস্তান্তর না করলে স্কুল-কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ‘কড়া’ ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন পুরপ্রধান। ওই ঘটনায় শোরগোল পড়েছে হুগলির রিষড়ার অঞ্জুমান উচ্চ বিদ্যালয়ে।
প্রশাসন সূত্রের খবর, উর্দু মাধ্যম ওই স্কুলে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। পড়ুয়া প্রায় এক হাজার তিনশো জন। যদিও মিড-ডে মিল রান্নার জন্য আলাদা জায়গা নেই। অব্যবহৃত একটি ঘরে রান্না হয়। বছর খানেক আগে সংশ্লিষ্ট দফতরের তরফে গুদাম, ছাউনি তৈরির জন্য স্কুলে দু’লক্ষ টাকা আসে। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, নিয়ম অনুযায়ী কাজের দরপত্র ডাকা হয়। কিছু দিন আগে কাজ শুরু হয়। কিন্তু কাজে বাধা পুরসভার কয়েকজনজনপ্রতিনিধিদের থেকে বাধা আসতে থাকে বলে অভিযোগ।
এক শিক্ষক জানান, কাজ শুরু হতেই পুরপ্রধান চিঠি দিয়ে জানান, ওই টাকা পুরসভার হাতে তুলে দিতে হবে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে মৌখিক ভাবে বলে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিষয়টি শিক্ষকদের তরফে প্রশাসন এবং জেলা শিক্ষা দফতরের বিভিন্ন স্তরে জানানো হয়। এর পরে দিন দু’য়েক ধরে ফের কাজ শুরু হয়। বৃহস্পতিবার পুরপ্রধান বিজয়সাগর মিশ্র স্কুলের টিচার ইন-চার্জকে চিঠি পাঠিয়ে জানান, তিন দিনের মধ্যে পুরসভায় ওই টাকা জমা না দিলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্কুল কর্তৃপক্ষ অবশ্য তা করেননি। তাঁদের দাবি, যাবতীয় নিয়ম মেনে এবং প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই কাজ করা হচ্ছে। তা ছাড়া, ওই কাজের জন্য বিভিন্ন জিনিস কেনা হয়েছে। এই অবস্থায় টাকা পুরসভাকে দেওয়া সম্ভব নয়। টিচার ইন-চার্জ মুক্তার আহমেদ বলেন, ‘‘পুরপ্রধান এ ভাবে টাকা চাইতে পারেন না। চিঠিতে যে শব্দ উনি ব্যবহার করেছেন, সেটা দুর্ভাগ্যজনক। মহকুমাশাসকের দফতরে গোটা ঘটনা জানিয়েছি। সোমবার পুর-কর্তৃপক্ষকেও চিঠি দিয়ে জানানো হবে।’’
পুর-কর্তৃপক্ষের অবশ্য বক্তব্য, মিড-ডে মিল প্রকল্পের ওই কাজের নোডাল অফিসার পুরপ্রধান। কিন্তু ওই স্কুলের তরফে কাজের অগ্রগতি নিয়ে পুরসভার সঙ্গে যোগাযোগই করা হয়নি। পুরপ্রধানের বক্তব্য, ‘‘ওই টাকা এসেছে এক বছর আগে। কাজ শেষের সময়সীমা অনেক দিন আগেই পেরিয়ে গিয়েছে। কাজ না হওয়া টাকা চেয়ে জেলা প্রশাসনের তরফে চাপ দেওয়া হচ্ছে। সেই কারণেই টাকা ফেরত চাওয়া হয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষকোনও ব্যাপারেই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি।’’