মাস্ক পরাচ্ছেন পুরপ্রধান দিলীপ যাদব। উত্তরপাড়ায় তোলা ছবি।
আতঙ্ক রয়েছে। তবে সেই আতঙ্ক কাটিয়ে সচেতনতা আর সতর্কতাকে মূলধন করেই পরিষেবা চালু রাখছে দুই জেলার পুরোসভাগুলি।
অদলবদলের ভিত্তিতে কর্মীদের আসার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে উলুবেড়িয়া পুরসভায়। তবে যেহেতু লকডাউনের জন্য যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে তাই স্থানীয় কর্মীদের দিয়েই কাজ চালানো হবে বলে পুরসভা সূত্রে খবর। যে পাঁচটি পরিষেবা চালু থাকবে সেগুলি হল, সাফাই, জল, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ এবং জন্ম-মৃত্যু শংসাপত্র।
ইতিমধ্যে করোনা মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের নির্দেশে বিশেষ টাস্ক ফোর্স তৈরি হয়েছে। ভাইরাসের সংক্রমণ যাতে না ছড়ায় তার জন্য প্রচার, বিদেশ বা ভিন রাজ্য থেকে যারা ফিরে আসছেন তাদের তালিকা বানানো, বিশেষ স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবির করা হচ্ছে। পাশাপাশি জরুরি পরিষেবা যাতে চালু থাকে সেটাও দেখা হচ্ছে বলে পুরসভার চেয়ারম্যান অভয় দাস জানিয়েছেন।
পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগের উপরে। এর জন্য পুরসভা ভবনে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি ২৪ ঘন্টা খোলা থাকছে। জ্বর নিয়ে যারা আসবেন তাদের চিকিৎসক পরীক্ষা করে দেখে তেমন কিছু না হলে নিজেরাই ওষুধ দেবেন। সন্দেহজনক কিছু দেখলে পাঠাবেন উলুবেড়িয়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে।
জন্ম ও মৃত্যুর শংসাপত্র বিভাগ খোলা থাকলেও তা নিতে আসার ব্যাপারে কিছু নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে পুরসভা। একজনের বেশি কেউ ঢুকতে পারবে না ওই দফতরে। পুরসভায় ঢোকার আগে হাত ধুতে হবে।
হুগলির গঙ্গার পশ্চিম পাড় ঘেঁষা ১০টি পুরসভা এবং তিনটি গ্রামীণ পুরসভাতেও কাজ চলছে। স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশে পুরসভার স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে যুক্ত, জঞ্জাল সাফাই বিভাগের কর্মীদের ছুটি বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। বিশেষ পরিস্থিতিতে প্রয়োজনে ২৪ ঘন্টার কাজ করতে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে ওই বিভাগের কর্মীদের। পুর কর্তৃপক্ষ চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীদের প্রয়োজনে লকডাউনের পরিস্থিতিতে তাঁদের গাড়ি করে বাড়িতে পৌঁছে দিচ্ছেন।
পুলিশের সাহায্য নিয়ে, আবার কোথাও বা বাইরে থেকে আসা মানুষজনকে বুঝিয়ে পাঠানো হচ্ছে স্বাস্থ্য পরীক্ষায়। চুঁচুড়ার উপ-পুরপ্রধান অমিত রায় বলেন, ‘‘সবাইকেই অনুরোধ, স্বাস্থ্য নিয়ে কোনও শিথিলতা নয়। আমরা জরুরি পরিস্থিতির মধ্যে কিন্তু রয়েছি।’’
প্রতিটি পুর হাসপাতাল এবং বর্হি-বিভাগের স্থাস্থ্য কেন্দ্রে ফিভার ক্লিনিক খোলা হয়েছে। শ্রীরামপুরের পুরপ্রধান অমিয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং জঞ্জাল বিভাগের কর্মীদের মাস্ক, দস্তানা বিলি করেছি। ’’
উত্তরপাড়ার পুরপ্রধান দিলীপ যাদব পুরসভার ২৬টি ওয়ার্ডেই সোমবার থেকে মাস্ক-দস্তানা বিলির ব্যবস্থা করেছেন।
জেলার গ্রামীণ পুরসভারগুলি ডানকুনি, তারকেশ্বর এবং আরামবাগ পুর কর্তৃপক্ষও স্বাস্থ্য দফতরের বিধি মেনে কাজে নেমেছে। বাঁশবেড়িয়া, চন্দননগর, ভদ্রেশ্বর, বৈদ্যবাটি, চাঁপদানি পুরসভার তরফে এ দিন পুর এলাকার বিভিন্ন জায়গায় জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দেওয়া ফ্লেক্স টাঙিয়ে দেওয়া হয়।